দেশে এখন
0

ঈশ্বরগঞ্জ-আঠারবাড়ী সড়কের বেহাল দশায় চরম দুর্ভোগে চলাচলকারী

প্রকল্পের মেয়াদ বেড়েছে কয়েক দফা। কিন্তু প্রতিবারই সড়কের কাজ থেমে গেছে ভূমি অধিগ্রহণ জটিলতায়। এভাবেই কেটে গেছে কয়েক বছর। খানা খন্দে ভরা সড়কের বেহাল দশায় চরম দুর্ভোগে ফেলেছে চলাচলকারীদের। কেনা-বেচা কমেছে সড়ক সংলগ্ন দোকানপাটে। এই চিত্র ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ-আঠারবাড়ী সড়কের। যেখানে প্রায়ই ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা।

সিজারিয়ান অপারেশনে সন্তান জন্ম দেয়া অসুস্থ স্ত্রীকে নিয়ে অটোরিকশায় চেপে হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরছেন রফিকুল। সড়কে উঠেই কপালে চিন্তার ভাঁজ। সড়কের কোন অংশ দিয়ে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে নিরাপদে বাড়ি ফিরবেন তার কূলকিনারা পাচ্ছেন না রফিকুল। সড়কে ছোট-বড় অসংখ্য খানা খন্দে ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রোগী ও স্বজনদের এ রকম ঝুঁকি নিয়েই আসা-যাওয়া করতে হয়।

ঈশ্বরগঞ্জ পৌরসভার বাসস্ট্যান্ড মোড় থেকে হাসপাতাল পর্যন্ত সড়কের বেহাল দশায় দুর্ভোগ যেন নিত্যসঙ্গী। সড়কের এক পাশে কিছু স্থানে ঢালাই শেষ হলেও কেটে ফেলে রাখা হয়েছে আরেক পাশ। বৃষ্টি হলে দুর্ভোগ বাড়ে কয়েকগুণ। প্রায়ই ঘটে দুর্ঘটনা।

রোগীর স্বজনদের একজন বলেন, 'রোগী নিয়ে আসতেছি ১০ মিনিটের রাস্তা এখন ১ ঘণ্টার মতো লাগছে। ব্যথায় রোগী চিল্লাপাল্লা করছে।'

পথচারীদের একজন বলেন, 'কাজের কোনো উন্নয়ন নেই। রাস্তাঘাটের বেহাল দশা।'

বেহাল সড়কে চলাচলে বেকায়দায় পড়েন স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীরা। সড়কের করুণ অবস্থায় আশপাশের পাশের দোকানও কমেছে বেচাকেনা। এতে ক্ষতির মুখে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা।

শিক্ষার্থীদের একজন বলেন, 'রাস্তার কাদায় ড্রেসগুলো নষ্ট হয়ে যায়। রাস্তাঘাট দিয়ে চলাচল করতে পারি না।' 

ব্যবসায়ীদের একজন বলেন, 'ভাঙ্গা রাস্তার জন্য মানুষ আসতেই চায় না যার ফলে বেচাকেনা খুব কম।' 

ঈশ্বরগঞ্জ-আঠারবাড়ী ১৫ কিলোমিটার সড়কের ১২ কিলোমিটার কাজ শেষ হলেও ভূমি অধিগ্রহণ জটিলতায় ঈশ্বরগঞ্জ পৌরসভা অংশে অন্তত ৩ কিলোমিটারে আটকে আছে নির্মাণকাজ। অধিগ্রহণের টাকা হাতে পাওয়ার আগে জমি ছাড়তে নারাজ ভূমির মালিকেরা।

ভূমির মালিক একজন বলেন, ;সরকার তো জমি নিবেই। সরকার টাকা না দিলে আমরা অন্য জায়গায় ঘর তৈরি করতে পারছি না যার ফলে টাকা হাতে না পেলে আমাদের জায়গা থেকে সরতে পারবো না।'

২০২০ সালের মার্চে ১১৫ কোটি ৫৯ লাখ টাকা ব্যয়ে সড়কের নির্মাণ কাজ শুরু হয়। পরবর্তীতে প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো হলেও কাজ শেষ হওয়া নিয়ে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা। জমি বুঝে পেলেই সড়কের কাজ শুরু হবে বলে জানান সড়ক ও জনপথ বিভাগের কর্মকর্তা।

ময়মনসিংহ সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. রাশেদুল আলম বলেন, 'পৌরসভার এলাকার জায়গা হওয়ায় স্থানীয়রা টাকা হাতে না পাওয়া পর্যন্ত জমি দিবে না।'

ময়মনসিংহ অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. শিহাব উদ্দিন আহমদ জানায়, অধিগ্রহণের কাজের চাপ এবং জনবল সংকটে কিছুটা দেরি হচ্ছে। আগামী দুই থেকে তিন মাসের মধ্যেই ক্ষতিপূরণের টাকা পাবেন জমির মালিকরা।

ইএ