আজ মঙ্গলবার (৫ ডিসেম্বর) বিকেল নাগাদ ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটার বেগে অন্ধপ্রদেশ অতিক্রম করে সাইক্লোনটি। এর আগে চেন্নাইয়ে ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতে প্রাণ গেছে কমপক্ষে ১২জনের।
ভারতের আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, ঘন্টায় ৯০ থেকে ১০০ কিলোমিটার বেগে অন্ধ্রপ্রদেশে আঘাত হেনেছে এটি। রাজ্য থেকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে অন্তত ১০ হাজার মানুষকে। দমকা হাওয়া আর অতিবৃষ্টিতে উপড়ে পড়েছে গাছপালা, ভেসে গেছে হাটবাজার, মাটির বাড়িঘর। ডুবে গেছে অনেক বাড়িঘর। কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল পুদুচেরির উপকূলীয় এলাকায় জারি রয়েছে ১৪৪ ধারা। ঝড়ের আগে অন্ধ্রপ্রদেশে ২২২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়।
স্থানীয়রা বলেন, নিম্ন উপকূলীয় এলাকা বলে বাসাবাড়িতেও পানি ঢুকে গেছে। বাসিন্দারা জায়গা খুঁজছেন থাকার। ঘরে পানি ঢোকা ঠেকানোর চেষ্টায় সিমেন্টের বস্তা ফেলাসহ অনেক ব্যবস্থাই নেয়া হচ্ছে।
এর আগে স্থানীয় সময় সোমবার রাতে দক্ষিণ ভারতের তামিলনাড়ুতে আঘাত হানে সাইক্লোন মিগজাউম। প্রাদেশিক রাজধানী চেন্নাইসহ আশপাশের কয়েকটি জেলায় এর প্রভাবে রোববার সকাল থেকে রেকর্ড প্রায় ৫শ' মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। বিরামহীন বৃষ্টিতে শহরজুড়ে দেখা দিয়েছে তীব্র জলাবদ্ধতা, ডুবে গেছে ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট, যানবাহন। পানিতে ডুবে যায় ভারতের তৃতীয় বৃহৎ ও চতুর্থ ব্যস্ততম চেন্নাই বিমানবন্দর। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় স্থগিত ছিল বিমানবন্দরের কার্যক্রম, বাতিল হয় ৩০টির বেশি ফ্লাইট, আটকা পড়েন হাজারখানেক যাত্রী। মঙ্গলবার দুপুর থেকে চেন্নাইয়ের সঙ্গে স্বাভাবিক হয় আকাশ ও রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা।
সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করেও ক্ষয়ক্ষতি খুব একটা এড়ানো যায়নি। ঝড়ে শিকড় উপড়ে গেছে অসংখ্য গাছপালা, ব্যাহত হচ্ছে বিদ্যুৎ, টেলিফোন ও ইন্টারনেট সেবা। শহরজুড়ে দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকট। ঘটেছে প্রাণহানিও। এমন পরিস্থিতিতে চার জেলায় সরকারি ছুটি ঘোষণা করেছে স্থানীয় প্রশাসন, বন্ধ রয়েছে স্কুল-কলেজ, অফিস-আদালত, ব্যাংক।
স্থানীয়রা বলেন, এতো বেশি বৃষ্টি হয়েছে যে রাস্তা থেকে পানি সরছেই না। পানি বাড়তে থাকায় বের হতে পারছি না, প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনতে পারছি না। একটু বৃষ্টিতেই সব অচল হয়ে যাওয়ার সমস্যা তো দীর্ঘদিনের।
সাইক্লোনের প্রভাবে কলকাতায় মঙ্গলবার হালকা বৃষ্টি হয়। ভারতীয় আবহাওয়া বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, শক্তি হারিয়ে বুধবার সকাল নাগাদ দুর্বল হতে শুরু করবে মিগজাউম। ঝড়ের প্রভাবে পাঞ্জাব, হরিয়ানা, চন্ডিগড়, উত্তর প্রদেশের পশ্চিমাঞ্চল ও রাজস্থানের পূর্বে ঘন কুয়াশা দেখা দিতে পারে বলে পূর্বাভাস আবহাওয়াবিদদের।