২০১৪ সালে সবশেষ বিধানসভার ভোটে ডেমোক্রেটিক পার্টির সঙ্গে জোটবদ্ধ হয়ে জম্মু-কাশ্মীরের শাসনকাজে ভাগ বসায় বিজেপি। তবে ২০১৮ সালে ক্ষমতায় এসে জোট ত্যাগ করে কেন্দ্রীয় শাসন জারি করে মোদি সরকার। অভিভাবকশূন্য এই ভূস্বর্গে আবারও বইছে নির্বাচনী হাওয়া। ১৮ সেপ্টেম্বর প্রথম ধাপের ভোট শেষে ২৫ সেপ্টেম্বর দ্বিতীয় ও ১ অক্টোবর শেষ ধাপের ভোটগ্রহণ হবে। নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা হবে ৪ অক্টোবর।
২০১৯ সালে ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিল করে কাশ্মীরকে দুই ভাগ করে মোদি সরকার। এতে হিন্দুশাসিত জম্মুতে ছয়টি আসন বেড়ে হয় ৪৩টি আর মুসলিমপ্রধান কাশ্মীরে একটি আসন বেড়ে হয় ৪৭টি। দেশটির নির্বাচন কমিশনের তথ্য মতে, জম্মু-কাশ্মীরে ৯০টি আসনে ভোটার সংখ্যা ৮৮ লাখ ৬৬ হাজার ৭০৪ জন।
বিচ্ছিন্নতাবাদী হিসেবে পরিচিত জামায়াতে ইসলামি দল কয়েক দশক ধরেই কাশ্মীরে নিষিদ্ধের তালিকায় আছে। একইভাবে চিহ্নিত আওয়ামী ইত্তেহাদ দলের প্রধান ইঞ্জিনিয়ার রশিদ। কারাগারে থাকলেও ভোটে প্রচারের জন্য জামিন পেয়েছেন তিনি। আসন্ন নির্বাচনে এই দুই দল জোট বেঁধে ৪৩টি আসনে প্রার্থী দিয়েছে। যাদের সবাই স্বতন্ত্র।
শাসক দল বিজেপি তাদের সঙ্গে জোটবদ্ধ হয়ে প্রচারে নেমেছে। মুসলিম প্রধান কাশ্মীর থেকে কিছু আসন নিজেদের বাগে আনা বিজেপির লক্ষ্য। পাশাপাশি চাচ্ছে, একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে কোনো দল যেন মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে না পারে। নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে নির্বাচনে অংশ নেয়ার জন্য এসব গোষ্ঠীর যাবতীয় প্রক্রিয়ার জন্য কাজ করছে মোদি সরকার।
এদিকে, ন্যাশনাল কনফারেন্সের নেতা ওমর আবদুল্লাহর দাবি, বিচ্ছিন্নতাবাদীদের জোটটি মূলত বিজেপির বি টিম। তারা মোদির হয়েই লড়াই করবে। জম্মু-কাশ্মীরে বিজেপির প্রবেশের জন্য মেহবুবা মুফতির দল পিডিপিকেও দায়ী করেন তিনি।
ন্যাশনাল কংগ্রেস দলের প্রধান ওমর আব্দুল্লাহ বলেন, 'মেহবুবা মুফতি জম্মু-কাশ্মীরে ধ্বংস ও বিশৃঙ্খলা ছাড়া কিছুই আনেননি। বিজেপিকে কাশ্মীরের ক্ষমতায় আনার পেছনে মুখ্য ভূমিকা রেখেছে মেহবুবা মুফতির দল পিডিপি। কি কারণে তিনি বিজেপির সঙ্গে জোট বেঁধেছিলেন। সেই প্রশ্নের উত্তর তার কাছে নেই।'
যদিও বিজেপি এসব অভিযোগ অস্বীকার করছে। তবে কংগ্রেসের সঙ্গে জোটবদ্ধ হওয়া এনসির দাবি, রশিদকে জামিন দেয়া এবং জামায়াতকে নির্বাচনের সুযোগ দিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বৈঠক সেই গুঞ্জনকে সত্য প্রমাণিত করেছে। এখন প্রশ্ন উঠেছে ঝুঁকি নিয়ে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সঙ্গে কেনো এগুচ্ছেন বিজেপির নেতারা।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এই উপত্যকায় বিজেপির প্রভাব একেবারে শূন্যের কোটায়। অন্য দলের মাধ্যমে ছড়ি ঘুরাতে গিয়েও ব্যর্থ হন তারা। মুসলমানপ্রধান জম্মু–কাশ্মীরে কখনও কোনো হিন্দু মুখ্যমন্ত্রী হয়নি। এবার সেই চেষ্টায় মরিয়া হয়ে উঠেছে বিজেপি সরকার।