বগুড়া শহরের সাতমাথা থেকে কয়েকশ' মিটার পূর্বে প্রবাহিত হচ্ছে করতোয়া নদী। জেলার পূর্ব দিকের বাসিন্দাদের শহরে যোগাযোগের একমাত্র ভরসা নদীর উপর নির্মিত ফতেহ আলী সেতু। তবে এটি ভেঙে ফেলায় ভোগান্তিতে চার উপজেলার ১২ লাখ মানুষ। একবছর আগে পুনঃনির্মাণের কাজ শুরুর কথা থাকলেও হয়নি দৃশ্যমান কোনো কাজ।
২০১৮ সালে সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করে বন্ধ করা হয় ভারি যান চলাচল। পরে ২০ কোটি টাকা ব্যয়ে ২০২৩ সালের মে মাসে শুরু হয় সেতুর পুনঃনির্মাণ কাজ। বিকল্প কোনো পথ নির্মাণ না করে পুরনো সেতু ভেঙে ফেলায় ভোগান্তি বাড়ে স্থানীয়দের। এ অবস্থায় বাঁশের সাঁকো দিয়ে ঝুঁকি নিয়েই পার হতে হচ্ছে নদী। তবে তীব্র স্রোতে বাঁশের সাঁকোটিও ভেসে যাওয়ার শঙ্কা স্থানীয়দের। একজন জানান, 'এই বাঁশের ব্রিজ দিয়ে আসা যাওয়া খুবই কষ্ট। ছোট বাচ্চাদের আসার সময় পা ঢুকে যায়। দুর্ঘটনায় পড়লে অ্যাম্বুলেন্স , ফায়ার সার্ভিস ঘুরে আসতে হয়।'
এদিকে সেতু ভেঙে ফেলায় সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন দু'পারের ব্যবসায়ীরা। কয়েক কিলোমিটার পথ ঘুরে পণ্য আনা নেয়া করতে হয় নদীর দু'পারের বড় দুই বাজার ফতেহ আলী ও চাষী বাজারের ব্যবসায়ীদের। এতে একদিকে বাড়ছে খরচ, অন্যদিকে নষ্ট হচ্ছে সময়।
ব্যবসায়ীদের মধ্যে একজন জানান, অনেকদিন হয়ে গেছে তাও কাজ ঠিকমতো হচ্ছে না। দুই দিন কাজ করলে ৭ দিনই বন্ধ থাকে।
গেল মে মাসে শেষ হওয়ার কথা ছিল সেতুর পুনঃনির্মাণ কাজ। নির্ধারিত সময়ের প্রায় চার মাস পেরিয়ে গেলেও কাজ হয়েছে কেবল ৭০ ভাগ। কাজের মেয়াদকাল বৃদ্ধি করা হয়েছে ২০২৫ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত। যদিও নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ না হওয়ার জন্য অতিবৃষ্টি, ভূগর্ভের পাথরের স্তরসহ নানান জটিলতাকে দুষছেন সংশ্লিষ্টরা।
সড়ক ও জনপদের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আসাদুজ্জামান বলেন, 'নদীতে অনেক পানি ছিল যার জন্য সেতু নির্মান কাজ শুরু করতে ২ থেকে ৩ মাস দেরি হয়ে যায়। ফতেহ আলী বাজারে আমাদের ল্যান্ড এ্যাকুজিশন ছিল। এটা আমরা শেষ করতে পেরেছি ২০২৪ সালের মার্চ মাসে। সুতরাং এই কারণেই সেতু নির্মাণ কাজে আমাদের সময় লেগে যায় ।'
নড়বড়ে এই বাঁশের সাঁকোর উপর দিয়ে বগুড়া জেলার পূর্বাংশের চারটি উপজেলার মানুষের পাশাপাশি কালিতলা-জামথল ঘাট হয়ে বগুড়া শহরের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রয়েছে জামালপুরের মানুষের। বর্ধিত সময়ের মধ্যে তাই গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কের গুরুত্বপূর্ণ এই সেতু নির্মাণের দাবি স্থানীয়দের।