দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর প্রথমবারের মতো ফ্রান্সে কট্টর ডানপন্থীদের উত্থান হতে যাচ্ছে। জনমত জরিপের পর ১৭তম পার্লামেন্ট নির্বাচনেও দাপট দেখাচ্ছে ম্যারিন লে পেনের দল ন্যাশনাল র্যালি। গতকাল (রোববার, ৩০ জুন) অনুষ্ঠিত পার্লামেন্ট নির্বাচনের প্রথম দফা ভোটগ্রহণ শেষে বুথ ফেরত জরিপ বলছে সর্বোচ্চ ৩৪ শতাংশ ভোট পেয়ে সবার ওপরে ডানপন্থী দলটি।
দ্বিতীয় অবস্থানে বামপন্থী জোট নিউ পপুলার ফ্রন্টের ভোটসংখ্যা ২৮ শতাংশের বেশি। অন্যদিকে মাত্র সাড়ে ২০ শতাংশের মতো ভোট পেয়ে ভরাডুবির পথে প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোর দল এনসেম্বল।
তবে প্রথম পর্বের ভোটগ্রহণ শেষে জয় নিয়ে আশাবাদী ডান ও বামপন্থী উভয় দলই। অন্যদিকে ক্ষমতাসীন দলের প্রধানমন্ত্রীর কণ্ঠে ঝরছে হতাশা। গণতন্ত্র রক্ষায় পার্লামেন্টে কট্টর ডানপন্থীদের ঠেকাতে ভোটারদের আহ্বান জানিয়েছেন ফরাসি প্রধানমন্ত্রী।
ন্যাশনাল র্যালির নেতা ম্যারিন লে পেন বলেন, 'এটি ঐতিহাসিক ফল। কখনও ন্যাশনাল র্যালির কোনো প্রার্থী প্রথম ধাপের ভোটে জয় পায়নি। এবারই এটি সম্ভব হলো। ফরাসি জনগণের জন্য আশাবাদের বিষয়।'
নিউ পপুলার ফ্রন্টের নেতা ম্যারিন টন্ডলিয়ার বলেন, 'আজকের সন্ধ্যায় রাজনীতির পট পরিবর্তনের সূচনা হয়েছে। ম্যাক্রোর পাতা উল্টে ফেলেছে জনগণ। আমরা বলতে চাই, ম্যাক্রো তোমার সময় শেষ হয়ে গেছে।
ফ্রান্সের প্রধানমন্ত্রী গ্যাব্রিয়েল আটাল বলেন, 'আজকের মূল শিক্ষা হলো কট্টর ডানপন্থীরা পার্লামেন্টে প্রবেশের দ্বারপ্রান্তে আছে। আমাদের দেশ আজকের মতো কখনও এমন হুমকির সম্মুখীন হয়নি। দেশকে বাঁচাতে প্রত্যেক ভোটারের কাছে আহ্বান, একটি ভোটও যাতে ন্যাশনাল র্যালির প্রার্থীর খাতায় না যায়। তারা যাতে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পায় বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে।'
বুথফেরত জরিপে এগিয়ে থাকলেও জরিপ প্রতিষ্ঠানগুলো বলছে, সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়ার সম্ভাবনা নেই ন্যাশনাল র্যালির। সেক্ষেত্রে সরকার গঠনে বেগ পোহাতে হতে পারে ম্যারিন লে পেনের দলকে। তৈরি হতে পারে রাজনৈতিক অস্থিরতা।
এবারের নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতির হার ছিল ২৭ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ সাড়ে ৬৫ শতাংশ। দুই পর্বের পার্লামেন্ট নির্বাচনে ৭ জুলাই অনুষ্ঠিত হবে দ্বিতীয় দফার ভোটগ্রহণ। ৫৭৭টি আসনের মধ্যে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে হলে কোন দলকে জয় পেতে হবে অন্তত ২৮৯টি আসনে।