রাজনীতিবিদরাই আগামীর বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দেবেন: ড. মুহাম্মদ ইউনূস

জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টা
জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টা | ছবি: প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং
0

রাজনীতিবিদরাই আগামীর বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দেবেন বলে মার্কিন বিনিয়োগকারীদের জানালেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ইউএস বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিলে সফরসঙ্গী নেতাদেরও পরিচয় করিয়ে দেন তিনি। এছাড়া টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ৪ ট্রিলিয়ন ডলারের ঘাটতি পূরণে বিশ্বনেতাদের আরও কার্যকর ভূমিকা নেয়ার আহ্বান জানান তিনি। এছাড়া বাংলাদেশিদের নিরাপদ অভিবাসন নিশ্চিতে আলোচনা করছেন ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনির সঙ্গেও। আগামী ডিসেম্বরে ঢাকা সফরের কথা রয়েছে তার। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে অংশ নেয়ার পাশাপাশি বুধবার সাইডলাইনে বেশ কয়েকটি দ্বিপাক্ষিক বৈঠকেও অংশ নেন ড. ইউনূস।

৮০তম জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ অধিবেশন উপলক্ষে নিউইয়র্ক সফরের তৃতীয় দিন সকালেই প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত টেকসই, অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং সহনশীল বৈশ্বিক অর্থনীতির জন্য দ্বিবার্ষিক শীর্ষ সম্মেলনে অংশ নেন। যেখানে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবায়নে অর্থায়ন সংক্রান্ত অঙ্গীকার নিয়ে কথা বলেন বিশ্বনেতারা।

প্রধান উপদেষ্টা তার বক্তব্যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বছরে ৪ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারের বিনিয়োগ ঘাটতি পূরণ করা চ্যালেঞ্জিং হলেও অত্যন্ত জরুরি বলে মন্তব্য করেন। তিনি এসময় বাংলাদেশের ১৩ লাখ রোহিঙ্গার কথা উল্লেখ করে জাতিসংঘের বাজেট কমানো ও উন্নয়ন সহায়তা হ্রাসের সমালোচনা করেন। যা উন্নয়নশীল দেশগুলোর এসডিজি অর্জনে বাধা উল্লেখ করে সমাধানে ৫টি পরামর্শ তুলে ধরেন।

এসময় জাতিসংঘ মহাসচিব বাসযোগ্য আবাসভূমি গড়তে জলবায়ু পরিবর্তন বন্ধে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে আহবান জানান।

পরে অধিবেশনের সাইড লাইনে হাই লেভেল বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টার সাথে অংশ নেন তার সফরসঙ্গী এনসিপির যুগ্ম সদস্য সচিব ডা. তাসনিম জারা। সেখানে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, স্বাস্থ‍্যখাত লাভজনক না হয়ে পুরোপুরি সেবামূলক খাত হওয়া উচিত।

এদিন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সাথে নিউইয়র্কে বৈঠক করেছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ। এসময় ড. ইউনূসকে পাকিস্তান সফরের আমন্ত্রণ জানান তিনি। আর ইতালির প্রধানমন্ত্রী নিজ থেকেই আগামী ডিসেম্বরে বাংলাদেশ সফরের আগ্রহ প্রকাশ করেন ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, ‘চারজন ওয়ার্ল্ড লিডারের সঙ্গে তিনি ওয়ান টু ওয়ান মিটিং করেছেন। প্রথমে ফিনল্যান্ডের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে ওনার মিটিং হয়েছে। তারপর ইতালিয়ান প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মিটিং হয়েছে। এরপর পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মিটিং হয়েছে।’

এদিন ইউএস-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিলের উদ‍্যোগে যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ ব্যবসায়ীদের সাথে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, জামায়াতের নায়েবে আমির ডা. আব্দুল্লাহ তাহের ও এনসিপি সদস্য সচিব আখতার হোসেনসহ সফরসঙ্গী ৬ জন রাজনীতিবিদকে সঙ্গে নিয়ে বৈঠক করেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। যেখানে বাংলাদেশে বিনিয়োগ ব‍্যবসায়ীদের আমন্ত্রণ জানানো হয়।

প্রেস সচিব বলেন, ‘বাংলাদেশে থেকে যে ৬ জন পলিটিক্যাল লিডার এসেছেন প্রফেসর ইউনূসের ইনভাইটেশনে, তারা সবাই উপস্থিত ছিলেন। এবং তাদের সঙ্গে প্রফেসর ইউনূস পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন সামনে যখন ফেব্রুয়ারিতে ডেমোক্রেটিক ট্রানজিশন হবে তখন পলিটিক্যাল পার্টিগুলোই বাংলাদেশকে গভর্ন করবে। তাদের সঙ্গে যেন ইউএস বিজনেস কমিউনিটির আরও জানাশোনা হয় সেজন্য পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন।’

প্রধান উপদেষ্টা সব বৈঠকেই অর্থনৈতিক সমস্যা সমাধান, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা, রোহিঙ্গা সমস‍্যার পাশাপাশি গুরুত্ব পেয়েছে আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রসঙ্গ।

এএইচ

আরও পড়ুন:
এই সম্পর্কিত অন্যান্য খবর
No Article Found!