দেশে এখন
0

বর্জ্য নিয়ে দুর্ভোগে টাঙ্গাইল শহরবাসী

টাঙ্গাইল শহরের দক্ষিণ কলেজপাড়ায় বসবাস করেন গৃহবধু রোকেয়া বেগম। এক যুগ ধরে তার বাসার পাশে ময়লা আবর্জনা ফেলছে পৌর কর্তৃপক্ষ। এতে গভীর নলকূপের পানি দুর্গন্ধযুক্ত ও হলুদ রঙ ধারণ করছে। সব মিলিয়ে আছেন চরম দুর্ভোগে।।

শুধু রোকেয়া নয়, এলাকার দুই শতাধিক পরিবার ভুগছেন ময়লা আবর্জনার দুর্গন্ধে। পাশাপাশি পরিবেশ দূষণ ও গভীর নলকূপের পানি নষ্ট হওয়ায় পানির জন্য নির্ভর করতে হচ্ছে পৌরসভার সরবরাহের ওপর।

মহাসড়কের বেবীস্ট্যান্ড এলাকায় প্রতিদিন শহরের বিভিন্ন এলাকা থেকে সংগ্রহ করা বর্জ্য এখানে ফেলছেন পৌরসভার পরিচ্ছন্ন কর্মীরা। একই চিত্র ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কের রাবনা এলাকায়।

যেকারণে বেড়েছে মশার উপদ্রব, চর্মরোগসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন এলাকাবাসী। সড়ক ব্যবহারকারীরা বলছেন, দুর্গন্ধে রাস্তায় হাঁটতে বিপাকে পড়তে হচ্ছে তাদের। দুর্ভোগ লাঘবে জরুরি প্রদক্ষেপ নেয়ার দাবি তাদের। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনা করে বাস্তবায়ন করা প্রয়োজন।

মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মো. মাহবুবুল হক বলেন, ‘এভাবে অপরিকল্পিতভাবে ময়লা না ফেলে যদি পরিকল্পিত ব্যবস্থাপনা প্রটোকলের আওতায় আনা যায়, তাহলে হয়ত আমরা এ সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পেতে পারি।’

চিকিৎসকরা বলছেন, পরিবেশ দূষণের পাশাপাশি স্থানীয়রা টাইফয়েড, যহ্মাসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হতে পারে। তাই এসব বর্জ্য প্রক্রিয়াজাত করে ফাঁকা জায়গায় ফেলার পরামর্শ এই চিকিৎসকের।

সিভিল সার্জন, টাঙ্গাইলের সিভিল সার্জন ডা. মো. মিনহাজ উদ্দিন মিয়া বলেন,‘এখানে নানা ধরনের ক্লিনিক্যাল বর্জ্য ফেলা হয়, সেখান থেকে কিন্তু সহজেই জীবাণু ছড়াতে পারে। বিশেষ করে যারা এসব আবর্জনা হাত দিয়ে ধরছে, তারা কিন্তু গ্লাভস বা মাস্ক ব্যবহার করছে না। তাই এসব জায়গা থেকে হাত ও নাক-মুখ দিয়ে সহজেই স্কেভিসসহ হ্যাপাটাইটিস মতো রোগ ছড়াতে পারে।’

জমি বরাদ্দ পেলে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানালেন পৌর প্রশাসক। তবে তিনি ক্যামেরার সামনে কথা বলতে রাজি হননি।

টাঙ্গাইল পৌরসভার প্রশাসক মো. শিহাব রায়হান টেলিফোনে বলেন, ‘আমরা জায়গা খুঁজতেছি আধুনিক একটি ট্রিটমেন্ট প্লান্ট তৈরি করার জন্য। জায়গা পাওয়া মাত্র আমরা বর্জ্য ব্যবস্থাপনার কাজ শুরু করে দেবো’

প্রতিদিন পৌরসভার বিভিন্ন এলাকা থেকে ট্রাক ও ভ্যানযোগে প্রায় ৩৫ টন ময়লা-আবর্জনা সংগ্রহ করে এই দুই এলাকায় ফেলা হচ্ছে। এই ব্যাপারে প্রসাশনের কড়া নজরদারি কামনা করছেন এলাকাবাসী।

এএম