গর্ভধারণের জন্য যা খাবেন, যা খাবেন না

0

প্রজনন ক্ষমতা নিয়ে কথা হলে সর্বপ্রথম যে বিষয়টি আসে তা হলো শারিরীক সক্ষমতা ও বয়স। তবে গর্ভধারণে খাবারও কম গুরুত্বপূর্ণ নয়। গর্ভধারণের সক্ষমতা বাড়াতে এবং স্বাস্থ্যসম্মত গর্ভধারণের জন্য নানা ধরণের খাবারের কথা বলেন চিকিৎসকরা।

তাদের মতে, গর্ভধারণের সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে থেকেই খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন করা উচিত। সঠিক খাদ্যাভাস আপনাকে গর্ভধারণে নানাভাবে সাহায্য করে। এছাড়া সঠিক ও সুষম খাদ্যাভ্যাস আপনার গর্ভস্থ শিশুর জন্মকালীন বিভিন্ন জটিলতাও প্রতিরোধ করতে পারে।

ফলিক এসিড

গর্ভাবস্থায় নারীদের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি পুষ্টি উপাদান হলো ফলিক এসিড। হবু মায়েদের গর্ভধারণের প্রথম ৩ মাস অবশ্যই ফলিক এসিডযুক্ত খাবার বা ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে সাপ্লিমেন্ট হিসেবে খেতে হবে। চিকিৎসকরা বলেন, গর্ভাবস্থায় প্রথম ৪ থেকে ৮ সপ্তাহে ভ্রূণের প্রাথমিক গঠনের সময় ফলিক এসিড সবচেয়ে বেশি জরুরি।

|undefined

কারণ বেশিরভাগ জন্মগত ত্রুটি প্রথম কয়েক সপ্তাহেই তৈরি হয়। তাই মায়ের শরীরে যদি আগে থেকে ফলিক অ্যাসিড যথেষ্ট পরিমাণে না থাকে তাহলে ভ্রুন গঠনে সমস্যা দেখা দিতে পারে। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, পর্যাপ্ত পরিমাণে ফলিক অ্যাসিড গ্রহণ নারীর সন্তান ধারণক্ষমতা বৃদ্ধি করতে পারে এবং বন্ধ্যাত্ব কমাতে পারে। তাই সন্তান ধারণের চেষ্টা করলে অন্তত ২ মাস আগে থেকে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে ফলিক অ্যাসিড খেতে হবে।

|undefined

ফলিক এসিড আছে এমন খাবারগুলো হলো- বিভিন্ন ধরনের ডাল, ছোলা, মুগ, মটর। গম ও গমের আটা বা ময়দা, সবুজ শাক সবজি, বাদাম-চিনা বাদাম, আখরোট, পেস্তা বাদাম, কাঠ বাদাম, সূর্যমুখী বীজ। প্রাণিজ উৎস থেকে প্রাপ্ত খাবারগুলো হলো- গরুর কলিজা, দুধ, গরু, খাসি, মুরগির মাংস, দই, ডিম, ইস্ট। ফলের মধ্যে আছে- কমলালেবু, মৌসুমি বিভিন্ন ফল, লেবু, আঙুর, পেঁপে, কলা, জাম্বুরা, পেয়ারা।

আয়োডিন

|undefined

গর্ভধারণের পরিকল্পনার আগে থাইরয়েড হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখা জরুরি। থাইরয়েডের সমস্যা আপনার ঋতুচক্রকে ব্যাহত করতে পারে। মাসিকের সময় বেশি রক্তক্ষরণ এবং এর ফলে ডিম্বাণু নিঃসরণ, ভ্রুনের কিছু সমস্যা দেখা দিতে পারে। আয়োডিন থাইরয়েড হরমোনের ভারসাম্য নিয়ন্ত্রণ করে। আয়োডিনের ঘাটতি আপনার গর্ভধারণে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে।

আয়রন

|undefined

আয়রনের ঘাটতি হলে শরীরে রক্তশূন্যতা দেখা দিতে পারে। যে মেয়েদের শরীরে আয়রনের পরিমাণ সঠিক মাত্রায় থাকে, তাদের গর্ভবতী হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। গর্ভাবস্থায় মায়ের শরীরে অক্সিজেন কমে গেলে শিশুর শরীরেও অক্সিজেন কম পৌঁছাবে। ফলে শিশুর বৃদ্ধি ও সময়ের আগেই বাচ্চা জন্ম নেওয়ার সমস্যা তৈরি হতে পারে। তাই গর্ভাবস্থায় এবং গর্ভধারণের আগে আয়রন জাতীয় খাবার অবশ্যই খাদ্যতালিকায় রাখতে হবে। 

মাছ

|undefined

আপনি যদি শিগগিরই মা হতে চান, তাহলে খাদ্য তালিকায় মাছ রাখতেই হবে। বিশেষ করে ওমেগা-থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ মাছ প্রতিদিন খাওয়া উচিত। বিভিন্ন ধরনের সামুদ্রিক মাছে প্রচুর পরিমাণে ওমেগা-থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে। ওমেগা-থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড নারীদের ডিম্বানুর মান উন্নত করে। মাছ নেহাতই খেতে না চাইলে ডাক্তারের পরামর্শে ফিস ওয়েল সাপ্লিমেন্ট খেতে পারেন।

|undefined

বিশেষজ্ঞদের মতে, এখন পর্যন্ত নির্দিষ্ট ভাবে এমন কোনও খাবারের সন্ধান পাওয়া যায়নি, যা খেলেই গর্ভধারণ সম্ভব। তবে নিয়মিত আপনি কী খাচ্ছেন, তার উপর গর্ভধারণের সম্ভাবনা অনেকাংশে নির্ভর করে। কারণ, সঠিক ও পুষ্টিকর খাবার আমাদের প্রজনন ক্ষমতাকে ভালো রাখে। যেমন গর্ভধারণ করার জন্য একটা শরীরের নির্দিষ্ট স্বাস্থ্যকর ওজন ধরে রাখা জরুরি।

|undefined

অতিরিক্ত রোগা বা অতিরিক্ত মোটাদের পক্ষে অনেক সময় গর্ভধারণে সমস্যা দেখা দেয়। অতিরিক্ত জাংক ফুড গর্ভধারণ ক্ষমতার উপর প্রভাব ফেলে। প্রকৃতি তার ঝুলিতে আমাদের জন্য পুষ্টিকর খাবার সাজিয়ে রেখেছে। তাই খাবারের জন্য যতটা সম্ভব প্রকৃতির উপর নির্ভর করুন।

তবে প্রতিটি মানুষের শারীরিক ধরণ আলাদা। তাই গর্ভধারণের জন্য খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আনার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলে নেয়া উচিত।

এই সম্পর্কিত অন্যান্য খবর
No Article Found!