সংস্কৃতি ও বিনোদন
বিদেশে এখন
0

ধারাবাহিক হরতাল-অবরোধে ক্ষতির মুখে প্রযোজক-শিল্পীরা

শাহনুর শাকিব

রাজনতিক কর্মসূচির প্রভাব পড়েছে বিনোদনখাতে। ধারাবাহিক হরতাল-অবরোধে অনেকেই বন্ধ রেখেছেন শ্যুটিং। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এমন পরিস্থিতিতে নতুন ছবি মুক্তির দিনক্ষণও পিছিয়ে যাচ্ছে- এতে লোকসানের শঙ্কায় নির্মাতা-প্রযোজকরা।

করোনা মহামারির সময় সবকিছুর মতো স্থবির হয়ে পড়েছিল দেশের নাটক-সিনেমা-বিজ্ঞাপন খাত। তখন কর্মহীন হয়েছিলেন বেশিরভাগ অভিনেতা-শিল্পী-কলাকুশলীরা। এরপর গেলো বছরের শুরু থেকে কিছুটা স্বাভাবিক হতে শুরু করে শ্যুটিংপাড়া। দুই ঈদ ঘিরে বেশকিছু জনপ্রিয় সিনেমা মুক্তিও পায়। সমান্তরালে চলে নাটক-ওয়েবের কাজও।

যখন আবার পুরোদমে চলছে কাজকর্ম। শিল্পীদের আয়-রোজগারও হচ্ছে ভালো। তখন আবারো বেকায়দায় বিনোদনখাত।

জানুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন। এরমাঝে ঘনঘন হরতাল-অবরোধের কারণে অন্যান্য পেশার মতো প্রভাব পড়েছে শোবিজ অঙ্গনেও। কমেছে নাটক সিনেমার শ্যুটিং- বন্ধ রয়েছে নতুন সিনেমা মুক্তির দিনক্ষণও।

দেলোয়ার হোসেন বিজ্ঞাপন জগতের পরিচিত মুখ। কাজের সার্বিক পরিস্থিতি জানাতেই তুলে ধরেন শিডিউল পিছিয়ে যাওয়ার কথা। বলেন, 'হরতাল অবরোধে পিকেটিং এর কারণে বাসা থেকে বের হতে খুব ভয় করে, এ কারণে আমার অনেক কাজ বন্ধ করতে হয়েছে।'

তার মতো আরও অনেকেই বলছেন, সিরিয়াল বা জরুরি কিছু কনটেন্টের শ্যুটিং চললেও অনিশ্চয়তা নিয়ে কাজ করছেন তারা।

কয়েকজন অভিনেতা জানান, 'আমাদের কাজের ক্ষতি হচ্ছে, কাজ কম হচ্ছে। অবরোধের কারণে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা বাদ দিয়ে আমরা শ্যুটিং করছি।'

দেশের চলচ্চিত্র নির্মাণের আঁতুড়ঘর বিএফডিসি। সেখানেও গিয়ে দেখা গেলো- অলস সময় পার করছেন কলাকুশলীরা। শ্যুটিং এর পরিবর্তে সেখানে চলছে বহিরাগতদের আড্ডা।

অবরোধে গাড়ি নিয়ে চলাচলে শঙ্কা থাকায় কমেছে আউটডোর শ্যুটিং। উত্তরায় আনন্দ বাড়িতে নাটকের শুটিংয়ে থাকা কলাকুশলীরা বলছেন, এই সময় শিডিউল ঠিক রাখা যাচ্ছে না। অনেকটা ঝুঁকি নিয়েই বেরিয়ে পড়েছেন কাজে।

একজন অভিনেতা বলেন, 'চোখের সামনে অনেক পরিবারকে মারা যেতে দেখেছি, অনেক পরিবারকে ধ্বংস হতে দেখেছি, সেজন্য আমি চাই এবার এমন কিছু না হোক। শুধু শিল্পীদের জন্য না, আমরা যারা বাইরে কাজ করি আমাদের সবার জন্যই এটি হুমকি।'

চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতি বলছে, এরকম পরিস্থিতি চলতে থাকলে কাজের গতি হারাবে শিল্পমাধ্যমটি, তেমনি করোনার সময়ের মতো আবারও আয় সংকটে পড়বে শোবিজের কলাকুশলীরা।

বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতি মহাসচিব শাহীন সুমন বলেন,'হরতাল অবরোধের সম্মুখীন হয়ে অনেকে তারিখ পিছিয়েছে, অনেকে কাজ করা নিয়ে আতঙ্কে আছে।'

সম্প্রতি রাজনৈতিক অস্থিরতার আগে অর্থলগ্নি করে বেকায়দায় পড়েছে অনেক প্রযোজক প্রতিষ্ঠান।‌ তাদের দাবি, এরমাঝে একটি বাণিজ্যিক ছবিও মুক্তি দেয়ার ঝুঁকি কেউ নিচ্ছেন না।

সম্মিলিত চলচ্চিত্র পরিষদ এর আহ্বায়ক খোরশেদ আলম খসরু বলেন, 'হরতাল অবরোধের কারণে সিনেমা হল বন্ধ থাকে যার কারণে বড় বাজেটের সিনেমাগুলোর মুক্তির তারিখ পিছিয়ে দিতে হচ্ছে।'

করোনার পর শোবিজ অঙ্গনে কাজের যে গতি এসেছিলো তার কিছুটা হলেও গতি কমেছে হরতাল অবরোধের প্রভাবে। তাই নির্বিঘ্ন কাজের পরিবেশ হোক এমনটাই আশা করছেন এ অঙ্গনের মানুষ।

এসএস

আরও পড়ুন: