মধ্যপ্রাচ্য
বিদেশে এখন
0

‘গাজা থেকে অন্তত ১০ লাখ ফিলিস্তিনিকে জর্ডান-মিশরে আশ্রয় দেয়া উচিত’

গাজা থেকে অন্তত ১০ লাখ ফিলিস্তিনিকে জর্ডান আর মিসরে আশ্রয় দেয়া উচিত বলে মন্তব্য করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। যুদ্ধবিধ্বস্ত উপত্যকা পুনর্গঠনে ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের আশ্রয় দেয়ার বিষয়ে আরব রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে আলোচনাও করবেন তিনি। এদিকে, যুদ্ধবিরতি বলবৎ থাকা নিয়ে রয়েছে নানামুখী ধোঁয়াশা। উত্তরে সাধারণ ফিলিস্তিনিদের প্রবেশ করতে দিচ্ছে না ইসরাইলি প্রতিরক্ষা বাহিনী। এমন অবস্থায় বাইডেন প্রশাসনের স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করে ইসরাইলকে ২ হাজার পাউন্ডের বোমা সরবরাহে গ্রিন সিগনাল দিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।

গাজার মাত্র ৩শ ৬০ বর্গ কিলোমিটার এলাকায় ২১ লাখ মানুষের বসবাস। ইসরাইলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর হামলায় কখনো উত্তর থেকে দক্ষিণ আবার কখনো দক্ষিণ থেকে উত্তর, গেল দেড় বছর এভাবেই দিন কেটেছে গাজাবাসীর। যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলেও উপত্যকাটি হয়ে পড়েছে বসবাসের অনুপযোগী।

এরমধ্যেই, এবার গাজা পুনর্গঠনের স্বার্থে লাখ লাখ ফিলিস্তিনিকে প্রতিবেশী দেশ জর্ডান আর মিশরের আশ্রয় দেয়া উচিত বলে মন্তব্য করেছেন নতুন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এরইমধ্যে জর্ডান ২৩ লাখ ফিলিস্তিনিকে আশ্রয় দিয়ে রেখেছে। দেশটির প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ফোনালাপ হলেও এই বিষয়ে এখন পর্যন্ত আনুষ্ঠানিক কোন প্রস্তাব দেননি ট্রাম্প।

তবে যুক্তরাষ্ট্রের এই যুগান্তকারী প্রস্তাবের বিষয়ে ট্রাম্প বলেন, দুই দেশের সরকার প্রধানের সঙ্গেই আলোচনা করা হবে। বলেন, ফিলিস্তিনিরা যেন ঘর বানিয়ে শান্তিতে থাকতে পারেন, সেজন্য আরব বিশ্বের অন্যান্য দেশের সঙ্গেও আলোচনা করবেন তিনি।

গাজা পরিষ্কারের এই প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়েছেন ইসরাইলের সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী বেন গাভির। জাতিসংঘ বলছে, এখন পর্যন্ত গাজার ৬০ শতাংশ স্থাপনা ধ্বংস হয়ে গেছে ইসরাইলি হামলায়। ৯০ শতাংশ গাজাবাসী বাস্তুচ্যুত হয়ে গেছে। এখন পর্যন্ত সারাবিশ্বে শরণার্থী হিসেবে আছে ৫৯ লাখ ফিলিস্তিনি।

এদিকে, উপত্যকাটির উত্তরে কোনোভাবেই গাজার সাধারণ মানুষকে প্রবেশ করতে দিচ্ছে না ইসরাইলি প্রতিরক্ষা বাহিনী। যুদ্ধবরিরতির পর রোববার তাদের ওপর গুলি চালানোরও অভিযোগ উঠেছে। অন্যদিকে পশ্চিমতীরে অব্যাহত রয়েছে ইসরাইলি আগ্রাসন। শনিবারও নাবলুস, হেব্রন আর জেনিনে হামলার খবর পাওয়া গেছে।

এদিকে, যুদ্ধবিরতির শর্ত লঙ্ঘন নিয়ে পাল্টাপাল্টি দোষারোপে মেতেছে হামাস-ইসরাইল। হামাস ইসরাইলি এক নারী বন্দিকে মুক্তি দিতে দেরি করায় প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের নিজের জায়গায় ফিরতে দেয়া হবে না। অন্যদিকে, হামাস বলছে, যুদ্ধবিরতি কার্যকরে দেরি করছে তেল আবিব।

একইসময়, ইসরাইলে ২ হাজার পাউন্ডের বোমা সরবরাহের ওপর স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করে নিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। ডোনাল্ড ট্রাম্প জানান, বোমাগুলো ভাণ্ডারে ছিল, ইসরাইল এই বোমার জন্য অর্থ পরিশোধ করেছিলো, এখন এই বোমা ছাড় করে দেয়া হয়েছে। পুরো গাজা উপত্যকার পাশাপাশি রাফায় ভয়াবহ হামলা আর সাধারণ মানুষ হতাহতের আশঙ্কায় এই বোমার ওপর স্থগিতাদেশ দিয়েছিলেন বাইডেন প্রশাসন। এমন অবস্থায় গাজায় যুদ্ধবিরতির স্থায়িত্ব আর উপত্যকা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান, সবমিলিয়ে এক ধরনের ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

এএম