দেশে এখন
0

কয়েকদিনের মধ্যে কমবে গ্যাসের সংকট : তিতাস

রাজধানীতে তীব্র গ্যাস সংকটের মধ্যে তিতাস জানিয়েছে, বন্ধ এলএনজি টার্মিনালটি চালু হলে কয়েকদিনের মধ্যেই এই সংকট কিছুটা কমবে।

দিনে দেড়শ' থেকে ২শ' মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের ঘাটতি, তার সঙ্গে শীতজনিত সংকোচন। তাই রাজধানীতে তীব্র আকার ধারণ করেছে আবাসিক পর্যায়ে গ্যাসের সংকট সংকট। বাধ্য হয়ে অনেক পরিবারকেই মাটির চুলায় রান্না করতে হচ্ছে। পাশাপাশি গ্যাস বিলও দিতে হচ্ছে।

এই পরিস্থিতির শিকার রাজধানীর বাসাবো এলাকার খুশি বেগমও। শেষ ৩ মাস চুলায় গ্যাস না থাকায় বাধ্য হয়ে সব বেলার রান্না মাটির চুলায় করছেন।

রাজধানীর বনশ্রী, বাসাবো, খিলগাঁও, মানিকনগর, মান্ডা, সায়েদাবাদ, যাত্রাবাড়ী, শনিরআখড়া ও পুরান ঢাকা এলাকায় গ্যাস সরবরাহ কম থাকার কারণে নিয়মিত গ্যাসের চাপ কম থাকছে। ফলে প্রতিনিয়ত রান্নার কাজে ব্যাঘাত ঘটছে।

এসব এলাকার বাসিন্দারা বলেন, 'প্রতিমাসেই গ্যাসের বিল দিতে হচ্ছে। কিন্তু ভোর থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত চুলায় গ্যাস থাকে না। পানিটুকুও গরম করতে পারছি না, এই শীতে আমাদের অনেক কষ্ট হচ্ছে।'

রাজধানীর অন্যপ্রান্তেও একই অবস্থা। মোহাম্মদপুর, জুরাইন, কাফরুল, শেওড়াপাড়া, মিরপুর-১০, রায়েরবাগ, কলাবাগান, কাঁঠালবাগান, মগবাজার, লালবাগ, যাত্রাবাড়ী, পোস্তগোলা, মালিবাগ, রামপুরা, বাড্ডা ও মুগদাসহ উত্তরার বিভিন্ন এলাকাতেও রান্নার গ্যাস নিয়ে সংকট চলছে। কিছু এলাকায় কয়েক ঘণ্টার জন্য গ্যাস মিললেও সেটির চাপও তুলনামূলকভাবে কম।

মেসের শিক্ষার্থীরা বলেন, 'গ্যাস না থাকলে মেসে রান্না হয় না। এ কারণে আমাদেরকে বাধ্য হয়ে বাইরে খেতে হচ্ছে। ফলে খরচ বেড়ে যাচ্ছে।'

প্রতিদিন দেশে চার হাজার মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের চাহিদা রয়েছে। সেখানে এর বিপরীতে নেই পর্যাপ্ত সরবরাহ। ফলে প্রতিদিন ঘাটতি থেকে যাচ্ছে, যার ভুক্তভোগী এলএনজি পাম্পগুলো। কয়েকটি গ্যাস পাম্প ঘুরে দেখা যায়, বেশিরভাগ সিএনজি ও ব্যক্তিগত গাড়ির চালকদের ফিরে যেতে হচ্ছে।

গাড়ির চালকরা বলেন, 'বেশিরভাগ গ্যাস পাম্প বন্ধ হয়ে গেছে। আর যেখানে পাওয়া যায়, সেখানে অনেক সময় সিরিয়াল দিয়ে গ্যাস নিতে হচ্ছে। গ্যাস না পাওয়ায় গাড়ি চালাতেও কষ্ট হচ্ছে।'

বর্তমানে তিতাস গ্যাসের আবাসিক সংযোগ সংখ্যা প্রায় ২৮ লাখ ৫৮ হাজার। এছাড়া বাণিজ্যিক সংযোগ রয়েছে প্রায় ১২ হাজারের মতো। তবে এলএনজি'র একটি টার্মিনাল বন্ধ থাকার কারণে সরবরাহ কিছুটা কম।

তিতাসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হারুনুর রশীদ মোল্লাহ বলেন, 'শীতকাল আসলে একটু বেশিই গ্যাসের সংকট থাকে। আর এটি সাময়িক সমস্যা, এলএনজি টার্মিনালটি চালু হলে সপ্তাহখানেকের মধ্যে গ্যাস সংকট কিছুটা কমে আসবে।'

কয়েক বছরের মাঝেই তিতাস গ্যাসের আবাসিক গ্রাহকদের জন্য প্রায় ১৩ লাখ প্রিপেইড গ্যাস মিটার স্থাপন করা হবে বলেও জানান তিনি।