চট্টগ্রাম বন্দরে অবৈধ পণ্য মজুত ঠেকাতে নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ডের অভিযান

দেশে এখন
এখন জনপদে
0

চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙ্গরে লাইটার জাহাজে অবৈধভাবে পণ্য মজুত ঠেকাতে যৌথ অভিযান পরিচালনা করেছে নৌবাহিনী, কোস্টগার্ড ও বন্দর কর্তৃপক্ষ। সম্প্রতি রমজান ঘিরে বিপুল পরিমাণ ভোজ্যতেল ও নিত্যপণ্য আমদানি করেন সারাদেশের ব্যবসায়ীরা। অভিযোগ ওঠে এসব পণ্য বাজারে সরবরাহ না করে সাগরে লাইটার জাহাজে ভাসমান গুদাম বানিয়ে মজুত করে রেখেছেন কোন কোন ব্যবসায়ী। এতে দেখা দিয়েছে লাইটার জাহাজ সংকটও। অভিযানে নানা অভিযোগে জরিমানা করা হয় বেশ কয়েকটি লাইটার জাহাজকে।

চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙ্গরে পৃথিবীর নানা প্রান্ত থেকে ভোগ্যপণ্য নিয়ে আসে দেশি-বিদেশি জাহাজ। বছরে প্রায় ৯ থেকে ১২ কোটি টন পণ্য খালাস হয় বহির্নোঙ্গরে। পরে ছোট ছোট লাইটার জাহাজে এসব পণ্য চলে যায় সারাদেশে। প্রায় আঠারোশো লাইটার জাহাজ নিয়োজিত এ কাজে।

এবারের রমজানে গত বছরের চেয়ে বেশি ভোগ্যপণ্য আমদানি হয়েছে। এসব পণ্য বাজারে একসাথে ঢুকলে দাম কমে যাবে এমন আশঙ্কায় লাইটার জাহাজকে ভাসমান গুদাম বানিয়ে রেখেছেন কোন কোন ব্যবসায়ী। এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে বুধবার সকাল থেকে শুরু হয় অভিযানে নামে নৌবাহিনী, কোস্টগার্ড ও বন্দরে কর্তৃপক্ষের তিনটি জাহাজ। এ সময় ৮ থেকে ১০টি জাহাজের পণ্য ও কাগজপত্র খতিয়ে দেখা হয়।

কর্মকর্তারা জানান, লাইটার জাহাজে অবৈধভাবে পণ্য মজুত করলে একদিকে যেমন বাজারে সরবরাহে ঘাটতি পড়ে, অন্যদিকে লাইটার জাহাজেরও সংকট তৈরি হয়। ফলে পণ্যবাহী বড় জাহাজগুলো লাইটার জাহাজ পায় না পণ্য খালাসের জন্য। তাই কর্তৃপক্ষ পণ্য বোঝাইয়ের ৭২ ঘণ্টার মধ্যে বন্দরসীমা ত্যাগের নির্দেশ দিয়েছে লাইটার জাহাজগুলোকে। তারপরেও কোনো অনিয়ম হচ্ছে কি না তা খতিয়ে দেখতেই এই অভিযান বলছেন কর্মকর্তারা।

বাংলাদেশ নৌবাহিনীর লে. কমান্ডার সৈয়দ সাজ্জাদুর রহমান বলেন, ‘যারা ৭২ ঘণ্টার বেশি এখানে থাকছেন তাদের বিরুদ্ধেই আমরা মূলত এই অভিযান পরিচালনা করছি।’

তিনি বলেন, ‘আমরা এখানে অধিকাংশ লাইটার জাহাজই আনলোড পেয়েছি। বেশিরভাগ সময়ই আমরা এখানকার লাইটারগুলোর কাগজপত্রগুলো আপডেটেড পাই না। আজকেও আমরা এরকম ২টা পেয়েছি। আমাদের বন্দরের ম্যাজিস্ট্রেট সাহেব সেগুলো চেক করেছেন।’

বাজারে সয়াবিনের সংকট থাকায় বেশ কয়েকটি তেলবাহী জাহাজ পরিদর্শন করেন অভিযানকারী কর্মকর্তারা। এছাড়া তদারকি করেন জাহাজের লাইসেন্স, ফিটনেস, অগ্নি নিরাপত্তাসহ বিভিন্ন বিষয়। অভিযানে অবৈধভাবে পণ্য মজুতের পরিমাণ কমেছে বলে দাবি তাদের।

চট্টগ্রাম বন্দরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাদিয়া আফরিন বলেন, ‘লাইটার জাহাজগুলোকে স্টোর হিসেবে ব্যবহার করে সয়াবিন তেল মজুত করে বাজারে এর দাম বাড়ানোর প্রচেষ্টা করা হচ্ছে। তবে আমরা যে বিজ্ঞপ্তিটা দিয়েছিলাম এবং আমরা যে ক্রমাগত অভিযান চালাচ্ছি সেটার ভালো প্রভাব পড়েছে।’

রমজানের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত কয়েক দফায় ১ হাজারের বেশি জাহাজে অভিযান চালিয়েছে যৌথ বাহিনী। জরিমানা করা হয়েছে বেশ কয়েকটি জাহাজকে।

এসএইচ