প্রযুক্তি সংবাদ
তথ্য-প্রযুক্তি
0

স্মার্টফোন দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং করবেন যেভাবে

প্রয়োজনের এই সংসারে টাকার প্রয়োজন ফুরোবার নয়। তাই সচ্ছল জীবনযাপনের জন্য বাড়তি আয় করাটা এখন প্রয়োজন হয়ে দাঁড়িয়েছে। ঘরে বসে বাড়তি আয়ের অন্যতম মাধ্যম এখন ফ্রিল্যান্সিং। বাজারে এখন সব ধরণের সুযোগ-সুবিধা সম্পন্ন স্মার্ট ফোন পাওয়া যায়। যার সাহায্যে আপনি আপনার সব ধরণের কাজ সম্পন্ন করতে পারবেন।

আমরা এমন একটি বিশ্বে বসবাস করি যেখানে দিন দিন আরও বেশি মোবাইল কেন্দ্রিক হয়ে উঠছে। শুধু একটি স্মার্টফোন দিয়ে ফ্রিল্যান্সিংয়ের ধারণাটি অনেকের কাছে কঠিন কাজ বলে মনে হতে পারে। তবে অসম্ভব নয় কোনকিছুই।

 

সঠিক স্মার্টফোনটি বেছে নিন : আপনার ফ্রিল্যান্সিং যাত্রা শুরু করুন সঠিক স্মার্টফোন নির্বাচনের মাধ্যমে। যদি সঠিক স্মার্টফোন নির্বাচন করতে পারেন তাহলে আপনার কাজগুলো পরিচালনা করতে সহজ হবে। আর তা নিশ্চিত করতে বেছে নিন একটি বড় স্ক্রিন, যথেষ্ট স্টোরেজ এবং একটি শক্তিশালী প্রসেসরওয়ালা একটি ডিভাইস। তবে শুধু মোবাইল ডিভাইসের সাহায্যে ফ্রিল্যান্সিং সম্ভব নয় যদি না আপনি দক্ষ না হন। তাই সঠিক স্মার্টফোন, সেরা অ্যাপস এবং কার্যকরী কৌশলগুলোর সাহায্যে আপনার হাতে থাকা মোবাইল ফোন দিয়ে আপনার ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার সফলভাবে পরিচালনা করুন।

 

মোবাইলে অফিস অ্যাপ্লিকেশন: আপনার প্রয়োজন অনুযায়ী একটি মোবাইলে অফিস অ্যাপ্লিকেশন সেটআপ করুন। একটি ভালো মানের ডেস্কটপে সাথে মিল রেখে ভাল মানের ব্লুটুথ কিবোর্ড এবং আপনার ফোনের জন্য একটি স্ট্যান্ড রাখুন।

 প্রোডাক্টিভিটি অ্যাপস : কিছু প্রোডাক্টিভিটি অ্যাপস যেমন- মাইক্রোসফট অফিস, গুগল ওয়ার্কস্পেস এবং ট্রেলো, আসানা বা নোশন- এর মতো প্রোডাক্ট ম্যানেজমেন্ট টুল ব্যবহার করুন। ব্যবহার করা শিখুন। এগুলো শিখতে কিছুটা সময় লাগলেও মনোযোগ দিয়ে শিখুন। এতে করে অনলাইন মার্কেটপ্লেস থেকে ইনকাম করতে পারবেন।

 

কন্টেন্ট রাইটিং এর কাজ: বর্তমানে ফ্রিল্যান্সিং জগতে যেসব কাজ রয়েছে তার ভিতরে সবচেয়ে জনপ্রিয় একটি পেশা হচ্ছে কন্টেন্ট রাইটিং। এই একটি কাজ করে অল্প পরিশ্রমে বেশি টাকা অনলাইন মার্কেটপ্লেস থেকে ইনকাম করা যাবে। সবচেয়ে মজার ব্যাপার হলো এই কাজটি আপনার হাতে থাকা মোবাইল ফোন দিয়ে করতে পারেন অনায়াসে। কারণ এই কাজের জন্য মাত্র টেক্সট এডিটর অ্যাপ থাকলেই চলবে।

আর এই অ্যাপস দিয়ে খুব সহজেই সুন্দরভাবে কন্টেন্ট এর কাজ সম্পাদন করতে পারবেন। আপনার ফোনে গুগল ডক্স, ডব্লিউপিএস অফিস, মাইক্রোসফ্ট অফিস ওয়ার্ড, নোট প্যাড অ্যাপসগুলো ইন্সটল করে হয়ে যেতে পারে কন্টেন্ট রাইটার।

 

