মার্কিন নির্বাচন ঘিরে দুই প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর বাগ্যুদ্ধ এখন তুঙ্গে। সম্প্রতি পুয়ের্তো রিকোর বাসিন্দাদের ভাসমান বর্জ্য বলে আলোচনার জন্ম দেন রিপাবলিকান সমর্থক কৌতুকশিল্পী টনি হিঞ্চক্লিফ। এই মন্তব্য থেকেই ইস্যুর সূত্রপাত। জবাবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, পুয়ের্তো রিকোর বাসিন্দারা নম্র-ভদ্র ও সম্মানীয় মানুষ। আবর্জনা হলো ট্রাম্পের সমর্থকেরা।বাইডেনের এমন মন্তব্যে ঝড় উঠেছে দুই শিবিরে। তীব্র সমালোচনার মুখে সাফাই গেয়েছেন তিনি। এখানেই শেষ নয় বাইডেনের হয়ে ব্যাখ্যা দিয়েছে হোয়াইট হাউজও।
হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি কারিন জ্যঁ-পিয়েরে বলেন, ‘একটি বিষয় এখানে স্পষ্ট করা প্রয়োজন। ঢালাওভাবে ট্রাম্প সমর্থকদের আবর্জনা বলেননি মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তিনি এই শব্দ দিয়ে কি বুঝতে চেয়েছেন তা এরইমধ্যে পরিষ্কার করেছেন। বাইডেন কেবল পুয়ের্তো রিকোদের আবর্জনা বলার প্রতিক্রিয়ায় এ কথা বলেছেন। তিনি ট্রাম্প সমর্থকদের আবর্জনা বলেননি।’
তবে এই ইস্যুকে পুঁজি করে ময়লার গাড়িকে নির্বাচনী প্রচারণায় কাজে লাগিয়েছেন রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প। ব্যাটলগ্রাউন্ড উইসকনসিনে এসে তিনি নিজেই ভেস্ট পরে ময়লার ট্রাক চালিয়েছেন। এসময় ট্রাম্প বলেন, ‘২৫ কোটি মানুষ আবর্জনা হতে পারে না।
রিপাবলিকান প্রেসিডেন্টপ্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প আরো বলেন,‘কামালা এবং জো বাইডেন আমাদের সবাইকে আবর্জনা বলে ডেকেছে। কিন্তু আমার কাছে আপনারা যুক্তরাষ্ট্রের হৃদয় ও আত্মা। এই দেশ আপনাদের হাতে তৈরি। আমাদের পুরো দেশকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখছেন আপনারা। কঠোর পরিশ্রম করেও তারা তাদের যথাযোগ্য সম্মান পায় না। আমরা রিপাবলিকানরা তাদের ভালোবাসি।’
বাইডেনের এমন মন্তব্যকে অপ্রাসঙ্গিক বলছেন রিপাবলিকান সমর্থকেরা। তার অযাচিত এ ধরনের মন্তব্য করা ঠিক হয়নি। এক রিপাবলিকান সমর্থকেরা বলেন,‘বাইডেন আবর্জনা বলাতে আমি বিরক্ত হয়েছি। তবে এটি এক কান দিয়ে ঢুকিয়ে অন্য কান দিয়ে বের করে দিয়েছি।’ এদিকে আরেক রিপাবলিকান সমর্থকে বলেন, ‘বাইডেন যা বলেছেন তা পুরোটাই অপ্রাসঙ্গিক। কারণ তিনি নির্বাচনে অংশ নেননি।’
এদিকে, বুধবার নর্থ ক্যারোলাইনার পর উইসকনসিনে সমাবেশ করেন ডেমোক্র্যাট প্রার্থী কামালা হ্যারিস। এ সময় সমর্থকদের উদ্দেশ্যে কামালা বলেন, ‘তার রাজনৈতিক জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সময় এটি।
এ সময় ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্ট প্রার্থী কামালা হ্যারিস বলেন,‘ ট্রাম্প ও আমার মধ্যে বিরাট পার্থক্য আছে। সবচেয়ে বড় পার্থক্য হলো- ট্রাম্প নির্বাচিত হলে প্রথমদিনই শত্রুদের তালিকা তৈরি করে অফিসে আসবেন। আর আমি নির্বাচিত হলে যুক্তরাষ্ট্রের জনগণের জন্য করণীয় কাজের তালিকা নিয়ে আসবো।
মার্কিন নির্বাচনের বাকি আর মাত্র ৬ দিন। শেষ মুহূর্তে সমর্থন বাড়াতে প্রার্থীরা ব্যস্ত সময় পার করছেন স্যুইং স্টেটগুলোতে। দুই প্রার্থীর মধ্যে চলছে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই। রয়টার্স ও ইপসোসের জরিপ অনুসারে, যুক্তরাষ্ট্রের জন্য ডেমোক্র্যাটদের হুমকি হিসেবে দেখছে প্রায় ৩৮ শতাংশ মানুষ। অন্যদিকে রিপাবলিকানদের হুমকি হিসেবে দেখে ৪১ শতাংশ মানুষ।