ই-সিমের প্রধান সুবিধা হলো, সিম অপারেটর পরিবর্তন করলে কার্ড পরিবর্তনের প্রয়োজন পড়ে না। এমনকি ফোন ভিজে গেলেও এটি কাজ চালিয়ে যেতে পারে। যেহেতু বারবার খুলে-বন্ধ করার ঝামেলা নেই, তাই ই-সিম নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনাও কম থাকে।
ই-সিম ও নরমাল সিমের পার্থক্য
নরমাল সিম বা প্রচলিত সিম কার্ড হলো প্লাস্টিক ও অন্যান্য উপাদান দিয়ে তৈরি একটি ছোট ডিভাইস, যা ফোনে প্রবেশ করিয়ে ব্যবহার করতে হয়।
অন্যদিকে ই-সিম হলো ডিজিটাল বা ভার্চুয়াল সিম, যা এক ধরনের মোবাইল অ্যাপের মতো কাজ করে। এটি ব্যবহার করতে হলে ফোনে একটি কিউআর কোড স্ক্যান করে সক্রিয় করতে হয়।
ই-সিমের সুবিধা
ই-সিমের প্রধান সুবিধা হলো, সিম অপারেটর পরিবর্তন করার সময় সিম কার্ড পরিবর্তন করতে হয় না। ফোন ভিজে গেলেও এটি কাজে বাধা সৃষ্টি করে না। যেহেতু বারবার খুলে-বন্ধ করার ঝামেলা নেই, তাই ই-সিম নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম।
আরও পড়ুন:
এছাড়া, একাধিক নম্বর একই ফোনে ব্যবহার করা যায়। এজন্য নতুন সিম কিনতে হয় না, শুধু ই-সিমের নম্বর সক্রিয় করতে হবে। এক ফোনে একসঙ্গে সর্বোচ্চ পাঁচটি ই-সিম ব্যবহার করা সম্ভব, যদিও বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তিনটির বেশি ব্যবহার সীমাবদ্ধ হতে পারে।
ই-সিম অন্য দেশে গেলে ও ব্যবহারযোগ্য, যেখানে এটি স্থানীয় নম্বর পাওয়ার সুবিধা দেয়। ফলে এক ফোনে সহজে কাজ ও ব্যক্তিগত নম্বর আলাদা রাখা যায়।
ই-সিম ব্যবহারের অসুবিধা
ই-সিম ব্যবহারের কিছু অসুবিধা রয়েছে। এক ফোন থেকে অন্য ফোনে সরাসরি ই-সিম স্থানান্তর করা সম্ভব নয়; নতুন ফোনে ই-সিম আবার সক্রিয় করতে হয়।
যদিও এক ফোনে একাধিক ই-সিম সংরক্ষণ করা যায়, সবগুলো একসঙ্গে সক্রিয় রাখা সম্ভব নয়। ফলে কল আসলে এক নম্বর সক্রিয় থাকে, অন্যগুলো অকার্যকর অবস্থায় থাকে।
দেশে ই-সিমের বর্তমান অবস্থা
বাংলাদেশে ই-সিম প্রযুক্তি ক্রমেই জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। গ্রামীণফোন এরইমধ্যেই প্রিপেইড, পোস্টপেইড ও মাইগ্রেশন গ্রাহকদের জন্য ই-সিম সেবা চালু করেছে। রবি ও এয়ারটেলও এ সেবা প্রদান করছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ২০২৫ সালের মধ্যে বিশ্বজুড়ে প্রায় ৩.৪ বিলিয়ন ব্যবহারকারী ই-সিমে অভ্যস্ত হয়ে যাবে।
সব ফোনে নেই ই-সিম সাপোর্ট
সব ধরনের স্মার্টফোন এখনও ই-সিম সমর্থন করে না। সাধারণত আইফোন, গুগল পিক্সেল, স্যামসাং, অপো ও সনির কিছু মডেলে ই-সিম সুবিধা পাওয়া যায়।
যদিও ই-সিম প্রযুক্তি এখনও অনেকের কাছে নতুন, এর সুবিধা এবং ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা খুবই বড়। ধীরে ধীরে এটি আমাদের স্মার্টফোন ব্যবহারের পদ্ধতিতে পরিবর্তন আনছে।
প্রযুক্তির উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে এর কিছু সীমাবদ্ধতাও কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হবে, এবং ভবিষ্যতে ই-সিম স্মার্টফোন ব্যবহারের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে উঠবে।





