জীবনযাপন
0

অগ্নিনিরাপত্তায় যেসব বিষয়ে সতর্ক থাকা উচিত

দেশে বেশিরভাগ ভবন ও বাসাবাড়িতে অগ্নিনিরাপত্তার বিষয়টি উপেক্ষিত। যে কারণে প্রায়শই এ ধরণের দুর্ঘটনা ও ক্ষয়ক্ষতির ঘটনা ঘটতে দেখা যায়। অগ্নিনিরাপত্তা বিষয়ক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যেকোনো ভবনে অগ্নি দুর্ঘটনা ঠেকানো ও ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে আনতে হলে ভবন নির্মাণ পর্যায় থেকেই নিতে হবে যথাযথ প্রস্তুতি।

দেশে প্রতিবছর অসংখ্য মানুষ মারা যায় অগ্নিকাণ্ডে। এসব মৃত্যুর জন্য যতটা না আগুন দায়ী, তার চেয়ে বেশি দায়ী অনিয়ম ও অসচেতনতা। ভবন নির্মাণে নিয়ম না মানা, অগ্নিকাণ্ডের জন্য পর্যাপ্ত ব্যবস্থা এবং পূর্বপ্রস্তুতি না থাকায় প্রাণহানিসহ বেড়ে যায় ক্ষয়ক্ষতি।

অগ্নিনিরাপত্তায় প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থাটাই সবচেয়ে জরুরি। ভবন নির্মাণের সময় মূল নকশার সঙ্গে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা যাতে সংযুক্ত থাকে, সিভিল ইঞ্জিনিয়ারকে সে বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। আগুন লাগলে সেটি ছড়িয়ে পড়া অনেকাংশেই ঠেকানো সম্ভব, যদি আগে থেকেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া যায়।

এ জন্য কিছু সাধারণ প্রস্তুতির পাশাপাশি যেসব বিষয়ে সতর্ক থাকা উচিত-


১. আগুন প্রতিরোধী উপাদান ব্যবহার

একটি ভবন নির্মাণের সময় কী ধরণের উপাদান ব্যবহার করা হচ্ছে তা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অগ্নিকাণ্ডের দুর্ঘটনা ঠেকাতে এ ধরণের উপাদান গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এক্ষেত্রে দরজা ও দেয়াল আগুন প্রতিরোধী হলে ভাল হয়। এছাড়া ঘরের সিলিং, রান্নাঘরের আসবাবপত্র আগুন প্রতিরোধী পদার্থে নির্মাণ এবং আগুন প্রতিরোধী তার ব্যবহার করলে আগুন লাগলেও সেটি ছড়িয়ে পড়ার ভয় থাকে না। সিনথেটিক বা হাইড্রোকার্বন উপাদান থাকে এমন কোন পদার্থ দিয়ে ভবনের ভেতরের সাজসজ্জা না করাই ভাল। বিশেষজ্ঞরা বলেন, ‘আগুনের কাছে পোলাও, কোরমা, বিরিয়ানির মতো খাবার থাকলে এসব উপাদান পুড়ে বিষাক্ত ধোঁয়া তৈরি হয়। এসব ধোঁয়ার কারণেই অনেক সময় মারা যায় মানুষ।’

২. ফায়ার এক্সটিংগুইশার রাখা ও ব্যবহার

প্রতিটি ভবনেই অগ্নিনির্বাপণ সিলিন্ডার থাকাটা নিশ্চিত করতে হবে। সেই সঙ্গে এসবের ব্যবহার জানতে হবে ভবনের বাসিন্দাদের। কারণ কোনো একটি ভবনে আগুন লাগার পর সেটি ছড়িয়ে পড়তে কিছুটা হলেও সময় লাগে। এ সময়ের মধ্যে যদি অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা দিয়ে সেটি নিভিয়ে ফেলা যায়, তাহলে বড় ধরণের দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব।

৩. জরুরী বহির্গমন পথ নিশ্চিত করা

কোনো ভবনে আগুন লাগলে সেটি থেকে বের হয়ে আসার জন্য বাইরে একটা জরুরি বহির্গমন পথ থাকতে হবে। এটা হতে হবে এমন একটি পথ, যেখানে আগুন ও ধোয়া প্রবেশ করতে পারবে না। কারণ কোন ভবনে আগুন লাগলে ওই ভবনের লিফট ব্যবহার না করার পরামর্শ দেয়া হয়।

৪. অ্যালার্ম সিস্টেম বসানো

প্রতিরোধ ব্যবস্থা নেয়ার পরও যদি কোনো ভবনে আগুন লাগে তাহলে সেক্ষেত্রে ক্ষয়ক্ষতিয়ে কমিয়ে আনার একটা উপায় হচ্ছে ফায়ার ও স্মোক অ্যালার্ম সিস্টেম বসানো। সেটি ঠিক মতো কাজ করে কিনা তা নিয়মিত পরীক্ষা করতে হবে। বিশেষজ্ঞরা বলেন, ‘অ্যালার্ম সিস্টেম ঠিকভাবে কাজ করলে কোনো এক জায়গায় আগুন লাগলে পুরো ভবনের বাসিন্দারাই আগুন সম্পর্কে জানতে পারে। ফলে তারা দ্রুত ভবন খালি করে নিচে নেমে আসতে পারে। ফলে প্রাণহানি ব্যাপকভাবে কমানো সম্ভব।’

৫. নিয়মিত চেকআপ

গ্যাস ও বিদ্যুতের সংযোগ ঠিকঠাক মত আছে কিনা সেটি নিয়মিত চেক করতে হবে। সংযোগে কোনো ত্রুটি দেখা দিলে তা দ্রুত মেরামতের ব্যবস্থা করতে হবে। আগুন লাগার পর যত দ্রুত সম্ভব মাথা ঠাণ্ডা রেখে বিদ্যুতের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে হবে। কারণ বিদ্যুতের সংযোগ থাকলে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা বেশি।

এই সম্পর্কিত অন্যান্য খবর
No Article Found!