সারাদেশেই মধুপুরের আনারসের বেশ সুনাম রয়েছে। কলা চাষের জন্যও বিখ্যাত উপজেলাটি। উৎপাদনের পর এখানকার আনারস ও কলার পাতা ও গাছ ফেলে দেয়া হতো। অনেকে আবার ফেলে দেয়া পণ্য ব্যবহার করতো গবাদি পশুর খাদ্য হিসেবে। কিন্তু এসব ফেলে দেয়া গাছ ও পাতা থেকেই এখন তৈরি হচ্ছে শৌখিন নানা পণ্য।
ফাইবার এক্সট্রাকশন মেশিনের মাধ্যমে গাছ ও পাতা থেকে আঁশ বের করে পানিতে ধুয়ে রোদে শুকাতে হয়। এরপর এ আঁশ দিয়েই তৈরি হয় ঘর ও অফিসের সৌন্দর্যবর্ধনে নানান রকম শো-পিস, ব্যাগ, জুতা, টেবিল ম্যাট, ফ্লোর ম্যাট, ফ্লাওয়ার বক্স ও জুয়েলারি বক্সসহ পরিবেশবান্ধব আকর্ষণীয় বিভিন্ন পণ্য।
২০১৭ সালে জাঙ্গালিয়া গ্রামে 'ব্যুরো বাংলাদেশ' প্রতিষ্ঠা করে একটি হস্তশিল্পের কারখানা। এতে শতাধিক বেকার নারী-পুরুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ হয়েছে। এ কাজ করে স্বাবলম্বী হয়েছেন অনেক নারী।
প্রশিক্ষণের মাধ্যমে এসব পণ্য তৈরি করে অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে পড়া মানুষদের স্বাবলম্বী করা হচ্ছে। এছাড়া দেশের চাহিদা মিটিয়ে এসব পণ্য আমেরিকা, চীন, ইতালি, সিঙ্গাপুরসহ বিশ্বের অন্তত ৫৬টি দেশে রপ্তানি করা হচ্ছে। তবে, সরকারি সহযোগিতা পেলে এসব পণ্যের উৎপাদন বাড়ানো এবং সরাসরি রপ্তানির সুযোগ পেলে জিডিপিতে বড় অবদান রাখা সম্ভব।
ব্যুরো বাংলাদেশের হস্তশিল্পের কারখানার এজিএম আমির হামজা বলেন, ‘ আমরা এখন পর্যন্ত যারা রপ্তানি নিয়ে কাজ করে তাদের সঙ্গে কাজ করছি, আমরা আগামী জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি থেকে নিজেরাই রপ্তানি করা শুরু করবো। সরকারের প্রতিষ্ঠান ও স্টেকহোল্ডারগুলো যদি আমাদের সঙ্গে কাজ করে তাহলে আমরাও দেশের জিডিপিতে অবদান রাখতে পারবো।’
তবে যাদের মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জন হচ্ছে সেসব উদ্যোক্তাদের সঠিক তথ্য নেই বিসিক কার্যালয়ে।
টাঙ্গাইল জেলা বিসিক কার্যালয়ের উপ-ব্যবস্থাপক শাহনাজ বেগম বলেন, ‘সরাসরি রপ্তানির জন্য কোনো উদ্যোগ আপাতত নেই। তবে আমরা আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে বাইরের দেশে যেসব মেলা হয় সেখানেও প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করতে পারবো।’
পরিত্যক্ত প্রাকৃতিক কাঁচামাল দিয়ে তৈরি পরিবেশবান্ধব এসব পণ্য সরকারি সহযোগিতার মাধ্যমে দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রচার ও প্রসার ঘটবে এমনটাই প্রত্যাশা সংশ্লিষ্টদের।