পৌষের প্রথম সকালে বিজয়ের উষ্ণতা। পরাধীনতার শিকল ঘোচাতে যারা জীবন উৎসর্গ করেছিলেন, সেই বীর শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে জনতার ঢল সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে।
জাতীয় স্মৃতিসৌধ সর্বসাধারণের জন্য খুলে দেয়ার পর ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে গণজোয়ার। এসময় মুহুর্মুহু শ্লোগানে মুখর হতে থাকে সৌধ প্রাঙ্গণ।
হাতে লাল সবুজের পতাকা আর পরনে বিজয়ের বেশ। ছাত্রজনতা গণঅভ্যুত্থানের পর প্রথম বিজয় দিবসকে উদযাপন করতে দূর দুরান্ত থেকে এসেছে সর্বস্তরের মানুষ।
সকাল ৯ টার পর থেকেই বিএনপির নেতাকর্মীরা জড়ো হতে থাকেন সৌধ প্রাঙ্গণে। বিভিন্ন ইউনিটের পক্ষ থেকে শহীদ বেদিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন তারা। এর পরই আসেন মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে কেন্দ্রীয় ইউনিট।
এসময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেন, স্বৈরাচার পালিয়ে যাওয়ায় দেশের মানুষ স্বাধীন ভাবে কথা বলতে পারছেন। তার মতে, স্মৃতিসৌধের এই জনতার ঢলই বলে দেয়, শেখ হাসিনার সময়ে কতটা অসন্তোষ ছিলো মানুষের।
ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেন, ‘সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে ব্যাপক মানুষের উপস্থিতি প্রমাণ করে মানুষ কতটা মন যাতনা, মনঃকষ্টে ছিল। ভাব প্রকাশের যে প্রতিবন্ধকতা ছিল তা আর নেই।’
এরপর শ্রদ্ধা জানাতে আসেন জুলাই বিপ্লবীদের সংগঠন জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্যরা। তাদের সাফ কথা, আওয়ামী লীগ ও তার দোসরদের বিচার না করে এ দেশে কোনো নির্বাচন হবে না। এ সময় নাগরিক কমিটির পক্ষ থেকে আসেন নতুন রাজনৈতিক দলের ঘোষণা। যার লক্ষ্যই হবে ২৪ এর গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়ন।
নাসির উদ্দিন পাটোয়ারী বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ও ফ্যাসিবাদের যারা দোসর রয়েছে তাদের বিচারের আগে বাংলাদেশে কোনো নির্বাচন হবে না। এবং এ নির্বাচন হলে জনগণ মেনে নিবে না।’
এরপর একে একে অন্য দলগুলোও স্মৃতিসৌধে আসে শ্রদ্ধা জানাতে। তারা বলেন, গেলো ১৫ বছরের স্বৈরাচারী শাসনে মুক্তিযুদ্ধ ও জনগণের আকাঙ্ক্ষার বাস্তবায়ন হয়নি। বাংলাদেশের মানুষের ভোটের অধিকার ভূলুণ্ঠিত হয়েছে।
গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেন, ‘৫৩ বছরের মুক্তিযুদ্ধের আকাঙ্ক্ষা পূরণ হয় নাই। রাজনীতিবিদরা মুক্তিযুদ্ধের আকাঙ্ক্ষা পূরণে জনগণের সাথে প্রতারণা করেছে। তারা ব্যর্থ হয়েছে। যার ফলেই কিন্তু আজকে নতুন প্রজন্ম বা তরুণরা নেতৃত্বে এসেছে।’
কৃষক শ্রমিক জনতালীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বলেন, বাংলাদেশের মানুষ ভোট দেয়ার জন্য বাংলাদেশ বানিয়েছে। সেটা বারবার ভূলুণ্ঠিত হয়েছে, ব্যাহত হয়েছে। এবং ২৪ এর বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সফলতা এ দেশের মানুষের অসন্তুষ্টির বহিঃপ্রকাশ।’





