টিপস
জীবনযাপন
কাজের ফাঁকে ওজন নিয়ন্ত্রণের উপায়
দিনের সিংহভাগ সময় আমরা কর্মক্ষেত্রে ব্যয় করি। কাজের ধরণ অনুযায়ী বেশিরভাগ সময়ই কর্মক্ষেত্রে বসে থাকা হয়। কাজের চাপ, সময়ের অভাব, মানসিক চাপ আর অপরিকল্পিত খাদ্যগ্রহণ- সবমিলিয়ে স্বাস্থ্যকর ডায়েট মেনে চলা বেশ কঠিন হয়ে পড়ে। তাই প্রতিদিন এই দীর্ঘ সময়জুড়ে কী কী খাওয়া হচ্ছে সেদিকে বিশেষভাবে নজর দেওয়া প্রয়োজন। এজন্য প্রয়োজন পূর্বপরিকল্পনা। আগেভাগে পরিকল্পনা করলে ওজন তো নিয়ন্ত্রণে থাকবেই, সেই সাথে মুক্তি পাবেন নানা রোগবালাই থেকে।

১. নিয়মিত সকালের নাস্তা করুন

অনেকে সকালের নাস্তা বাদ দিয়ে একবারে দুপুরে খাবার খাওয়ার পরিকল্পনা করেন। নাস্তা বাদ দিলে দুপুরের খাবার খাওয়ার সময় হওয়ার আগেই ভীষণ ক্ষুধা লাগতে পারে। ফলে অস্বাস্থ্যকর স্ন্যাকস খাওয়ার প্রবণতা বেড়ে যায় এবং দুপুর বেলায় বেশি খাবার খেয়ে ফেলার সম্ভাবনা থাকে। তাই প্রতিদিন সকালে নাস্তা খাওয়ার অভ্যাস করুন। বাসা থেকে বের হওয়ার সময় যদি ক্ষুধা না লাগে তবে অফিসে গিয়ে নাস্তা করুন।

২. বাড়িতে তৈরি খাবার নিয়ে যান

বাড়িতে রান্না করা খাবার সাধারণত স্বাস্থ্যকর, কম ক্যালরি ও কম চর্বিযুক্ত হয়ে থাকে। তাছাড়া কেনা খাবারের চেয়ে খরচও কম হয়। তাই বাড়ি থেকে খাবার তৈরি করে নিয়ে যান।

 ৩. পানি পান করুন

খাবার আগে পূর্ণ দুই গ্লাস পানি পান করে নিন। বৈজ্ঞানিকভাবে এর অনেক সুফলতা পাবেন। এতে পেট কিছুটা ভরে আছে এমন মনে হবে এবং হঠাৎ করে প্রচণ্ড ক্ষুধা লাগবে না। এছাড়া সারাদিনে নিয়ম করে ৬ থেকে ৮ গ্লাস পানি পান করুন।

৪. হালকা নাস্তা হিসেবে ফল-সবজি খাওয়া

একটা বক্সে ফল, শসা, গাজর, টমেটো বা ফল কেটে সাথে নিয়ে যেতে পারেন। বিরতির সময়ে সেটা খেয়ে নেয়া যাবে। সাথে খাওয়ার মত কিছু থাকলে হয়তো সিঙ্গারা, সমুচা, পুরি, বা কেকের মতো অস্বাস্থ্যকর খাবারের প্রতি আকর্ষণ কমানো কিছুটা সহজ হবে। এছাড়া হালকা নাস্তা হিসেবে একটি ফল বা একটু সালাদ খেয়ে নিতে পারেন। এতে সারাদিনের ফলমূল ও শাকসবজির চাহিদা আংশিকভাবে পূর্ণ হবে। প্রতি পরিবেশনে ৮০ গ্রাম শাকসবজি বা ফলমূল খেতে হবে।

৫. শস্যদানা খান

ওজন কমাতে ময়দা ও সাদা আটার পরিবর্তে লাল আটার রুটি-পাউরুটি নিয়ে যাবেন। সাদা চালের বদলে লাল চালের ভাত নিন। লাল চাল বা লাল আটার স্বাদের সাথে অনেকেই অভ্যস্ত নয়। তাই প্রথমে ভালো না-ই লাগতে পারে। কিন্তু এগুলো খেলে পেট অনেকক্ষণ ভরা থাকে। ফাইবার ও অন্যান্য পুষ্টি উপাদান থাকায় এগুলো স্বাস্থ্যের জন্য অনেক বেশি উপকারী। তাই ধীরে ধীরে হলেও এগুলো খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।

 ৬. মেয়নেজ, আচার ও সস থেকে সতর্ক থাকুন

আচার বানানোর সময় প্রচুর তেল ব্যবহার করা হয়। আর মেয়নেজের ৮০ শতাংশই হলো ফ্যাট। এক টেবিল চামচ মেয়নেজে ক্যালরির পরিমাণ ১০০ এর উপরে। আচারে অতিরিক্ত তেল থাকে বলে সেক্ষেত্রেও ক্যালরির পরিমাণটা এমনই হয়। এছাড়া বাজারের সস সুস্বাদু করতে প্রচুর চিনি ও বিভিন্ন ফ্লেভারের তেল ব্যবহার করা হয়। তাই এগুলো যথাসম্ভব এড়িয়ে চলুন। প্রয়োজনে টমেটোর সাথে কম পরিমাণে চিনি ও লবণ দিয়ে বিভিন্ন মসলা মিশিয়ে বাড়িতেই স্বাস্থ্যকর সস বানিয়ে নিন। মেয়নেজ কিনতে হলে লো-ফ্যাট, লো ক্যালরি দেখে কিনুন। বিকল্প হিসেবে টক দই পানি ঝরিয়ে ব্যবহার করা সবচেয়ে ভালো।

৭. চিপসের বদলে পপকর্ন খান

ইউটিউব দেখে বাড়িতে সহজেই কম খরচে পপকর্ন বানাতে পারেন। এক প্যাকেট চিপসের ক্যালরির পরিমাণ পাঁচ কাপ পপকর্নের ক্যালরির সমান। তাই চিপসের পরিবর্তে পপকর্ন বেছে নিলে অস্বাস্থ্যকর অভ্যাস থেকে দূরে থাকা যাবে। ওজন কমানোও সহজ হবে।

৮. চর্বিছাড়া মাংস কিনুন

প্রক্রিয়াজাত মাংস যেমন, সসেজ, নাগেট অত্যন্ত ফ্যাট ও ক্যালরিবহুল। তাই এগুলোর বদলে মুরগি, মাছ ও ডিম খান। গরু ও খাসির মাংসতেও চর্বি বেশি থাকে। তাই এগুলো পরিমিত পরিমাণে খাবেন আর চর্বি ফেলে দিয়ে রান্না করবেন।

৯. স্যুপ খান

বিভিন্ন ধরনের সবজি মিশিয়ে স্যুপ বানাতে পারেন। এগুলো পেট ভরাতে সাহায্য করে এবং সাথে সাথে শরীরকে প্রয়োজনীয় পুষ্টি সরবরাহ করে। স্যুপ সুস্বাদু, কম ক্যালরি ও কম ফ্যাটযুক্ত হয় বলে ওজন কমাতে অনেকেই স্যুপকে প্রতিদিনের খাবারের মধ্যে রাখেন। শাকসবজির সাথে মাঝে মাঝে মুরগির মাংস, ডিম, চিংড়ি কিংবা ডাল মিশিয়ে স্যুপ রান্না করতে পারেন। এতে স্বাদে ভিন্নতা আসবে ও প্রোটিনের চাহিদা পূরণ হবে।

কেফা