পরিষেবা
অর্থনীতি
0

কুইক রেন্টালে দায়মুক্তি কেনো অবৈধ নয় জানতে রুল জারি হাইকোর্টের

কুইক রেন্টালে দায়মুক্তি কেনো অবৈধ নয়- জানতে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে পছন্দের ব্যক্তিকে কুইক রেন্টালের কাজ দেয়া নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন উচ্চ আদালত। বছরের বেশিরভাগ সময়েই এই ভাড়াভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর উৎপাদন বন্ধ থাকতো। যদিও গেল অর্থবছরে বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর ক্যাপাসিটি চার্জ ছিল ৩২ হাজার কোটি টাকা। যার বেশিরভাগই গিয়েছে কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর পরিচালন ব্যয়ে।

এক সময় বিদ্যুতের চাহিদা মেটাতে জরুরিভাবে চালু করা হয়েছিল ভাড়াভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র যা সবার কাছে কুইক রেন্টাল পাওয়ার প্ল্যান্ট নামে পরিচিত। বিদ্যুৎ সরবরাহে বেশ সাড়াও ফেলেছিলো এগুলো। এসব কাজে মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী ও সিন্ডিকেটের লোকেরা অতিমাত্রায় লাভবান হওয়ার জন্য বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি নামে একটি আইন করে। যার সরাসরি অর্থ দাঁড়ায় বিনা টেন্ডারে কাজের দায়মুক্তি।

কুইক রেন্টারেলের নামে সব বিদ্যুৎ কেন্দ্রে বছরের পর বছর ক্যাপাসিটি চার্জের নামে চলেছে তুঘলুঘি। গত ১৪ বছরে এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোতে নয়ছয় হয়েছে ১ লাখ ৫ হাজার কোটি টাকা।

শুধু ২০২৪-২৫ অর্থবছরেই বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর ক্যাপাসিটি চার্জ বাবদ বিগত সরকার বরাদ্দ রেখেছিল ৪০ হাজার কোটি টাকা। যার বেশিরভাগই ব্যয় হতো কুইক রেন্টালে।

বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি আইন ২০১০ করে বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয় পছন্দের ব্যবসায়ীদের উচ্চমূল্যের বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য অনুমোদন দেয়। আর এসব বেসরকারি বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোকে ৮০ থেকে ৮৫ শতাংশ সক্ষমতায় ব্যবহার করা হবে- এমন শর্তে লাইসেন্স দেওয়া হলেও এসব কেন্দ্র গড়ে চলেছে ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ। অর্থাৎ কেন্দ্রগুলো থেকে বছরের ৭০ থেকে ৭৫ ভাগ সময় বিদ্যুৎ উৎপাদন না করেই অলস বসে ছিল।

এই আইনের কয়েকটি ধারা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে একটি রিট করা হয়। ধারাগুলোতে বলা হয়, এই আইনের অধীনে কোন কাজ বা নির্দেশের বৈধতা নিয়ে আদালতে প্রশ্ন তোলা যাবে না।

আজ (সোমবার, ২ সেপ্টেম্বর) বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি শশাঙ্ক শেখর সরকারের হাইকোর্ট বেঞ্চ রিটের শুনানি করে রুল জারি করেন। রুলে বলা হয়, অনৈতিক সুবিধা দিতে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সংক্রান্ত বিধানের তিনটি ধারা কেনো অবৈধ নয়।

আইনজীবী বলেন, মন্ত্রীকে একচ্ছত্র ক্ষমতা ও লুটপাটের সুযোগ দিতেই এই আইনটি করা হয়েছে।

রিটকারিদের আইনজীবী শাহদীন মালিক বলেন, '৯ ধারায় বলা হয়েছে যেসব চুক্তি হয়েছে কুইক রেন্টাল পাওয়ার প্ল্যান্ট নামে সংক্রান্ত বিধানের তিনটি ধারায় কোনো আদালতে চ্যালেন্জ করা যাবে না ও মামলা করা যাবে না। সেটা তো হতে পারে না। এছাড়া ৬ এর দুই ধারায় সাবেক বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রীকে কোনো কোম্পানির সাথে চুক্তি করার একক একতিয়ার দেয়া হয়েছে।'

২০২৩-২৪ অর্থবছরে বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর ক্যাপাসিটি চার্জ ছিল ৩২ হাজার কোটি টাকা। যার বেশিরভাগই গিয়েছে কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর পরিচালন ব্যয়ে।

আইন সচিব, অর্থ বিভাগের সচিব, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি বিভাগের সচিব, পেট্টোবাংলার চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্টদের রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

tech

এই সম্পর্কিত অন্যান্য খবর