শরীয়তপুরের গোসাইরহাটের সাপ্তাহিক পশুর হাট বসে প্রতি শনিবার। কোরবানির ঈদ ঘিরে গরু আর ছাগল মিলে অন্তত ৯ হাজার পশুতে কানায় কানায় ভরে উঠেছিল আজকের এ হাট। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলে বেচাকেনা। ধীরে ধীরে জমে উঠতে শুরু করেছে হাট।
বেলা শেষে এক-তৃতীয়াংশ পশুই বিক্রি হয়ে যাচ্ছে দাবি বিক্রেতা আর ইজারাদারের। তবে পশুর দাম নিয়ে ক্রেতা ও বিক্রেতাদের মাঝে রয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। বিক্রেতারা বলছেন, প্রতিটি পশুর দাম বেড়েছে ৫ থেকে ৭ হাজার টাকা পর্যন্ত। সর্বোচ্চ ৪ লাখ আর সর্বনিম্ন ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকায় পাওয়া যাচ্ছে কোরবানির গরু। এছাড়া ইজারাদারদের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত হাসিল আদায়ের অভিযোগ করেছেন ক্রেতা-বিক্রেতারা।
একজন বিক্রেতা বলেন, 'আমি গরু বিক্রি করে ৮০০ টাকা দিয়েছি, আবার যে নিয়েছে তাকেও ৮০০ টাকা দিতে হয়েছে।'
শরীয়তপুরে স্থায়ী ২৩ টি পশুর হাটের একই চিত্র। বিক্রেতাদের অভিযোগ, হাটে পশুর সংখ্যা বৃদ্ধি পেলেও অধিকাংশ হাটেই তদারকিতে দেখা মেলেনি প্রাণী সম্পদ কার্যালয় ও উপজেলা প্রশাসনের প্রতিনিধিদের। এতে গরমে অসুস্থ পশু নিয়ে বিপাকে পড়ছেন বিক্রেতারা। এ ছাড়া হাটে প্রতিদিন কোটি কোটি টাকার লেনদেন হলেও জাল টাকা শনাক্তে নেই কোনো ব্যবস্থা। এতে শঙ্কিত হয়ে আছেন অনেক বিক্রেতা।
তবে হাটে আসা পশুর তাৎক্ষণিক চিকিৎসায় মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে বলে দাবি করছেন প্রাণী সম্পদ কার্যালয়ের কর্তারা। আর অতিরিক্ত হাসিল আদায়ের বিষয়টি অকপটে স্বীকার করলেন এক ইজারাদার।
শরীয়তপুর গোসাইরহাটের ইজারাদার লোকমান হোসাইন বলেন, 'ঈদে লোকজন একটু বেশি খাটে সেজন্য ইজারার টাকা বাড়ানো হয়েছে। ক্রেতা আর বিক্রেতার কাছে থেকে সমান টাকা নেয়া হচ্ছে।'
শরীয়তপুর ভেদরগঞ্জ উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের ভেটেনারি চিকিৎসক মোহাম্মদ আল-আমিন বলেন, 'কোরবানির গরুর হাটকে উদ্দেশ্য করে এখানে আমরা সকাল থেকেই মেডিকেল টিম গঠন করেছি। কোনো স্ট্রোক বা অন্যকোনো সমস্যা হলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা দিয়ে থাকি আমরা।'
এ বছর শরীয়তপুরে কোরবানির জন্য ১ লাখ ৭ হাজার ৩২টি পশু প্রস্তুত করা হয়েছে। জেলায় চাহিদা রয়েছে ১ লাখ ৩২টি পশুর। উদ্বৃত্ত ৬ হাজার ৯৬৮টি পশু রাজধানী ও আশেপাশের জেলায় বিক্রি হবে।