প্রমত্তা টিয়াখালী নদটি এখন পলি জমে সংকুচিত হয়ে এসেছে। বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের বাইরে সরকারের বরাদ্দকৃত জমিতে বসতি গড়ে তুলেছেন নিম্ন আয়ের মানুষ। তবে, আবাসস্থল নিশ্চিত হলেও নিশ্চিত হয়নি জীবনের নিরাপত্তা। হঠাৎ অস্বাভাবিক জোয়ারের পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে বাসস্থানসহ সব। আশ্রয়কেন্দ্র না থাকায় দুর্যোগকালীন জীবন ও সম্পদ ছেড়ে দিতে হচ্ছে ভাগ্যের ওপর।
ভুক্তভোগীদের মধ্যে একজন জানান, সব জমি ডুবে গেছে। চলাচলে অসুবিধা । আর ছেলে-মেয়েরা স্কুলে যেতে পারছে না।
আরও একজন জানান, জোয়ারের পানিতে ঘর-বাড়ি তলায় যায়। বর্ষাকালে তো থাকার সুযোগই নাই।
জোয়ারের পানিতে নষ্ট হচ্ছে চলাচলের রাস্তা, বসতবাড়ি, ফল-ফসল, পুকুরের মাছ। সংকট রয়েছে খাবার পানির। ঝুঁকিতে রয়েছে শিশু শিক্ষা কার্যক্রম। ভেঙে পড়েছে স্যানিটেশন ব্যবস্থাও। তাই ভুক্তভোগীরা দাবি আদায়ে নানা কর্মসূচি নিয়ে বেড়িয়েছেন রাস্তায়।
ধানখালী ইউনিয়নের পশ্চিম লোন্দা গ্রামের বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের বাইরের তিনশত পরিবারসহ বিপর্যস্ত বাসিন্দাদের স্বার্থ রক্ষার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানালো বিপন্ন মানুষের সেবা নিশ্চিত ও স্বার্থ রক্ষায় কাজ করা হচ্ছে।
কলাপাড়ার মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা বলেন, 'ধানখালী এবং চম্পাপুরে যে রিং বেড়িঁবাধগুলো আছে সেগুলো সংস্কার করা হয়। আর রিং বেড়িবাঁধ যদি নতুন করে তৈরি করে দেওয়া যায় তাহলে যারা মাছ চাষ করে ঐ পুকুরগুলো অতিবৃষ্টিতে প্লাবিত হবে না।'
কলাপাড়ার কৃষি কর্মকর্তা আরাফাত হোসেন বলেন, 'এখানে আনুমানিক ২০০ একর জমি। কৃষকরা আমন মৌসুমে একটু সমস্যা বোধ করে। কারণ চারপাশ খোলা হওয়ার জন্য আকস্মিকভাবে পানি ঢুকে যায় এবং আমাদের আমন ধান প্লাবিত হয়।'
কলাপাড়া নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রবিউল ইসলাম বলেন, 'টেকসই রিং বেড়িবাঁধের জন্য প্রক্রিয়া চলমান আছে। শিগগিরই কাজটি শুরু হলে যারা বাঁধের বাইরে আছে তারা ভেতরে চলে আসবে। অন্তত ঘূর্ণিঝড় থেকে রক্ষা পাবে।'
সংশ্লিষ্টরা এগিয়ে আসলে পানির নির্মমতায় বিপর্যস্ত পরিবারগুলোর নিরাপদ জীবনযাপন নিশ্চিত হবে এমনটাই প্রত্যাশা স্থানীয়দের।