পূর্ব ইউরোপের দেশ আজারবাইজানের রাজধানী বাকুতে চলছে ২৯তম কপ সম্মেলন। কাস্পিয়ান সাগরতীরের প্রাচীন বন্দর নগরীর বিখ্যাত বাকু স্টেডিয়ামের এ আয়োজনে অংশ নিচ্ছেন প্রায় ২০০ দেশের দেড়শ' রাষ্ট্রপ্রধান, প্রায় হাজারখানেক মন্ত্রী আর ৮০ হাজার সরকারি-বেসরকারি পরিবেশকর্মী। তবে এবারের আয়োজনে প্রতিনিধি পাঠালেও অংশ নেয়নি যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া ও চায়নার মতো পরিবেশ ধ্বংসের জন্য দায়ী উন্নত দেশগুলোর রাষ্ট্রপ্রধান। বাংলাদেশের হয়ে এবার বিশ্বমঞ্চে নেতৃত্ব দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
তার সফরের শেষদিন আজ (বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর) সকালে আজারবাইজানের রাষ্ট্রপতির সাথে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে বাকুর তেল কোম্পানিতে বাংলাদেশিদের চাকরির সুযোগ বাড়ানোর আহ্বান জানান তিনি। এসময় আজারবাইজানের রাষ্ট্রপতি আগামী বছরের শুরুতে তার সরকারের একটি উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ সফর করে ঢাকায় দেশটির আবাসিক হাইকমিশন স্থাপন ও বিনিয়োগের বিষয়ে খোঁজখবর নেয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেন।
এর আগে বুধবার (১৩ নভেম্বর) রাতে কপ টুয়েন্টি নাইন সম্মেলনে জাতিসংঘ মহাসচিবের সাথে বৈঠক করেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা। এসময় তিনি প্রতিবছর জলবায়ু সম্মেলনের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। পরিবেশ ধ্বংসের জন্য কোন কোন দেশ দায়ী তা সবাই জানলেও কোন ব্যবস্থা না নিয়ে সম্মেলনের নামে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোকে ডেকে সময় ও অর্থ অপচয় হচ্ছে বলে তিনি জাতিসংঘ মহাসচিবকে জানান। তাই বছর বছর হওয়া এ সম্মেলন বন্ধের আহ্বান জানিয়ে তিনি যুবসমাজকে বিশ্বকে ধ্বংসের হাত থেকে বাঁচানোর তাগিদ দেন।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, ‘ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোকে ডেকে সময় ও অর্থ অপচয় হচ্ছে। বছর বছর হওয়া এ সম্মেলন বন্ধের আহ্বান জানায় উপদেষ্টা।’
পরিবেশবিদরা সম্মেলন বন্ধ নিয়ে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের অবস্থানের সাথে একমত পোষণ করে বলছেন, এখন সময় হয়েছে আলোচনার টেবিল থেকে বেরিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোকে সরাসরি আর্থিক সহায়তা করার।
চেঞ্জ ইনিশিয়েটিভের নির্বাহী পরিচালক মো. জাকির হোসেন খান বলেন, ‘ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোকে সরাসরি আর্থিক সহায়তা করলে আমাদেরকে আর প্রতিবছর এই আয়োজন করতে হবে না বলেন উপদেষ্টা।’
জলবায়ু বিশেষজ্ঞ ড. আইনুন নিশাত বলেন, ‘তিনি খোলা মেলা কথা বলেছেন। আমি মনে করি তিনি আশাতে বাংলাদেশের ইমেজটা ভালো হয়েছে।’