সবেমাত্র দিনের আলো ফুটেছে। হৃদয় আর উর্মি দুই ভাইবোন ফুল হাতে দাঁড়িয়ে শাহজালাল বিমানবন্দরের টার্মিনাল দুইয়ের আন্তর্জাতিক আগমনের গেইটে। অপেক্ষা মক্কা ফেরত বাবা মাকে অভ্যর্থনা জানানো।
কিছুক্ষণ পরই এলো কাঙ্ক্ষিত সেই মুহূর্ত। বাবা মাকে পেয়ে আনন্দে চোখে পানি তাদের। আলিঙ্গনে ঘুচলো ৪০ দিনের দূরত্ব। মনে হলো হাজার বছরের অপেক্ষার অবসান ফুরালো তাদের।
হৃদয় বলেন, 'প্রথম যখন গিয়েছে তখন কষ্ট হয়েছে। তবে মোবাইলের যুগে ভিডিও কলে কথা হয়েছে। এরপর থেকে কাউন্ট ডাউন শুরু করেছি কবে আসবে। এখন বিমান বন্দরে দূর থেকে বাবা মাকে দেখার পরে অনুভূতি প্রকাশ করার মতো না।'
বাবা মায়ের চোখে মুখে তখনও লেপ্টে আছে আল্লাহর ঘর দেখার প্রশান্তি। বললেন হাজরে আসওয়াদে চুমু খাওয়ার গল্প। হযরত মোহাম্মদ সাল্লাহু আলাইহি ওয়াসসালামের স্মৃতিবিজড়িত স্থানগুলোতে যেন সন্তানরাও যেতে পারে সেই দোয়া করলেন।
হৃদয়ের বাবা বলেন, 'হজ করে সন্তুষ্ট আমি। নিয়ত করেছি সন্তানদের নিয়ে হজ করতে যাবো।'
শুক্রবার পৌনে ৬ টায় ৪১৭ হাজি নিয়ে ঢাকায় নামে হজের প্রথম ফিরতি ফ্লাইট। তার ঠিক মিনিট বিশেকের মধ্যেই লাগেজ নিয়ে বের হতে থাকেন হাজিরা। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স থেকে পান উষ্ণ অভ্যর্থনাও। এসময় হজের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় সন্তুষ্ট প্রকাশ করেন তারা।
হাজিদের একজন বলেন, 'সবকিছু ঠিক মতো করে আসতে পেরেছি। আল্লাহর রহমতে কোনো সমস্যা হয়নি।'
প্রথম ফিরতি ফ্লাইটের যাত্রীদের বরণ করে নিয়ে সিভিল অ্যাভিয়েশনের চেয়ারম্যান বলেন, রোড টু মক্কার চুক্তির পুরোপুরি সুফল পাচ্ছে বাংলাদেশ। আর ফিরতি ফ্লাইটগুলোও কোন রকম জটিলতা ছাড়াই শেষ করতে চায় বিমান। রোড টু মক্কার কারণে হাজিরা সহজে হজে যেতে পারছেন হজ ক্যাম্প থেকে সরাসরি। সৌদি পৌঁছে কোনো ইমিগ্রেশনের ঝামেলা নিতে হচ্ছে না তাদের।'
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের এমডি মো. জাহিদুল ইসলাম ভূঞা বলেন, 'আমাদের সর্বাত্মক প্রস্তুতি আছে। সেই ব্যবস্থাপনা অনুসারে তাদের জমজমের পানি, লাগেজ দ্রুত দেয়া হচ্ছে।'
২১জুন থেকে শুরু হয়ে ২২ জুলাই পর্যন্ত দেশে ফিরবে হাজিদের বহনকারী ফিরতি ফ্লাইটগুলো।