ক্ষমতার পালাবদল হয়, অনেক কিছুই বদলায় শুধু বদলায় না নদীপাড়ের মানুষের ভাগ্য। বানের জলে প্রতিবছরই ভাসতে হয় মুহুরি, কহুয়া ও সিলোনীয়া নদীপাড়ের বাসিন্দাদের।
বছর বছর আশার বাণী দেয়া হলে কাজ করেনি কেউই। ভেঙেছে নদীর বাঁধ, ভেসেছে জনপদ, ঘর-বসতি, ফল, ফসল। দুঃখ ঘোচেনি ফেনীর উত্তরের লাখো বাসিন্দার।
বাসিন্দাদের একজন বলেন, ‘বন্যার পানির কারণে আমাদের রাস্তার উপর গরু, ছাগল নিয়ে থাকতে হচ্ছে।’
আরেকজন বলেন, ‘বছর বছর বন্যার পানির কারণে ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়ছি।’
১৯৯৮ সালে পরশুরামের জনসভায় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুহুরি ও কহুয়া নদীর ভাঙন ঠেকাতে স্থায়ী সমাধানের জন্য প্রকল্প গ্রহণের আশ্বাস দেন। ২০০৫ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া ১৫৫ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি প্রকল্প হাতে নেন। যার কাজ শেষ হয় ২০১১ সালে। বন্যা নিয়ন্ত্রণে ১২২ কিলোমিটারের সেই বাঁধও কোনো কাজে আসেনি।
স্থানীয়রা বলছেন, প্রতিবছর বর্ষা মৌসুম এলেই শুরু হয় তাদের দুঃখ কষ্টের। এক মৌসুমেই কয়েক দফার বন্যায় ভাসতে হয়। পানি উন্নয়ন বোর্ড বাঁধ মেরামতের কাজে নয়-ছয় করে কোন রকমে জোড়াতালি দেয়। বৃষ্টি এলেই তা আবার ভাঙে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী ও জেলা প্রশাসক জানান, আগামী বর্ষা মৌসুমের আগেই মুহুরি ও কহুয়া নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের কাজ শুরু হবে।
ফেনী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রাশেদ শাহরিয়ার বলেন, 'তিন সংস্থা মিলে বাঁধ নির্মাণের কাজের জন্য জরিপ করছে শেষ হলেই আমরা ডিজাইন করে প্রকল্প হাতে নিবো।'
ফেনী জেলা প্রশাসক মুসাম্মৎ শাহীনা আক্তার বলেন, 'এই বাঁধের পরিকল্পনা একনেক অনুমোদন হবে।'
২০১১ সালে ১৩৭ কোটি টাকা ব্যয়ে মুহুরি-কহুয়া-সিলোনিয়া নদীর ১২২ কিলোমিটারে মাটির বাঁধ নির্মাণ করা হয়। ২০১৩ সালে আকস্মিক বন্যায় বাঁধের তিনটি স্থানে ভাঙন দেখা দেয়। এরপর থেকে প্রতিবছরই ভাঙছে বাঁধের বিভিন্ন অংশ।