জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ভারতে প্রতিবছরই ব্যাহত হচ্ছে শস্যের উৎপাদন। এরমধ্যেও কৃষকরা বঞ্চিত হচ্ছেন ন্যায্যমূল্য থেকে। দাবি ছিলো, সরকার নিয়ন্ত্রিত পাইকারি বাজারে শস্য বিক্রির জন্য ন্যূনতম দাম বেঁধে দেয়ার। কিন্তু সোমবার এ নিয়ে চুক্তিতে পৌঁছাতে পারেনি সরকার আর কৃষক সংগঠন। ফলশ্রুতিতে কৃষকদের 'দিল্লী চলো' বিক্ষোভ কর্মসূচি শুরু হয়েছে ভারতে। এই বিক্ষোভ শুরু হয়েছে পাঞ্জাব আর হরিয়ানার শম্ভু সীমান্ত থেকে, যাতে অংশ নিয়েছেন ২শ'র বেশি কৃষক সংগঠন।
দিল্লী চলো বিক্ষোভে কৃষকদের একজন বলেন- 'সরকারকে আর সময় দেয়া উচিত হবে না। যদি আমাদের জন্য ভালো কোন প্রস্তাব থাকে, এরপর সরকারকে আরও সময় দেয়ার বিষয়ে ভাববো। কিন্তু তাদের কোন অফার নেই।'
বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে সীমান্তে টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করছে পুলিশ। দিল্লীতে এরমধ্যেই জারি করা হয়েছে ১৪৪ ধারা। রাজধানীতে প্রবেশ করতে দেয়া হবে না ট্রাক্টর কিংবা বড় কোন মিছিল। বন্ধ করে দেয়া হয়েছে বেশ কিছু প্রবেশ পথ। কৃষক সংগঠনের দাবি, তিন বছর আগে প্রতিশ্রুত ন্যায্য দামের অঙ্গীকার পূরণে ব্যর্থ হয়েছে সরকার।
দেশটির কৃষক সংগঠন বলছে, তাদের স্বার্থ সুরক্ষায় বাধ্য সরকার। মূলত শস্যের ন্যূনতম দাম, কৃষক আর শ্রমিকদের জন্য পেনশন, ঋণ মওকুফ, পুলিশের বিভিন্ন সময়ের মামলা থেকে অব্যাহতি, বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা থেকে সদস্যপদ সরিয়ে নেয়া, গেলবারের বিক্ষোভে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া কৃষক পরিবারের জন্য ক্ষতিপূরণসহ নানা দাবিতে এই বিক্ষোভ কর্মসূচির ডাক দেন ভারতের কৃষকরা।
এর আগে ২০২০ সালে কৃষি আইন সংস্কারের দাবিতে দিল্লীর বিভিন্ন সীমান্তে বিক্ষোভ করেন কৃষকরা। সেই বিক্ষোভে নিহত হন অনেকে। বাধ্য হয়ে আইন সংস্কারের অঙ্গীকার করে ভারত সরকার। পরে, ২০২১ সালের কৃষক বিক্ষোভের মুখেও নতুন তিনটি আইন পাশে বাধ্য হয় মোদি সরকার।
এই বিক্ষোভকে মোদি সরকারের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন রাজনীতি বিশ্লেষকরা। কৃষক সংগঠন আর ট্রেড ইউনিয়নের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ১৬ ফেব্রুয়ারি গ্রাম পর্যায়ে কোন ধরনের কৃষিকাজ না করার অবরোধ কর্মসূচি পালন করা হবে। গুরুত্বপূর্ণ সড়ক যোগাযোগ অবরোধ করে রাখবেন কৃষকরা। পাশাপাশি স্থানীয় পর্যায়ে বন্ধ থাকবে দোকানপাট, বাজার আর অফিস-আদালত।