বেইলি রোড ট্রাজেডির পর ঘুরে ফিরে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার বহুতল ভবনের এয়ারটাইট এমন রেস্তোরাঁ এখন আলোচনায়।
এই যেমন ধানমন্ডির সাতমসজিদ রোডের গাউছিয়া টুইন পিক ভবন। বেইলি রোডের অগ্নিকাণ্ডের পর এই ভবনের স্থপতির সূত্র ধরে জানা গেল একটি অফিস বিল্ডিং কীভাবে নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে সবার নাকের ডগায় রেস্তোরাঁ চালাচ্ছে।
ভবনটিতে প্রবেশ করে দেখা যায়, পেছনের অংশে রাখা সারি সারি গ্যাস সিলিন্ডার। পাইপের মাধ্যমে সংযোগ দেয়া হয়েছে ওপরের রান্নাঘরের সাথে। ভবনের বিভিন্ন ফ্লোরে অগ্নিনির্গমন পথও বন্ধ করা।
এই ভবনের নিরাপত্তা নিয়ে সরব হন এর স্থপতি মুস্তফা খালিদ পলাশ। ফেসবুকের মাধ্যমে ভবনটিতে যাওয়া থেকে বিরত থাকতেও আহ্বান জানান।
কিন্তু কী কারণে নিজের নকশা করা ভবনে যেতে নিষেধ করেছেন তিনি? স্থপতি জানান, ভবনের সৌন্দর্য নয়, নিরাপত্তাই মূখ্য। বারবার মালিকপক্ষকে রেস্তোরাঁ ভাড়া না দেয়ার অনুরোধ সত্ত্বেও আসেনি সমাধান।
মুস্তফা খালিদ বলেন, 'আমি গতকাল প্রথমেই কিন্তু এই জমির মালিক, ডেভলপমেন্ট, ফায়ার স্টেশন মাস্টারকে লিখে আবার জানালাম। তারপর কিছুক্ষণ পরে আমি একটা সূত্রে মন্তব্য করেছি। সেই মন্তব্য এই ভবন সম্পর্কে আমার অভিজ্ঞতা, আমার অবস্থান জানিয়েছি। আমি শেষমেষ জনসাধারণকে নিষেধ করেছি ভবনকে ব্যবহার করতে।'
ধানমন্ডি, বেইলি রোড, বনানীসহ রাজধানীর বেশকিছু জায়গায় তৈরি হয়েছে রেস্তোরাঁ হাব। নান্দনিক বিভিন্ন ভবনে অনুমতি না থাকলেও চলছে রমরমা ব্যবসা। তবে নিরাপত্তার স্বার্থে এসব বন্ধ করার তাগিদ এই স্থপতির। বলেন, 'আমার তৈরি করা ভবনগুলি বিজ্ঞানভিত্তিক আবিষ্কার, অপকর্মে ব্যবহার করা হয় সেটা এক জিনিস, ডাইনামিক তৈরি করা হয়েছিল এক কাজের জন্য সেটা ব্যবহার হচ্ছে অন্য কাজে। আমি একজন স্থপতি হিসেবে, এই ভবনটির স্রষ্টা হিসেবে মনে করি যে আমার কাছে সৌন্দর্য, আমার কাছে স্থাপত্য, আমার কাছে সব কিছু অর্থ অনর্থ হয়ে যায় যদি সেখানে মানুষের জীবনের নিরাপত্তা না থাকে।'
রেস্তোরাঁ হাবগুলো যেন অগ্নিবোমা না হতে পারে, সে ব্যাপারে সবপর্যায় থেকে এখনই ব্যবস্থা নেয়ার তাগিদ এই স্থপতির।