পরিবেশ ও জলবায়ু
0

নওগাঁর মৃতপ্রায় অধিকাংশ নদী-খাল

নওগাঁয় ছোট-বড় মিলিয়ে সাতটি নদী রয়েছে। বর্ষায় নদীতে পূর্ণ যৌবন ফিরলেও শুষ্ক মৌসুমে মৃতপ্রায়। নদী খনন না করায় চাপ বাড়ছে ভূগর্ভস্থ পানির ওপর। নদী-খালের স্বাভাবিক অবস্থা না থাকায় পরিবেশের ওপরও পড়ছে বিরূপ প্রভাব। এ অবস্থায় জেলার নদী ও খাল খননের দাবি স্থানীয়দের।

নওগাঁর শহরের মাঝ দিয়ে বয়ে চলেছে খরস্রোতা যমুনা নদী। একসময় এর পূর্ণ যৌবন থাকলেও এখন কিছু দূর সামনে যেতেই চোখে পড়বে বালুচর। আবার কোথাও কোথাও হাঁটু কিংবা বুক সমান পানি।

গত চার দশক আগেও এই নদী ছিল উত্তাল। নদী ঘিরে গড়ে উঠেছিল বিভিন্ন ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান। মাছ শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করতো মৎস্যজীবীরা। তবে দীর্ঘদিন নদীটি সংস্কার ও খনন না করায় এখন এটি পরিণত হয়েছে গরু-ছাগলের গোচারণ ভূমিতে। আর নদীর যেখানে পানি রয়েছে সেখানে কৃষকরা ফসল চাষ করছেন।

জেলায় ছোট যমুনা, আত্রাই, তুলসীগঙ্গাসহ সাতটি নদী রয়েছে। যার মোট দৈর্ঘ্য প্রায় ৪০৫ কিলোমিটার। এরমধ্যে গত তিন বছরে মাত্র ৭২ কিলোমিটার খনন করা হয়েছে। দীর্ঘদিনে সংস্কার ও খননের অভাবে পলিপড়ে ভরাট হয়ে গেছে বাকি নদী। পেশা বদলাতে বাধ্য হচ্ছেন মৎস্যজীবীরা।

স্থানীয়দের একজন বলেন, 'নদী ভরাট হয়ে যাচ্ছে দিন দিন। পানি থাকে না। যার ফলে ফসলের মাঠে সেচ দেয়া কষ্ট হয়ে যাচ্ছে।' 

আরেকজন বলেন, 'নদী যদি খনন করা হয় তাহলে  আমরা সারাবছর পানি পাবো। যেকোনো ফসল করতে সুবিধা আছে।'

মৎস্যজীবীদের একজন বলেন, 'এখন মাছ ধরা হয় না। রিকশা চালিয়ে জীবনযাপন করছি।'

যতটুকু অংশে পানি আছে সেখানেও দখল ও দূষণের দৌরাত্ম্যে কমছে পানি। এ কারণে নদী কিংবা খাল থেকে সেচের জন্য প্রয়োজনীয় পানি পাচ্ছেন না কৃষকরা। এ অবস্থা থেকে উত্তরণে আন্দোলন করেও কাঙ্ক্ষিত সমাধান মেলেনি বলছেন পরিবেশবিদরা।

একুশে পরিষদ নওগাঁর সাধারণ সম্পাদক এম এম রাসেল বলেন, 'বিভিন্ন বাণিজ্যিক কেন্দ্র, বসতভিটা দখল করার যে পায়তারা চলছে তাতে নদী রক্ষা করা যাবে না। দখল ও দূষণ যদি বন্ধ না করা যায় তাহলে নদী থাকবে না।'

পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছে নদী ও খাল খননের জন্য আবেদন করা হয়েছে। অর্থ বরাদ্দ পেলেই খনন কাজ শুরু করা হবে।

নওগাঁর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ফয়জুর রহমান বলেন, '৪৮ নদী খাল খননের জন্য দ্বিতীয় প্রজেক্টে অন্তভূর্ক্ত করা হয়েছে। যদি প্রকল্পটি পাস হয় থাকে তাহলে নওগাঁ জেলাসহ সারা বাংলাদেশে খাল ও নদী খননের কাজ শুরু হবে।'

নদীর নাব্যতা ফিরিয়ে আনতে এবং প্রাণ-প্রকৃতি রক্ষায় শিগগিরই নদী খননের দাবি এলাকাবাসীর।

ইএ