নির্বাচিত সরকার প্রধান অং সান সুচিকে ক্ষমতাচ্যুত করে ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে মিয়ানমারের ক্ষমতা দখল করে দেশটির সেনাশাসিত সরকার। স্যাটেলাইটের ছবি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, জান্তা সরকার ক্ষমতা দখলের পর থেকে ২০২৪ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত দেশটির অনেক কারাগার সম্প্রসারণের কাজ চলছে।
তবে এ বিষয়ে প্রকাশ্যে কোন বক্তব্য দেয়নি সেনা সরকার। তথ্য বলছে, গণতন্ত্রের পক্ষে হওয়া বিক্ষোভের মধ্যে কারাগারের নেটওয়ার্ক বাড়াচ্ছে দেশটি। এসিস্টেন্স এসোসিয়েশন অব পলিটিক্যাল প্রিজোনার্সের তথ্যমতে, ২০২১ সাল থেকে এখন পর্যন্ত রাজনৈতিক ইস্যুতে বন্দি করা হয় ২৫ হাজার ৯শ' জনকে। এরমধ্যে ২০ হাজার এখনও বন্দি আছেন।
পহেলা ফেব্রুয়ারি সামরিক জান্তার ক্ষমতা দখলের তিন বছরে বিভিন্ন গবেষণায় উঠে এসেছে মিয়ানমারে সাধারণ মানুষের ওপর নিপীড়নের তথ্য। নতুন কারাগার সম্প্রসারণের পুরো স্থানে মোতায়েন রয়েছে কড়া নিরাপত্তা। সেনা অভ্যুত্থানের পর রাজনীতি, সাংবাদিকতাসহ বিক্ষোভে সম্পৃক্তদের আটকে রাখতেই মূলত সম্প্রসারিত হচ্ছে কারাগারগুলো।
দেশটির সবচেয়ে কুখ্যাত কারাগার 'ইনসেইন' ১৮৮৭ সালে তৈরি করেছিলেন ব্রিটিশরা। ২০২২ সালে আলোচনার কেন্দ্রে আসে এই কারাগার, যখন গণতন্ত্রের পক্ষে বিক্ষোভের কারণে সক্রিয় অংশগ্রহণকারী ৪ জনকে মেরে ফেলা হয় কারাগারের ভেতরেই। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ২০২২ সালের মার্চে ছাদবিহীন একটি অবকাঠামো দেখা যায় কারাগারের কাছেই, সম্ভবত সেখানেই বন্দিদের মেরে ফেলা হয়।
অং সান সুচিকে বন্দি রাখা হয়েছে নেইপিদো কারাগারে। এখানে নেইপিদোর কারাগারেও গেল ৩ বছরে করা হয়েছে বিপুল পরিমাণে বিনিয়োগ। মূল কারাগারের ভেতরে ও বাইরে দেখা গেছে নতুন ভবন। বিশ্লেষণে দেখা যায়, পুরো নতুন দুটি কারাগার তৈরি হয়েছে। একটি মন রাজ্যের মাওলামাইন শহরে, যেটি পুরোপুরি সেনা সরকারের অধীনে।
বিশ্লেষণে শতাধিক কারাগার আর শ্রমিক ক্যাম্প দেখানো হয়েছে। তবে স্যাটেলাইটের ছবিতে কোন ভবনের ভেতরেই দেখা যাচ্ছে না। সে কারণে নিশ্চিত হয়ে বলা যাচ্ছে না, কোন তলা কিসের জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে। গবেষণা প্রতিবেদন বলছে, এখন পর্যন্ত ভিনদেশিসহ অনেক বন্দিকে মুক্তি দিয়েছে জান্তা সরকার। কিন্তু নেইপিদোর কারাগারে অবস্থিত সু চি মুক্তি পেয়েছেন কিনা, সে বিষয়ে জানেন না কেউ।