ইউরোপ
বিদেশে এখন

ব্রিটেনে অবসান হচ্ছে কনজারভেটিভ পার্টির আধিপত্য

নির্বাচনী প্রচারণা, রাজনৈতিক বিশ্লেষক আর আন্তর্জাতিক সব গণমাধ্যমের পূর্বাভাস বলছে, ১৪ বছর পর ব্রিটেনে অবসান হচ্ছে কনজারভেটিভ পার্টির আধিপত্য। এবার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার দৌঁড়ে এগিয়ে আছেন লেবার পার্টির কেইর স্ট্রেমার। মূলত নানা অব্যবস্থাপনার কারণে ২০২২ সালে প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন হঠাৎ দায়িত্ব থেকে সরে যাওয়ার পর থেকে দেশটিতে টালমাটাল হয়ে আছে কনজারভেটিভ পার্টি। বিশ্লেষকরা বলছেন, দেশের অর্থনীতি বছরের শেষ নাগাদও ভালো অবস্থানে নিয়ে যেতে না পারার আশঙ্কায় আগাম নির্বাচনের ডাক দিয়েছেন ঋষি সুনাক।

ব্রিটেনে সবশেষ নির্বাচন হয়েছিল ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে। তার মানে ঋষি সুনাকের হাতে নতুন নির্বাচনের ঘোষণা দেয়ার সময় ছিল ডিসেম্বর পর্যন্ত। কিন্তু গেলো ২২ মে হঠাৎ করেই আগাম নির্বাচনের ঘোষণা দিয়ে দেশবাসীকে চমকে দেন তিনি।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, অভ্যন্তরীণভাবে কি চলছে তা এখনও রহস্যময়। তবে তারা বলছেন, অর্থনৈতিক যে পূর্বাভাস কনজারভেটিভ পার্টি দিয়েছিল, তার বাস্তবায়ন বছরের শেষ নাগাদ হবে কি না, এই আশঙ্কা থেকেই আগাম নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছে ঋষি সুনাকের দলটি।

লেবার পার্টি থেকে প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা কেইর স্ট্রেমার জানান, লাখ লাখ ভোটারদের জন্য নতুন প্রত্যাশা আর সুযোগ নিয়ে আসবেন তিনি। স্ট্রেমার জানান, বৃহস্পতিবারের নির্বাচনে জিতে গেলে সরকার গঠনের জন্য প্রস্তুত আছেন তিনি। নির্বাচনী প্রচারণার প্রতিফলন বলছে, নিজের গদিই হারাতে পারেন ঋষি সুনাক। সেই সঙ্গে ১৬ কেবিনেট মন্ত্রী হারাতে পারেন অবস্থান। ১৮৩২ সালের পর স্ট্রেমার সবচেয়ে বেশি সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে পারেন। বলা হচ্ছে, ব্রিটেনের রাজনীতিতে এই নির্বাচন হতে যাচ্ছে বড় ধাক্কা।

তবে প্রতিদ্বন্দ্বী কেইর স্ট্রেমার স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন কোনোভাবেই আর ইউরোপীয় ইউনিয়নে যুক্ত হবে না ব্রিটেন। লেবার পার্টি কখনোই ইউরোপের সঙ্গে সম্পর্ক এখনকার সময়ের তুলনায় জোরদার করতে যাবে না যতোদিন তিনি ক্ষমতায় থাকবেন। এমনকি যতোদিন তিনি বেঁচে থাকবেন, ততোদিন ইউরোপের কোনো ব্লকেই যুক্ত হবে না ব্রিটেন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে অবসান ঘটতে পারে ব্রিটেনের রাজনীতিতে কনজারভেটিভ পার্টির ১৪ বছরের আধিপত্য। অস্তিত্ব সংকটেই পড়ে যেতে পারে কনজারভেটিভ পার্টি।

২০১০ সাল থেকে এখন পর্যন্ত ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী আছেন কনজারভেটিভ পার্টির সদস্যরা। ২০১৯ সালের সবশেষ নির্বাচনে এই দলটির ক্ষমতা দুর্বল হয়ে যায়। সে সময়ের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন অভিযুক্ত হন বিভিন্ন অব্যবস্থাপনার জন্য। ২০২২ সালে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়ান তিনি। তার স্থলাভিষিক্ত লিজ ট্রাস দায়িত্ব থেকে সরে যান মাত্র ৪৪ দিনের মধ্যে। এরপর থেকেই তোপের মুখে পড়ে কনজারভেটিভ পার্টি। সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গের পরিসংখ্যান বলছে, এই নির্বাচনে ৪১ শতাংশ ভোট পাবে লেবার পার্টি। নতুন প্রধানমন্ত্রীর কাছে অধিকাংশ ভোটারের প্রত্যাশা, সমাধান হবে অভিবাসন সংকটের।

এমএসআরএস

এই সম্পর্কিত অন্যান্য খবর