দেশে এখন
0

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আতপ চালের বাজার চড়া

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আতপ চালের বাজার চড়া হয়ে উঠেছে। সরকার সংগ্রহের জন্য কেজি প্রতি ৪৩ টাকা নির্ধারণ করলেও খোলাবাজারে কেনাবেচা হচ্ছে ৪৬ টাকায়।

চালকল মালিকরা আশুগঞ্জের মোকাম থেকে ধান কিনে চাল তৈরি করে খোলাবাজারে বিক্রির পাশাপাশি সরকারি গুদামে সরবরাহ করেন। তবে চলতি আমন মৌসুমে সংকটের কারণে মোকামে সব জাতের ধানের দর ঊর্ধ্বমুখী। এতে সরকারের চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে আতপ চাল সংগ্রহ অভিযানে ভাটা পড়েছে।

আমন মৌসুমে ৮ হাজার ৭০৩ টন চাল সংগ্রহের জন্য জেলার ৩০টি চালকলের সঙ্গে খাদ্য বিভাগ চুক্তি করে। গত ২৩ নভেম্বর থেকে শুরু হওয়া ধান-চাল সংগ্রহ অভিযান ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলবে। তবে দুই মাসে মাত্র ১ হাজার ৭৫৩ টন সংগ্রহ হয়েছে।

মূলত মোটা ধান থেকে চালকল মালিকরা আতপ চাল তৈরি করেন‌। আর এ ধান বর্তমানে মোকামে ১২০০ থেকে ১২৫০ টাকা দরে কেনাবেচা হচ্ছে। ফলে সরকারি দরে আতপ সরবরাহ করতে গিয়ে কেজিতে ৪-৫ টাকা লোকসান হচ্ছে বলে চালকল মালিকদের দাবি।

চালকল মালিকরা বলেন, 'আতপের ধানটা ঠিকভাবে মিলানো যাচ্ছে না। আর যে ধান মিলতেছে বাজারে চালের দরে আমাদের লাভ হচ্ছে না। গোডাউনে এখন দেওয়া যাবে না। ঐখানের দরের সাথে প্রায় দেড়শ' টাকা ব্যবধান হয় যাইতেছে। এতো লোকসান দিয়ে কি ব্যবসা করা সম্ভব। ধানের যে অবস্থা এতে অনেক টাকা ক্ষতি হবে। আর ধানও পাওয়া যাচ্ছে না।'

আতপ সংগ্রহ অভিযানে সদর উপজেলা খাদ্য বিভাগের সবচেয়ে দূরাবস্থা। অভিযানের দুই মাস পেরিয়ে গেলেও কোন চাল সংগ্রহ হয়নি।

স্থানীয় খাদ্যগুদামের সংরক্ষণ ও চালকল কর্মকর্তা মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ হিস শাফী বলেন, 'আমাদের লক্ষ্যমাত্রা ৪০০ টন, এখন পর্যন্ত আসেনি। সরকার ইতিমধ্যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে যারা চাল দিবে না তাদের জামানত বাজেয়াপ্ত হবে।'

মিল মালিকরা সরবরাহ না করায় আতপ চালের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে শঙ্কা

লোকসানের কারণ দেখিয়ে খাদ্য বিভাগের সাথে চুক্তি করা অধিকাংশ চালকল মালিক গুদামে চাল সরবরাহ বন্ধ রেখেছেন। ক্ষতি পোষাতে তারা প্রণোদনা চান।

জেলা চালকল মালিক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. ওবায়দুল্লাহ বলেন, 'আমাদের ৪৬ থেকে ৪৮ টাকা করে পড়ে কিন্তু আমরা পাই ৪৩ টাকা। এতো টাকা লোকসান দিয়ে তো আর কেউ চাল দিবে না। আমার মনে হয় বাকি চালটা আর দেওয়া হবে না। আমরা যারা সিদ্ধ এবং আতপ চাল সরবরাহ করতেছি তাদেরকে যেন প্রণোদনা দেওয়া হয়।'

খাদ্য বিভাগ বলছে চুক্তি করেও যারা চাল দিচ্ছেন না তাদের জামানত বাজেয়াপ্ত হবে। তবে উত্তরবঙ্গে অতিরিক্ত বরাদ্দ দিয়ে আতপ চাল সংগ্রহ করা হচ্ছে। এছাড়া গুদামে থাকা ধান থেকে নিজেরাই আতপ চাল তৈরি করছেন বলে জানান জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক আলমগীর কবির।

বলেন, 'যতো সর্বোচ্চ সংখ্যক সংগ্রহ করা যায় সেই চেষ্টা তো আমাদের থাকবেই। সরকার আরেকটা পদ্ধতি নিয়েছে, সংগৃহীত ধান আতপ চালে ছাটাই করা হচ্ছে। যারা আমাদেরকে চাল সরবরাহ করবে না তাদের জামানত বাজেয়াপ্ত করা হবে। তারা চুক্তি করেছে কিন্তু চাল সরবরাহ করছে না। আর যারা চুক্তি করেনি আমরা তাদের লাইসেন্স বাতিল করে ব্যবস্থা নিবো।'

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আতপ চালের ভোক্তা কম থাকায় সংগৃহীত চাল চট্টগ্রাম ও সিলেট অঞ্চলে পাঠায় জেলা খাদ্য বিভাগ।