দেশে এখন

ঘুম চোখে গাড়ি চালানোয় ঘটে ফরিদপুরের দুর্ঘটনা: তদন্ত প্রতিবেদন

ঈদের পরেই ১৬ এপ্রিল সরকারি ত্রাণের টিন আনতে গিয়ে ফরিদপুরের মহাসড়কে প্রাণ যায় ১৫ ব্যক্তির। সংঘর্ষে ঘটনাস্থলেই পিকআপে থাকা নারী, পুরুষ, শিশুসহ ১১ জন মারা যান। আহত হন ৭ জন। পরবর্তীতে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান আরও ৪ জন।

ঘটনার তদন্তর জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সড়ক দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. আলী সিদ্দিকীকে প্রধান করে ৭ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।

তদন্ত কমিটি তাদের অনুসন্ধানী প্রতিবেদন জমা দিয়েছে জেলা প্রশাসক কামরুল আহসান তালুকদারের কাছে । তিনি সত্যতা স্বীকার করে জানিয়েছেন, দুঘর্টনার কারণ উল্লখে করে সে বিষয়ে একটি তদন্ত রিপোর্ট রবিবার বিকেলে জমা দিয়েছে।

তিনি বলেন, 'উক্ত রিপোর্টটি আমরা সরকারের উচ্চ পর্যায়ে কাল (সোমবার) পাঠিয়ে দিবো। পরবর্তীতে সরকার সেটির বিষয়ে পদক্ষেপ নিবে।

ফরিদপুরের দুঘর্টনার তদন্ত কমিটির প্রধান অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মোহাম্মদ আলী সিদ্দিকী এ বিষেয় বলেন, 'আমরা দুর্ঘটনা বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সকল বিভাগের মানুষের সঙ্গে কথা বলেছি। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। চেষ্টা করেছি কেন এবং কি কারণে এই মর্মান্তিক দুঘর্টনা হলো সেটি বের করার। পাশাপাশি কিছু সুপারিশ করতে যাতে সড়কে আর মৃত্যুর মিছিল না বাড়ে।

দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে তদন্ত প্রতিবেদনে যা উল্লেখ্য করা হয়েছে, ঈদের পরে বাস চালকের দীর্ঘ সময় গাড়ি পরিচালনায় ক্লান্তি আর চোখে ঘুম ছিলো, তিনি দীর্ঘ সময় গাড়িটি চালাচ্ছিলেন। আমরা সিসিটিভি ফুটেজে দেখতে পেরেছি যাত্রীবাহী বাস ও পিকআপটি অধিক গতিতে ছিলো, তাদের সামনে অটোরিক্সা থাকায় মহাসড়কে নিজস্ব লেন ছেড়ে অন্য লেনে চলে যায়। দুটি গাড়িই ওভার গতিতে ছিলো, যে কারণে গাড়ি দুইটি তাদের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একে অপরকে সরাসরি আঘাত করে।

মহাসড়কে দুঘর্টনা রোধে ফরিদপুরের এই তদন্ত কমিটি যে সুপারিশ করেছেন তার মধ্যে উল্লেখ যোগ্য হলো, সড়ক বা মহাসড়কে চলাচলকারী সকলকে সড়ক আইনে সম্পর্কে সচেতন হতে হবে, দুঘর্টনা প্রবল এলাকায় সড়কে বিভাইডার স্থাপন করতে হবে বা সড়ক প্রসস্ত করতে হবে। যানবাহনের চালকদের নিদিষ্ট সময়ের পর আর গাড়ি চালানোর দায়িত্ব দেওয়া যাবে না। মহাসড়কে কোনভাবেই অটোরিক্সা বা ছোট ঝুঁকিপূর্ণ যান চলাচল বন্ধ করতে হবে। তবেই সড়কে অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যুর মিছিল রোধ করা যেতে পারে।

গত ১৬ এপ্রিল সড়ক দুর্ঘটনায় ১৫ জনের মৃত্যুর ঘটনায় নিহত ইকবাল হোসেনের বড় ভাই এনামুল শেখ বাদী হয়ে যাত্রীবাহী বাসের চালককে আসামি করে ফরিদপুর কোতোয়ালি থানায় মামলা দায়ের করেন।

এদিকে ফরিদপুরে বাস-পিকআপের মুখোমুখি সংঘর্ষে ১৫ জন নিহতের ঘটনায় বাস চালককে আটক করেছে র‍্যাব-১০।

ফরিদপুর র‍্যাব-১০ কোম্পানি অধিনায়ক লে: কমান্ডার কে এম শাইখ আকতার জানান, সড়ক দুর্ঘটনায় ১৫ জনের নিহতের ঘটনায় রোববার বিকেলে ঝিনাইদহ জেলার কোটচাঁদপুর উপজেলা সদর এলাকার একটি বাজারে অভিযান চালিয়ে উত্তরা ইউনিক পরিবহনের চালক খোকন মিয়াকে গ্রেফতার করা হয়।

তিনি আরও জানান, দুর্ঘটনার পর থেকেই খোকন মিয়া পলাতক ছিলেন। খোকন মিয়া ঝিনাইদহ জেলার কোটচাঁদপুর উপজেলার দেলোয়ার হোসেনের ছেলে।

এভিএস

এই সম্পর্কিত অন্যান্য খবর