সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে প্রায় অর্ধশত কোটি টাকার দলীয় মনোনয়ন ফরম বিক্রি হয় রাজনৈতিক দলগুলোর। রাজনৈতিক দলগুলোর দপ্তর থেকে পাওয়া তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, নির্বাচন কমিশনে যে পরিমাণ আয় দেখানো হয় তার প্রায় অর্ধেক মনোনয়ন ফরম থেকে।
এদিকে মূল্যস্ফীতির বাজার বিবেচনা করে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে দলীয় মনোনয়ন ফরমের দাম বাড়াচ্ছে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টি। এরইমধ্যে নির্বাচন কমিশন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে। এর মাধ্যমে মনোনয়নপত্র দাখিল থেকে প্রতীক বরাদ্দ সবকিছুর সূচি ঘোষণা করেছে আওয়ামী লীগ।
আওয়ামী লীগের বার্ষিক আয়ের চিত্র। ছবি: এখন টিভি
তফসিল ঘোষণার পর আওয়ামী লীগের বিভিন্ন ইউনিটের কার্যালয়গুলোতে সরগরম পরিস্থিতি দেখা যাচ্ছে। নেতাকর্মীদের মাঝে্ও নির্বাচনী আমেজ বিরাজ করছে। তাদের মাঝে যে বিষয়টি আলোচনা হচ্ছে, বিভিন্ন আসন থেকে এবার কে হচ্ছেন নৌকার প্রার্থী? গত নির্বাচনে দেশের ৩০০টি আসন থেকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হতে চেয়েছিলেন ৪ হাজার ২৩ জন। ধারণা করা হচ্ছে, এবার এ সংখ্যা তার চেয়ে বেশি হবে।
আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া বলেন, আমাদের দলের প্রার্থী হতে চায় এ ধরনের মানুষের সংখ্যা অনেক বেশি। আমরা দেখেছি, গত কয়েকটি উপ-নির্বাচনেও অংশগ্রহণের জন্য অনেক দলীয় প্রার্থী আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।
মূলত মনোনয়ন ফরম বিক্রি দলটির আয়ের একটি বড় অংশ। নির্বাচন কমিশনে দেখানো দলটির বিভিন্ন বছরের আয়ের প্রবণতা বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, স্থানীয় ও সংসদ নির্বাচনের বছরগুলোতে আওয়ামী লীগের দলীয় আয় বেশি হয়েছে। সবশেষ জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ৪ হাজারের বেশি দলীয় মনোনয়ন ফরম বিক্রি করে আয় করেছিলো প্রায় ১২ কোটি ৭ লাখ টাকা। আর ওই অর্থবছরে দলটির মোট আয় ছিলো ২৪ কোটি ২৩ লাখ টাকা। মূল্যস্ফীতি বিবেচনা করে এবার দলটি সংসদ নির্বাচনের মনোনয়ন ফরমের দাম ৩০ হাজার থেকে ৫০ হাজার টাকা ধার্য করেছে। মনে করা হচ্ছে, এবার মনোনয়ন ফরম বিক্রি থেকে আয় আরও বাড়বে।
তফসিল ঘোষণার পর জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয় ঘিরেও নেতাকর্মীদের উপস্থিতি দেখা যাচ্ছে। নির্বাচনে অংশ নেয়ার বিষয়ে এখন সিদ্ধান্ত হয়নি বললেও, নির্বাচনের সব প্রস্তুতিই দলটির ভেতর-বাইরে নিতে দেখা গেছে। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে এই দলটিও মনোনয়ন ফরমের দাম বাড়িয়েছে। ফলে এবারের নির্বাচনে লাঙল প্রতীকের ফরম সংগ্রহ করতে খরচ হবে ৩০ হাজার টাকা। ২০১৮ সালের নির্বাচনে প্রায় ৩ হাজার প্রার্থী জাতীয় পার্টির মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছিলো, যা থেকে দলটির আয় ছিলো প্রায় ৬ কোটি টাকা।
জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়। ছবি: এখন টিভি
জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, আমাদের আয় সংগঠনের প্রয়োজনেই ব্যয় করা হয়। পরে অডিটের মাধ্যমে আয়-ব্যয়ের হিসাব নির্বাচন কমিশনে জমা দেয়া হয়।
বিএনপি এবার মনোনয়ন ফরমের দাম বাড়াবে কিনা জানা যায়নি। তবে ২০১৮ সালের নির্বাচনে দলটির মনোনয়ন ফরম সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয়েছিলো। যা থেকে দলটির আয় ছিলো প্রায় ১৪ কোটি টাকা।