রেফারিকে কখনো গোল দিতে দেখিনি, ঐকমত্য কমিশনকে উদ্দেশ করে সালাহউদ্দিন

সালাহউদ্দিন আহমেদ
সালাহউদ্দিন আহমেদ | ছবি: সংগৃহীত
1

সরকার ও ঐকমত্য কমিশনের ভূমিকায় হতাশা প্রকাশ করে বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, এভাবে রেফারিকে কখনও গোল দিতে দেখিনি। আজ (বুধবার, ২৯ অক্টোবর) রাজধানীর একটি হোটেলে বিএনপি আয়োজিত এক গোলটেবিল বৈঠকে বক্তৃতায় তিনি এ মন্তব্য করেছেন।

সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের উদ্দেশ্য ছিলো ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা করা। কিন্তু তাদের সুপারিশে জাতি বিভক্ত হবে, অনৈক্য হবে এবং এখানে ঐকমত্য হবে না। এর ভিত্তিতে তারা কী অর্জন করতে চায় আমরা জানি না।’

প্রসঙ্গত, গতকাল (মঙ্গলবার, ২৯ অক্টোবর) জাতীয় ঐকমত্য কমিশন সরকারের কাছে তাদের সুপারিশ তুলে ধরেছে। সেখানে ‘জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫’ বাস্তবায়নে অবিলম্বে সরকারি আদেশ জারি করে একটি গণভোট আয়োজনের সুপারিশ করা হয়েছে।

এছাড়া আগামী জাতীয় সংসদ একইসঙ্গে সংবিধান সংস্কার পরিষদ হিসেবে কাজ করবে এবং এ পরিষদ ২৭০ দিনের মধ্যে সংবিধান সংস্কারের কাজ শেষ না করতে পারলে সংবিধানের বিষয়ে কমিশনের সুপারিশগুলো স্বয়ংক্রিয়ভাবে প্রতিস্থাপিত হবে বলে ওই সুপারিশে বলা হয়েছে।

কমিশনের সুপারিশের কথা উল্লেখ করে সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘কমিশনের সভাপতি হিসেবে প্রধান উপদেষ্টা নিজেও তাতে স্বাক্ষর করেছেন এবং সে কারণে এটি সরকার ও ঐকমত্য কমিশন উভয়েরই বলা যায়।’

আরও পড়ুন:

তিনি বলেন, ‘ঐকমত্য কমিশনের পক্ষ থেকে সুপারিশ দেয়া হয়েছে সরকারকে। তার মধ্য দিয়ে আমরা কিছু সত্য আবিষ্কার করতে পেরেছি। এতদিন মনে করতাম কমিশন রেফারির ভূমিকা পালন করছে। কাল যে সুপারিশ তারা করেছে তাতে প্রধান উপদেষ্টাও স্বাক্ষর করেছেন । কিন্তু এভাবে রেফারিকে কখনও গোল দিতে দেখিনি।’

তিনি আরও বলেন, ‘এতে কিছু দলের প্রস্তাব ও কমিশনের চিন্তা ভাবনা জাতির ওপর জবরদস্তি করে আরোপের চেষ্টা লক্ষ্য করেছি। ঐকমত্য কমিশনে ঐকমত্যের ভিত্তিতে জুলাই সনদ হয়েছে এবং তাতে সবাই স্বাক্ষরও করেছে।’

বিএনপির এ নেতা বলেন, ‘কিন্তু যে সুপারিশ করা হয়েছে তাতে দলগুলোর প্রস্তাব, নোট অব ডিসেন্ট কিছুই সেখানে নেই। তাহলে ১১ মাস ধরে কসরত কেন সেখানে করা হলো। যার ওপর গণভোট হবে জুলাই জাতীয় সনদ সেটা তো সুপারিশেই নেই।’

তিনি বলেন, ‘দু-একটি দল ও কমিশনের প্রস্তাব সুপারিশের খসড়া আদেশে তফসিল হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করে বলা হয়েছে ৪৮টি দফার ওপর গণভোট হতে হবে। এ আলোচনা তো হয় নি। কমিশনে কিছু বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে এবং বলা হয়েছে নোট অব ডিসেন্ট দলগুলো ইশতেহারে উল্লেখ করবে। তারপর জনগণের রায় অনুযায়ী সিদ্ধান্ত হবে।’

গণপ্রতিনিধিত্ব অধ্যাদেশে জোটবদ্ধ হলেও নিজ দলীয় প্রতীকে নির্বাচন করতে হবে এমন বিধান রাখার সমালোচনা করে সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আরপিওতেও উদ্দেশ্যমূলকভাবে একটি অনালোচিত প্রভিশন অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যা উপদেষ্টা পরিষদে পাস হয়ে এখন অর্ডিন্যান্স এর জন্য রাখা হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারকে আমরা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ভূমিকায় দেখতে চাই। তাদের নিরপেক্ষ ভূমিকায় দেখতে চাই। কিন্তু ঐকমত্য কমিশন ও সরকারের ভূমিকায় আমরা হতাশ।’

এসএস