দর্শক খরায় বন্ধ হচ্ছে একের পর এক সিনেমা হল

এখন জনপদে
0

শিল্পকলার শক্তিশালী বিনোদন মাধ্যম এবং শিক্ষার অন্যতম উপকরণ হিসেবে খ্যাতি রয়েছে চলচ্চিত্রের। তবে দর্শক খরায় দেশে একের পর এক বন্ধ হয়েছে সিনেমা হল। এবার সেই তালিকায় যুক্ত হয়েছে ময়মনসিংহের 'পূরবী' সিনেমা হল। টানা লোকসানের ফলে প্রাচীন এই সিনেমা হল ভেঙে ফেলার কথা জানায় মালিক পক্ষ।

প্রেক্ষাগৃহের এক সময়ের ব্যস্ত টিকিট কাউন্টারে শিকারের আশায় জাল পেতেছে মাকড়শারা। খেই হারানো গপ্পে দর্শকের চোখে মুখে মুগ্ধতা এখন কেবলই স্মৃতি।

ষাটোর্ধ ইউনুস আলী। অবাক চোখে দেখছেন শৈশব, কৈশোর আর যৌবনের নানা স্মৃতি জড়ানো পূরবী সিনেমা হলের ধ্বংসস্তূপ। শুধু সিনেমা দেখার জন্যই এই হলে চাকরি করেছেন এক যুগেরও বেশি। পরে পেশা বদলালেও কাটেনি সিনেমার নেশা।

স্বাধীনতার আগে প্রতিষ্ঠিত ময়মনসিংহের 'পূরবী' সিনেমা হলটি ৮০ ও ৯০ এর দশকে ছিল ব্যাপক জনপ্রিয়। কিন্তু দর্শক খরায় দেশের অন্যান্য প্রেক্ষাগৃহের মতো ভেঙে ফেলা হচ্ছে এই হলও। তবে, সরকারি সহায়তা পেলে নতুন ভবনে সিনেপ্লেক্স চালু করা সম্ভব বলে জানান হল মালিকরা।

পূরবী সিনেমা হলের মালিক আব্বাস আলী বলেন, ‘বহুতল ভবন যেহেতু হচ্ছে, আমারও আশা আছে জনগণের কথা মানতে এখানে একটা সিনেমা হল থাকুক। আমার আশা আছে রাখবো। যদি সরকার আমাকে সহায়তা করে, লোন দেয়।’

ছায়াবানি সিনেমা হলের ব্যবস্থাপক মোহন খান বলেন, ‘মনপুরা, আয়নাবাজি এবং হাওয়া এগুলোতে ব্যবসা হয়েছে, সবাই দেখেছে। ভালো গল্প থাকতে হবে, ভালো মেকার থাকতে হবে। তাহলে সিনেমা ভালো চলবে।’

চলচ্চিত্র শিল্পকে বিকশিত করতে প্রেক্ষাগৃহ নির্মাণের বিকল্প নেই। তাই এই শিল্পের সুরক্ষায় সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান বিশ্লেষকরা।

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিল্ম অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ড. মো. তুহিনুর রহমান বলেন, ‘সম্মিলিতভাবে এই চেতনা বোধে জাগ্রত হতে হবে যে, চলচ্চিত্র আমাদের জাতীয় সম্পদ। কাজেই এটিকে দর্শকের কাছে নিয়ে যাওয়া দরকার। এবং প্রেক্ষাগৃহ আসলে তৈরি করতে হবে।’

ময়মনসিংহে একসময় 'অজন্তা', 'ছায়াবাণী', 'অলকা', 'পূরবী' ও 'সেনা অডিটোরিয়ামসহ পাঁচটি সিনেমা হল ছিল। তবে, এরমধ্যে কেবল টিকে আছে শুধু 'ছায়াবাণী' সিনেমা হল।

এএইচ