মধ্যপ্রাচ্য
বিদেশে এখন
0

এবার যুক্তরাষ্ট্রকে নিতে হবে ইরানের সহযোগিতা!

International Desk

গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক জলপথে হুতি বিদ্রোহীদের কাছ থেকে জাহাজ নিরাপদে রাখতে ইরানের সাহায্য নিতে হবে যুক্তরাষ্ট্রকে।

লেবাননের বন্দরে ইসরাইলকে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা করতে বলা কিংবা যুক্তরাষ্ট্রের এই জলপথে একটি যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন, কোনটিই ফলপ্রসূ সমাধান ডেকে আনবে না বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা। তবে জাহাজ চলাচলের গুরুত্বপূর্ণ এই জলপথের নিরাপত্তা রক্ষায় এখনই কার্যকর পদক্ষেপ নেয়ার পরামর্শ তাদের।

রোববার ইসরাইলের ব্যবসায়ীর দাবি করে লোহিত সাগরে ১৮৯ মিটার লম্বা একটি কার্গো জাহাজ গ্যালাক্সি লিডার জব্দ করে ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীরা। ২৫ ক্রুসহ এই জাহাজ নিয়ে রাখা হয় ইয়েমেনের হোদেইদাহ বন্দরে। অথচ নিরপেক্ষ দুই দেশ তুর্কিয়ে থেকে ভারত যাচ্ছিলো জাহাজটি। আন্তর্জাতিক সমুদ্রসীমায় অপ্রীতিকর এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ যুক্তরাষ্ট্র। জাহাজটি বাহামাসের পতাকাবাহী ছিলো, জাপানের কোম্পানি এটি পরিচালনা করছিলো। এই ধরনের ঘটনা প্রতিহত করতে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।

লোহিত সাগরের অনেকাংশই ২শ' কিলোমিটার প্রশস্থ। কিন্তু দক্ষিণের অংশ 'বাব আল মানদাব' প্যাসেজ ২০ কিলোমিটারের কম প্রশস্থ। এই পথ ইয়েমেনের উপকূলের মাঝে অবস্থিত। প্রতি বছর অন্তত ১৭ হাজার জাহাজ চলাচল করে এই জলপথ দিয়ে। দৈনিক অন্তত ৫০ টি। এরমধ্যে বেশিরভাগ জাহাজই গ্যালাক্সি লিডারের মতো বৈধতা আছে। যদিও এই সরু জলপথে জাহাজে ইসরাইলের সংযোগ থাকতে পারে, এজন্য হুতিদের লক্ষ্য এই জাহাজগুলো।

তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, জাহাজ সমুদ্র পথে চলাচলের ক্ষেত্রে মালিকানার চেয়ে রেজিস্ট্রেশন আর অপারেটিং কোম্পানির পরিচয় বেশি জরুরি। কারণ এই প্রণালী দিয়ে মাসে ১৫শ' জাহাজ চলাচল করে।

কিভাবে লোহিত সাগরে হুতিদের এই কার্যক্রম বন্ধ করা যায়, সেটি নিয়ে প্রশ্ন ঘুরছে নানা মহলে। এই জলপথে যুদ্ধজাহাজ পাঠিয়ে, হুতিদের হামলা সক্ষমতা কমিয়ে দেয়ার মতো পরিকল্পনার চিন্তা করছে অনেক দেশ।

কিন্তু প্রশ্ন, হুতিদের লোহিত সাগরে সহিংসতা চালাতে অস্ত্র সহায়তা দিচ্ছে কারা? কারণ সৌদি আরব আর মিশরের কড়া নজরদারি আছে লোহিত সাগরে। কিন্তু তাদের সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়াতে চায় না এই দুই দেশ। হুতিদের জন্য সাগরে জাহাজ পাঠাবে না ইসরাইলও। এই সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে লাগাম টানতে পারে মার্কিন নৌবাহিনী। কারণ গেলো ৭ অক্টোবরের পর মধ্যপ্রাচ্যে সিএসজি টুয়েল্ভ আর সিএসজি টু যুদ্ধযান মোতায়েন করেছে যুক্তরাষ্ট্র।

এরমধ্যে ভূমধ্যসাগরে আছে সিএসজি টুয়েল্ভ বা ইউএসএস জেরাল্ড আর ফোর্ড আধুনিক পরমাণু শক্তিধর বিমানবাহী রণতরী। গালফ অব ওমানে আছে সিএসজি টু বা ইউএসএস ডুইট ডি আইসেনহোয়ার। প্রতিটি যুদ্ধজাহাজের গাইডেড মিসাইল ক্রুজার, ট্যাঙ্কার আর অস্থায়ী ঘাঁটি আছে। সিএসজি টুয়েল্ভ ইসরাইল, ফিলিস্তিন, লেবানন, সিরিয়া এবং ইরাকসহ যেকোন দিক থেকে আসা হুমকির ওপর নজরদারি করে। সিএসজি টু ইরানের কার্যক্রমের ওপর নজরদারি করে। এই যুদ্ধজাহাজ হরমুজ প্রণালীতে অবস্থিত।

এক্ষেত্রে গ্যালাক্সি লিডারের জব্দের ঘটনায় ইরানের হাত না থাকলে জলপথে আরও জাহাজ আটকের ঘটনা ইরানের সহযোগিতায় প্রতিহত করতে পারে যুক্তরাষ্ট্র। তবে এক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একযোগে কাজ করতে হবে তেহরানের। সিদ্ধান্তে আসতে হবে দ্রুত, কারণ হুতিরা আরও জাহাজ আটক করলে অনেক দেশই সংঘাতে জড়িয়ে পড়তে পারে, যেখান থেকে পেছনে ফেরা সম্ভব হবে না বলে মনে করেন কূটনীতিকরা।