তুবড়ি, ফুলঝুড়ি, চরকা, কালি পটকা, সাপ, দোদোমা, রকেট, প্যারাসুট, রঙ মশাল, চকলেট বোমা- দীপাবলি উপলক্ষ্যে কলকাতাবাসীর বাজি কেনার তালিকাটা বেশ লম্বা। বুড়িমার পটকা থেকে নবদ্বীপের চরকি, রসায়ন থেকে ইলেকট্রনিক- দীপাবলি উপলক্ষ্যে অন্তত এক থেকে দেড়শ' ধরনের বাজি পাওয়া যায় কলকাতা ও এর পার্শ্ববর্তী জেলার জনপ্রিয় বাজির দোকানে।
কালীপূজার ঠিক আগ মুহূর্তে বাজি কেনার ধুম পড়েছে কলকাতার ধর্মতলার শহীদ মিনার চত্বরে। প্রতিবছরই বাইরের জেলা থেকে বাজি এনে এখানে স্টল দেন ব্যাপারীরা পাইকারি বিক্রেতাদের আনাগোনা থাকায় ন্যায্যমূল্যে বাজি কিনতে ধর্মতলা আসেন এমন খুচরা বিক্রেতাদের সংখ্যাও কম নয়।
তবে, সাইক্লোন দানার কারণে নির্ধারিত সময়ের ৩ দিন পরে দোকান সাজিয়েছেন ধর্মতলার বাজি বিক্রেতারা। এছাড়া, পরিবেশ বান্ধব বাজি তৈরির প্রস্তাবে সম্মত হওয়ার পাশাপাশি রাজ্যের অনুমোদনের জন্যও বেশ কিছুদিন অপেক্ষা করতে হয়েছে তাদের। তবে বাজি বিক্রেতারা নিশ্চিত করেছেন, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ও সুপ্রিম কোর্টের অনুমতি পেয়েই বাজারে এসেছেন তারা।
কালের বিবর্তনের নিত্যনতুন অনেক বাজি প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান তৈরি হলেও একসময় বুড়িমার চকলেট বোমা ছাড়া অসম্পূর্ণ ছিল কলকাতার কালীপূজার বাজির হাট। এই বুড়ি মার প্রকৃত নাম অন্নপূর্ণা দাস। জন্ম বাংলাদেশের ফরিদপুরে। ১৯৪৮ এ দেশ ভাগের স্বামী সন্তানের সাথে ঘর বাঁধেন পশ্চিমবঙ্গের দিনাজপুর জেলার ধলদিঘিতে। শব্দ বাজির মাত্রা নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি সবুজ বাজি বানিয়ে আজও পরিবারের ঐতিহ্য ধরে রেখেছে বুড়িমার পরবর্তী প্রজন্ম।
এদিকে, দীপাবলিতে বাজি পোড়ানো নিয়ে দ্বিধা-বিভক্তি আছে কলকাতাবাসীদের মধ্যে। বিশেষ করে বাজি থেকে অসংখ্য দুর্ঘটনার সূত্রপাত, পরিবেশ দূষণ ও নিষিদ্ধ বাজি নিয়ে এবার নড়েচড়ে বসেছে রাজ্য প্রশাসনও। রাজ্য ও রাজ্যের বাইরের পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, ৩১ অক্টোবর দীপাবলির রাতে স্থানীয় সময় ৮টা থেকে ১০টা পর্যন্ত অনুমোদিত সবুজ বাজি পোড়ানোর অনুমতি দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্ট। রায় বাস্তবায়নে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়ার অঙ্গীকার তাদের। এছাড়া, নির্দিষ্ট সময়সীমার বাইরে ও স্পর্শকাতর এলাকায় কোনো ধরনের বাজি পোড়ানো যাবে না বলেও ঘোষণা দিয়েছে কলকাতা পুলিশ।