পর্যটন ও ব্যবসায়িক স্বার্থ ছাড়াও শুধু চিকিৎসার জন্য ভারতে যান এমন বাংলাদেশির সংখ্যা নেহাত কম নয়। তুলনামূলক কম খরচে উন্নত স্বাস্থ্যসেবা ও থাকা খাওয়ার সুবিধা থাকায় পার্শ্ববর্তী যে কোনো দেশের তুলনায় ভারতকে প্রাধান্য দেন তারা। তবে বর্তমানে মেডিকেল ও আপদকালীন ভিসা চালু রাখার বিষয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিবৃতি দিলেও বাংলাদেশ থেকে আসা যাত্রীরা বলছেন ভিন্ন কথা।
বাংলাদেশিদের একজন বলেন, ‘৫ আগস্টের আগের ভিসা যার কারণে আমি আসতে পেরেছি এখানে।’
আরেকজন বলেন, ‘পুরোনো ভিসা ছিল তাই আসতে পেরেছি। আমরা চিন্তায় আছি পরবর্তীতে ভিসা পাবো কিনা।’
চিকিৎসার জন্য এই মুহূর্তে যে বাংলাদেশিরা ভারতে অবস্থান করছেন তাদের বক্তব্য, ৫ আগস্টের আগে যারা মেডিকেল ভিসা করে রেখেছিলেন, শুধুমাত্র তাদেরকেই ভারতে যাওয়ার অনুমতি দেয়া হচ্ছে। নতুন করে মেডিকেল ভিসা পেতেও ভোগান্তিতে পড়ছেন অনেক আবেদনকারী। এছাড়া, ট্যুরিস্ট ভিসা বন্ধ থাকায় এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে দুই দেশের রাজস্ব আয়ে।
এছাড়া, বেনাপোল-পেট্রাপোল স্থলবন্দর হয়ে যারা ভারতে যাচ্ছেন তাদের অনেকেরই অভিযোগ মানি এক্সচেঞ্জ নিয়ে। রোববার (২০ অক্টোবর) ১০০ টাকার বিপরীতে যাত্রীদের ৬৮ রুপি মিলেছে। বাংলাদেশি টাকার মান না বাড়লে ভারতের স্বাস্থ্যসেবাও ধীরে ধীরে নাগালের বাইরে চলে যাবে এমন আশঙ্কা তাদের। আবার, অনেকের দাবি, বিগত সময়ের তুলনায় ভারতের স্বাস্থ্যসেবার খরচও কিছুটা চড়া।
মূলত চিকিৎসার জন্যে এলেও ভারতে কেনাকাটা করতে পছন্দ করেন এমন বাংলাদেশির সংখ্যাও নেহাত কম নয়। কিন্তু যাত্রী পারাপার কমে যাওয়ায় জনপ্রিয় বিপনীবিতান, শপিংমল ও বাজারগুলোতেও বাংলাদেশিদের আনাগোনা তেমন চোখে পড়ছে না।
শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ভারত বাংলাদেশের ভিসানীতিতে যে অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে তার সরাসরি প্রভাব পড়ছে দুইদেশের আমদানি রপ্তানি বাণিজ্য ও রাজস্ব আয়ে। এছাড়া, যাত্রী টার্মিনাল উদ্বোধনের জন্য আগামী ২৪ অক্টোবর পেট্রাপোল স্থলবন্দরে আসবেন ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। ২১ অক্টোবর থেকে আগামী ৪ দিন বন্ধ থাকবে পেট্রাপোল বন্দরে আমদানি-রপ্তানি। তবে, সবকিছুর পরও দু'দেশের সম্পর্ক আবার স্থিতিশীল অবস্থায় আসবে, স্বাভাবিক হবে ভিসানীতি- এমনটাই প্রত্যাশা বাংলাদেশি যাত্রীদের।