দেশে এখন , পরিবেশ ও জলবায়ু
অর্থনীতি
0

তীব্র গরমে স্বাভাবিক কর্মক্ষমতা হারাচ্ছে মানুষ

তীব্র গরমের প্রভাব পড়ে শ্রমিক নির্ভর অর্থনীতিতে। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, গরমে অধিক শ্রমে নানাবিধ রোগ-শোকে আক্রান্ত হয়ে স্বাভাবিক কর্মক্ষমতা হারাচ্ছেন মানুষ।

বৈশাখ মাসের কড়া রোদ মাথার ওপর। রোদের তাপে চোখ মিলে তাকানোই যেন দায়। তবুও জীবিকার তাগিদে ছুটছেন নুর হোসেন আর ফরিদ উদ্দিন। এই শহরে তাদের টিকে থাকার লড়াই দুই দশকের। মালবোঝাই ভ্যানে আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে থাকা পরিশ্রমে বাগড়া দিয়েছে তপ্ত রোদ আর অস্বস্তির গরম। বছরের পর বছর কায়িক শ্রমে অনেকটা সয়ে যাওয়া শরীরও কাহিল হয়ে পড়ছে। ঝরে পড়া ঘামের স্রোত যেন জানান দেয় আর সইছে না এই তাপ।

শ্রমিকরা বলেন, ‘যে কামাই কোনোমতে সংসার চলে। ফল খাবো কীভাবে? ভালো খাবারই আমরা কিনে খেতে পারি না।’

ভ্যানচালক নুর হোসেন কিংবা ফরিদ উদ্দিনই নয় তাদের মতো শহরের কয়েক লাখ শ্রমজীবী মানুষদের চিত্র একই। হাঁসফাঁস করা গরমে কাহিল হওয়া শরীর চাঙা করতে শুধু পানি আর পথের শরবত দিয়েই বারবার শুষ্ক গলা ভিজিয়ে নেওয়া চেষ্টা তাদের। এ সময় রোগ-শোকে আক্রান্ত হলে তা প্রতিরোধে পুষ্টিকর খাবার কিংবা ওষুধ কিনতে যে পরিমাণ আর্থিক স্বচ্ছলতা প্রয়োজন তা অধিকাংশ শ্রমজীবী মানুষের নেই।

সদরঘাটের মাঝিরা বলেন, ‘আগে সারাদিন কাজ করছি। এখন বেশি কাজ করতে পারছি না। এই গরমে আমাদের খুব কষ্ট হয়। আর যেটুকু পারি সেটুকুই খাই, ভালো খাবার কোথায় পাবো?’

তীব্র এই গরমে অনিয়ন্ত্রিত পরিশ্রমের ফলে একজন মানুষের শরীরে পানিশূন্যতা, মানসিক স্বাস্থ্যের ঝুঁকি, হিট স্ট্রোক, চর্মরোগ, ডায়রিয়া/বদহজম, টাইফয়েড ও হেপাটাইসিস, সর্দি-কাশিসহ নানাবিধ রোগ দেখা দিতে পারে।

পুষ্টিবিদ ইসরাত জাহান নাদিয়া বলেন, এই সময়ে রোগ প্রতিরোধে শরীরের জন্য দরকার বাড়তি যত্ন। পাশাপাশি স্বাস্থ্যসম্মত খাবার প্রয়োজন। এর কমতি হলে মানসিক, শারীরিক ক্ষতির পাশাপাশির মৃত্যুর ঝুঁকি বেড়ে যায়।

শুধু স্বাস্থ্যগত ঝুঁকিই না তীব্র গরম শ্রম অর্থনীতিতেও প্রভাব ফেলে। কমে যায় মানুষের স্বাভাবিক কর্মক্ষমতাও। অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক এম এম আকাশ বলেন, শ্রমজীবী মানুষদের স্বল্প আয় দিয়ে নিজের কিংবা পরিবারের বাড়তি যত্ন নেওয়ার সক্ষমতা নেই। যার প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ প্রভাব অর্থনীতিতে পড়ছে।