এশিয়া
বিদেশে এখন
0

দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্টের পক্ষে-বিপক্ষে রাজপথে হাজারও মানুষ

অভিশংসিত হওয়ার সাত দিন গেলেও সাংবিধানিক আদালত থেকে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওলকে নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না আসায় গভীর হচ্ছে রাজনৈতিক সংকট। ইউন সুক ইওলের পক্ষে-বিপক্ষে রাজপথে হাজারও মানুষ। সাংবিধানিক আদালতকে দ্রুত রায় দেয়ার দাবি অভিশংসনের পক্ষে-বিপক্ষের আন্দোলনকারীদের। রাজনৈতিক সংকট মোকাবিলায় ক্ষমতায় রাখা-না রাখার সিদ্ধান্ত দ্রুতই হওয়া উচিত বলে মনে করেন আইন বিশেষজ্ঞরা।


১৪ ডিসেম্বর ব্যাপক বিক্ষোভের মুখে আইন প্রণেতাদের ভোটে পার্লামেন্টে অভিশংসিত হন দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওল। তবে এক সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও এখনও ক্ষমতাচ্যুত হননি এই নেতা। সাংবিধানিক আদালতের রায়ের উপর ঝুলছে স্থগিত হওয়া প্রেসিডেন্সিয়াল ক্ষমতা ফেরত পাওয়া-না পাওয়া।

ভাগ্য যদি পক্ষে চলে যায় তাহলে ইউন সুক ইওলই ক্ষমতায় বহাল থাকার শঙ্কা থেকে, বিক্ষোভে আবারও উত্তাল দক্ষিণ কোরিয়া। ক্ষোভে ফুঁসছেন ইউন সুক ইওল বিরোধীরা।

পার্লামেন্টে অভিশংসিত হওয়ার সাত দিন পেরিয়ে গেলেও কেনো সাংবিধানিক আদালতের রায় আসছে না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন হাজার হাজার আন্দোলনকারীরা। দ্রুত অভিশংসনের পক্ষে রায় দেয়া দাবি উঠেছে সিউলে হওয়া বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ থেকে।

একজন বিক্ষোভকারী বলেন, ‘আমি ইউনকে জিজ্ঞাসা করতে চেয়েছিলাম, কোন ক্ষমতা থেকে তিনি গণতান্ত্রিক দেশে সামরিক আইন জারি করেছিলেন। সত্যিই যদি তার বিবেক থাকে তবে তার পদত্যাগ করা উচিত।’

অন্য একজন বলেন, ‘এটা স্পষ্ট যে, ইউন সুক ইওল একজন অপরাধী। তাই সাংবিধানিক আদালতের উচিত অতি দ্রুত তাকে বরখাস্ত করা।’

বিরোধীদের বিক্ষোভের মধ্যে থেমে নেই ইউন সুক ইওল সমর্থকরাও। তার পক্ষে সিউলে পাল্টা সমাবেশ করেছেন হাজার হাজার মানুষ। সামরিক আইন জারি ঘিরে পার্লামেন্টে অভিশংসিত করার পর তার প্রেসিডেন্সিয়াল ক্ষমতা পুনর্বহালের জোর দাবি তুলেছেন তারা।

আন্দোলনকারীদের মধ্যে একজন বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি সামরিক আইন ন্যায় সঙ্গত এবং গ্রহণযোগ্য ছিল। তাই ইউন সুক ইওলকে ক্ষমতাচ্যুত করার চলমান পায়তারার তীব্র নিন্দা জানাতে এখানে এসেছি।’

সমাবেশে যোগ দেয়া একজন বলেন, ‘আজকে এই সমাবেশে আমাদের পক্ষে বহু সাধারণ মানুষ যোগ দিয়েছেন। আমরা সবাই ইওলকে অভিশংসন করার বিষয়ে সম্পূর্ণ বিরোধিতা করি।’

ইউন সুক ইওলকে ক্ষমতাচ্যুত করার পক্ষে-বিপক্ষে চলমান এই আন্দোলনের মধ্য দিয়ে দক্ষিণ কোরিয়া গভীর রাজনৈতিক সংকটের দিকে অগ্রসর হচ্ছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তাই প্রেসিডেন্সিয়াল ক্ষমতার স্থগিতাদেশের সময়কাল যত কমানো যায় ততোই ভালো বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

দক্ষিণ কোরিয়ার সাংবিধানিক আইন বিশেষজ্ঞ জিওন হাক-সিওন বলেন, ‘সাবেক প্রেসিডেন্ট রো মু-হিউনের অভিশংসনের বিচারে হতে প্রায় ৬০ দিন সময় লেগেছিল। এছাড়া আরেক সাবেক প্রেসিডেন্ট পার্ক জিউন-হে'র জন্য লেগেছিল ৯০ দিন। প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওলের সমস্যাটা আগের তুলনায় অনেক বেশি স্পষ্ট। তাই আমি মনে করি পুরো প্রক্রিয়াটি ৯০ দিনের বেশি সময় নেয়া উচিত হবে না।’

রাজনৈতিক অস্থিরতা থেকে দক্ষিণ কোরিয়াকে মুক্ত করতে, ইউন সুক ইওলের অভিশংসন বিচার সম্পন্নে আগামী ২৭ ডিসেম্বর প্রথম শুনানির জন্য প্রস্তুত হচ্ছেন দেশটির সাংবিধানিক আদালত।

৩ ডিসেম্বর সামরিক আইন জারি করে সাধারণ জনগণ ও বিরোধীদের তোপের মুখে মাত্র ছয় ঘণ্টা পর তা প্রত্যাহার করেও অভিশংসন প্রক্রিয়ার সঙ্গে লড়তে হচ্ছে ইউন সুক ইওলকে।

এসএস