ওয়েব ডিজাইনের এর কাজ: ফ্রিল্যান্সিং জগতে আরো কিছু কাজের মধ্যে একটি হলো ওয়েব ডিজাইনের কাজ। এই কাজটি শিখে খুব সহজেই অনলাইন মার্কেটপ্লেস থেকে অধিক পরিমাণ অর্থ উপার্জন করতে পারবেন। তবে আপনি যদি মোবাইল দিয়ে ওয়েব ডিজাইনের কাজ করতে চান তাহলে আপনি শুধু বেসিক বিষয়গুলো করতে পারবেন। যেমন- এইচটিএমএল (html), সিএসএস (css)।

আর যদি প্রফেশনাল ওয়েব ডিজাইন করতে চান তাহলে অবশ্যই একটি পিসি বা ল্যাপটপ প্রয়োজন হবে। মোবাইল দিয়ে ওয়েব ডিজাইন এর বেসিক কাজগুলো সম্পাদন করার জন্য আপনি গুগল প্লে স্টোর থেকে যে অ্যাপসগুলো ইন্সটল করবেন, তা হলো- ফ্রি কোড ক্যাম্প, ডাব্লিউথ্রিস্কুলস, প্রোগ্রামিং হিরো, সলো লার্ন।

 ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট-এর কাজ: আমাদের দৈনন্দিন জীবনে যেমন নিজের কাজ সহজ করার জন্য পার্সোনাল অ্যাসিস্ট্যান্ট রাখি ঠিক তেমনি অনলাইনেও এই ধরনের কাজ পাওয়া যায়। যাকে ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট বলা হয়। এই কাজ করে মোটামুটি ভালো ইনকাম করতে পারবেন। যে বা যারা ব্যস্ত মানুষ, অনলাইনে সময় দিতে পারে না। তারাই মূলত অনলাইনের ছোট বা বড় কাজগুলো সম্পাদন করতে এক বা একাধিক ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবে দায়িত্ব প্রদান করে।

এই ধরনের কাজ গুলো মার্কেটপ্লেসে বেশি দেখা যায়। এই কাজগুলোও আপনি প্রয়োজনীয় মোবাইল অ্যাপস দিয়ে করতে পারবেন।

 

সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজারের কাজ: এই কাজটিও অনেকটা ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট-এর মতই। ধরুন, আপনি কোন একটা কিছু কিনতে চাচ্ছেন। সে জিনিসটি কিনতে বিভিন্ন বিষয়ে জানা বা যাচাই বাছাই করার প্রয়োজন পড়ে। এই সব বিষয় জানতে অবশ্যই ঐ পণ্য বা সেবাটির সোশ্যাল মিডিয়ার অফিসিয়াল পেইজে নক দিবেন। আপনার প্রশ্নের উত্তরগুলো সেই ফেসবুক পেজ থেকে অল্প সময়ে জেনে নিতে পারবেন।

আপনি যেসব উত্তর জানতে পারলেন সে কথাগুলো আপনাকে অপর প্রান্তে থাকা মানুষ হাতে টাইপ করে দিয়েছে। যে এই কাজ করছে তাকে ঐ কোম্পানি টাকার বিনিময়ে রেখেছেন। আপনি যদি মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং করতে চান তাহলে এই কাজ করে মোটা অঙ্কের অর্থ ইনকাম করতে পারবেন।

 

গ্রাফিক্স ডিজাইনের কাজ: অনলাইন মার্কেটপ্লেসে সবচেয়ে জনপ্রিয় কাজ গ্রাফিক্স ডিজাইন। একজন গ্রাফিক্স ডিজাইনারের মাসিক আয় কখনো কখনো লাখ টাকা। আপনি যদি গ্রাফিক্স ডিজাইনকে আলাদা একটি সেক্টরে ভাগ করেন তাহলে আপনি অনেক বিষয় পাবেন যা গ্রাফিক্সের সাথে সম্পর্কিত। যেমন - লোগো ডিজাইন, ভেক্টর ডিজাইন, ব্যানার ডিজাইন ইত্যাদি ভাগে বিভক্ত করতে পারবেন।

আর এগুলো আপনি মোবাইল দ্বারাই তৈরি করতে পারবেন। এই জন্য আপনাকে বেশ কিছু অ্যাপস বা ওয়েবসাইটে ব্যবহার করতে হবে। যেমন – পিক্সল্যাব, পিক্সআর্ট, ক্যানভা প্রো, এডোভি ফটোশপ। এর বাইরেও আরো অ্যাপস আছে, যেগুলোর মাধ্যমে আপনি মোবাইল দিয়ে গ্রাফিক্স ডিজাইনারের কাজ করতে পারবেন সহজেই।