দেশে এখন
0

সিলেটের চার জেলায় পানিবন্দি ১৮ লাখের বেশি মানুষ

উজানের ঢল ও অতিবৃষ্টির কারণে অপরিবর্তিত রয়েছে সুনামগঞ্জ, সিলেট, হবিগঞ্জ ও মৌলভীবাজারের বন্যা পরিস্থিতি। বন্যা কবলিত এলাকায় এখনও বৃষ্টি থামেনি। এতে প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। এই চার জেলায় পানিবন্দি রয়েছে ১৮ লাখের বেশি মানুষ। তৈরি হয়েছে খাবার সংকট।

সুনামগঞ্জের রাস্তাঘাট তলিয়ে গেছে বন্যার পানিতে। নদী উপচে পানি ঢুকে পড়েছে বাসা-বাড়িতে। সড়কে কোথাও হাঁটু কোথাও আবার পানি ছুঁয়েছে কোমর। ৩ হাজারের বেশি বর্গকিলোমিটার এলাকা ভাসছে বানের জলে। যাতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জন-জীবন। যদিও জেলাবাসীর কাছে এমন ঘটনা প্রায় প্রতি বছরের।

সুনামগঞ্জের নদ-নদীর পানি কিছুটা কমলেও এখনও বইছে বিপদসীমার উপর দিয়ে। এতে প্লাবিত হয়েছে ১ হাজার ১৮টি গ্রামের ৬ লাখ ৬০ হাজার মানুষ। তবে ঢলের পানিতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত দোয়ারাবাজার ও ছাতক উপজেলা। ঘরবাড়ি ছেড়ে অনেকেই জীবন বাঁচাতে ছুটছেন আশ্রয়কেন্দ্রের দিকে। এখন পর্যন্ত জেলায় ৫১৬ টি আশ্রয়কেন্দ্রে উঠেছেন ১৮ হাজারের বেশি মানুষ। সেই সাথে তলিয়ে গেছে সাত উপজেলার নিম্নাঞ্চল। এমনকি ঢলের পানিতে প্লাবিত হয়েছে পৌর শহরের বিভিন্ন এলাকা। যাতে তৈরি হয়েছে খাবার সংকট। রাস্তাঘাট তলিয়ে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে সড়ক যোগাযোগ।

সিলেটে বুধবার রাত থেকে বৃষ্টি কিছুটা কমলেও আজ সকাল থেকে আবারও শুরু হয়েছে মুষলধারে বৃষ্টি। এতে দুর্ভোগ আরও বেড়েছে। নতুন করে মহানগরীর ২টি ওয়ার্ডসহ পানি ঢুকেছে ২২৫টি গ্রামে। এতে একদিনের ব্যবধানে সাড়ে ৬ লাখ থেকে ৮ লাখে দাঁড়িয়েছে বন্যা কবলিতের সংখ্যা।

সড়কে চলাচলের একমাত্র বাহন এখন নৌকা। তাই অনেক মানুষ যেতে পারছেন না আশ্রয়কেন্দ্রে। এমনকি পাচ্ছেন না ত্রাণ সহায়তা। এতে না খেয়ে দিন পার করছেন দুর্গতরা।

এদিকে ঢলের পানি বইছে মৌলভীবাজারের মনু, কুশিয়ারা ও জুড়ি নদীর পানি। এতে প্লাবিত হয়েছে সদর উপজেলা, রাজনগর, কুলাউড়া, জুড়ি ও বড়লেখার তিন লাখেরও বেশি মানুষ। জীবন বাঁচাতে সন্তান ও প্রিয়জন নিয়ে আশ্রয় নিচ্ছেন উঁচু স্থানে।

কুশিয়ারা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় বন্যা পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে হবিগঞ্জে। বৃহস্পতিবার রাতে জেলার নবীগঞ্জে কুশিয়ার নদীর বাঁধ উপচে পানি প্রবেশ করে লোকালয়ে। এতে উমরপুর, মোস্তফাপুর, কসবা, কানপুর, চাদগাঁওসহ ২৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়ে পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন অন্তত ৩০ হাজার মানুষ। এমন অবস্থায় ৮৮টি আশ্রয়কেন্দ্রে ছুঁটছেন বন্যা কবলিতরা। তবে গবাদি পশু নিয়ে পড়েছেন সীমাহীন ভোগান্তিতে। 

ইএ