দেশে এখন
কাঁচামালের দাম বাড়ায় ঐতিহ্য হারাচ্ছে কাঁসা শিল্প
কাঁসা-পিতল শিল্পের জন্য একসময় বিখ্যাত ছিল শরীয়তপুর। কাঁচামালের মূল্যবৃদ্ধি আর সঠিক পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে ঐতিহ্য হারাতে বসেছে শিল্পটি। সহজশর্তে ঋণ ও নতুন আঙ্গিকে বাজারজাত করা গেলে এ শিল্প থেকে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব।

জলন্ত আগুনে পোঁড়ানো হয় পিতলের কাঁচামাল। এরপর মেশিনের সাহায্যে চ্যাপ্টা করে পিতলের সামগ্রী তৈরির উপযোগী করা হয়। কারিগরদের হাতে পৌঁছানোর পর বিভিন্ন পণ্যের আকৃতি অনুযায়ী করা হয় টুকরো টুকরো। তারপর ডিজাইন মত তৈরি হয় বিভিন্ন জিনিস।

ভোর থেকে হাতুড়ি পেটানোর শব্দে মুখর থাকে শরীয়তপুরের দাসার্তা গ্রাম। কারখানা থেকে ভেসে আসে হাতুড়ির টুংটাং শব্দ। কারিগরদের নিপুণ হাতের ছোঁয়ায় তৈরি হচ্ছে পিতলের সামগ্রী। যুগ যুগ ধরে এ কাজ করছেন কারিগররা। কিন্তু বদলায়নি তাদের ভাগ্যের চাকা।

একজন কারিগর বলেন, 'প্রায় ৪০ বছর ধরে কাজ করি। অনেক ধরণরে জিনিস বানাতে পারি। কিন্তু একদিনে সাত থেকে আটটার বেশি বানানো যায় না। আগের চেয়ে সবকিছুর দাম বাড়ায় মানুষ তেমন একটা কেনে না।'

দাসার্ত্তা মতো জেলার বিলাসখান, কাশাভোগ, রাজনগর গ্রামে ছিল হাজারেরও বেশি কারখানা। দেশের চাহিদা মিটিয়ে এসব সামগ্রী রপ্তানি হতো ভারত, পকিস্তান ও নেপালে। কিন্তু কাঁচামালের মূল্য বৃদ্ধিতে তৈরি সামগ্রী এখন নিম্নআয়ের মানুষের হাতের নাগালের বাইরে। তবে নতুন নকশায় ও আধুনিকতায় বেড়েছে এসব পণ্যের কদর। সরকারি সহযোগিতা আর সহজ শর্তে ঋণ পেলে আবারও ঘুরে দাঁড়াবে শরীয়তপুরের ঐতিহ্যবাহি কাসা-পিতল শিল্প, এমনটা মনে করছেন ব্যবসায়ীরা।

প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কারিগরি জ্ঞান বৃদ্ধি আর আর্থিক সহায়তা প্রদান করার প্রতিশ্রুতি বিসিকের কর্মকর্তার।

শরীয়তপুর বিসিক শিল্প নগরের উপ ব্যবস্থাপক নাজমুল হক বলেন,'বিসিক কিন্তু ঋণ প্রদান করে ও প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকে। কাঁসা শিল্পের সাথে যারা জড়িত আছে তারা তাইলে বিসিক তাদের প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকবে।'

কাঁচামালের পাচার রোধ করে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে ঐতিহ্যবাহী কাঁসা-পিতল শিল্পটি ফিরে পেতে পারে হারানো ঐতিহ্য। এ পণ্যের সামগ্রী রপ্তানির মাধ্যমে দেশ অর্জন করতে পারে বৈদেশিক মুদ্রা।

এমএসআরএস