খাওয়ার পানি নিয়ে রীতিমতো সহিংসতায় গড়ালো ভারতেরই দুই রাজ্যের বহু পুরানো দ্বন্দ্ব। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে হস্তক্ষেপ করতে বাধ্য হয় খোদ মোদি প্রশাসন। এ ঘটনায় অন্ধ্র প্রদেশের পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা করেছে তেলেঙ্গানা, শুক্রবার অভিযোগপত্রও জমা দিয়েছে রাজ্য পুলিশ।
ধারণা করা হয়, পানিকে কেন্দ্র করে ঘটবে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের সূচনা। তারই আঁচ যেন পাওয়া গেলো ভারতেরই দুই রাজ্য অন্ধ্র প্রদেশ ও তেলেঙ্গানা। খাওয়ার পানি নিয়ে বিবাদ চরমে উঠেছে প্রতিবেশী রাজ্য দু'টির মধ্যে।
ঘটনার সূত্রপাত তিনদিন আগে, স্থানীয় সময় বুধবার মধ্যরাতে। বিধানসভা নির্বাচনের মাত্র কয়েক ঘণ্টা আগে যখন ভোটগ্রহণ শুরুর প্রস্তুতি নিয়ে ব্যস্ত তেলেঙ্গানা রাজ্য সরকার, তখনই নাগার্জুন সাগর বাঁধে অনুপ্রবেশ করে অন্ধ্র প্রদেশের প্রায় ৭শ' পুলিশ সদস্য; বিনা অনুমতিতে ঘণ্টায় ৫শ' কিউসেক পানি ছাড়তে শুরু করে। পরদিন বৃহস্পতিবার সকালে সামাজিক মাধ্যম এক্সে অন্ধ্র প্রদেশের সেচমন্ত্রী জানান, খাওয়ার পানি জোগাড়ে কৃষ্ণা নদীতে ছাড়া হয়েছে এ পানি।
দুই রাজ্যের চুক্তি অনুযায়ী কৃষ্ণা নদীর ৬৬ শতাংশ পানি অন্ধ্র প্রদেশের এবং ৩৪ শতাংশ তেলেঙ্গানার। মন্ত্রীর দাবি, নিজেদের অধিকারের বাইরে একটি ফোঁটাও পানি নেয়নি অন্ধ্র প্রদেশ, বরং নিজেদের ভূখণ্ডে খাল সচল করতে যতোটুকু পানি দরকার, ততোটুকুই নিয়েছে তারা। অন্যদিকে তেলেঙ্গানা মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, শত শত পুলিশ জোর করে ঢুকে বাঁধের সিসিটিভি নষ্ট করার পর প্রায় পাঁচ হাজার কিউসেক পানি নদীতে ছেড়েছে। এতে হায়াদ্রাবাদ ও আশপাশের এলাকায় প্রায় দুই কোটি মানুষ বিশুদ্ধ পানি থেকে বঞ্চিত হবে বলেও জানান তিনি।
এ ঘটনায় শুক্রবার তেলেঙ্গানায় দু'টি মামলা হয়েছে অন্ধ্র প্রদেশ পুলিশের বিরুদ্ধে। অভিযোগপত্রে বলা হয়, তেলেঙ্গানা পুলিশ ও সেচবিভাগের কর্মকর্তাদের প্রবেশ আটকাতে ব্যারিকেড দিয়ে প্রায় অর্ধেক বাঁধ নিয়ন্ত্রণে নেয় অন্ধ্র প্রদেশ। অন্যদিকে অন্ধ্র প্রদেশ প্রশাসনের দাবি, দুই রাজ্যের সীমান্তে অবস্থিত নাগার্জুন সাগর বাঁধের ২৬টি গেটের ১৩টি তেলেঙ্গানা প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণে, বাকিগুলো অন্ধ্র প্রদেশের, যেগুলোতে অবৈধ নিরাপত্তা চৌকি বসিয়েছে তেলেঙ্গানা।
এমন পরিস্থিতি আরও উত্তেজনার শঙ্কা এড়াতে বাঁধ পরিচালনায় কেন্দ্রীয় পুলিশ বাহিনীকে দায়িত্ব দিয়েছে মোদি সরকার। ২০১৫ সালেও জোর করে বাঁধটিতে ঢোকার চেষ্টা করেছিল অন্ধ্র প্রদেশ পুলিশ, সে সময় দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে সে চেষ্টা নস্যাৎ করে তেলেঙ্গানা পুলিশ।