মরুভূমি গ্রহ অ্যারাকিসে পাওয়া যায় বিশ্বজগতের সবচেয়ে মূল্যবান পদার্থ মেলাঞ্জ, প্রচলিতভাবে যা ‘স্পাইস’ নামে পরিচিত। এই স্পাইসের মালিকানা, তত্ত্বাবধান, বাণিজ্য আর হস্তগত করার জন্য ইউনিভার্সের ক্ষমতাধর সত্ত্বাগুলোর মধ্যে প্রতিনিয়ত দ্বন্দ্ব লেগেই থাকত।
এমপেরর শাদ্দাম দ্য ফোর্থের আদেশে অ্যারাকিসের দখল নেয় হাউজ অ্যাট্রেইডিসের ডিউক লেটো অ্যাট্রেইডিস। ডিউক লেটোর সম্পূর্ণ পরিবারের সাথে অ্যারাকিসে আসে তার ছেলে, পল অ্যাট্রেইডিস। পল অ্যাট্রেইডিসের অ্যারাকিস প্রবেশের মধ্য দিয়েই মরুভূমি এই গ্রহের পরিণতি ধাবিত হয় অতি বিস্ময়কর এক ভবিষ্যতের দিকে।
এই ক্ল্যাসিক উপন্যাসকে ২০২১ সালে সিনেমার পর্দায় নিয়ে আসলেন পরিচালক ডেনিস ভিলেনিউভ। মুক্তির পর থেকেই বিশ্বব্যাপী দর্শকদের মন কেড়ে নেয় সিনেমাটি। ২০২১ সালে মুক্তি পাওয়া বিজ্ঞান কল্পকাহিনী নির্ভর সিনেমা ‘ডুন’ বক্স অফিসে সাফল্যের পাশাপাশি ছয়টি ক্যাটাগরিতে অস্কার জিতে নিয়ে রীতিমতো হইচই ফেলে দিয়েছিল বিশ্বব্যাপী। প্রথম পর্বের সাফল্যের পর এর সিকুয়েল নিয়ে আগ্রহ তৈরি হয় দর্শক মহলে।
১৯৬৫ সালে প্রকাশিত ফ্রাঙ্ক হার্বার্টের দুই খণ্ডের উপন্যাস ‘ডুন’-এর দ্বিতীয় খণ্ডের ওপর ভিত্তি করে নির্মিত হয়েছে নতুন সিক্যুয়েল। এবারের পর্বেও থাকছেন টিমোথি চালামেট, রেবেকা ফার্গুসন, জোশ ব্রোলিন, স্টেলান স্কারসগার্ড এর মতো তারকারা। নতুন চরিত্রে এবার আগমন ঘটেছে অস্টিন বাটলার, ফ্লোরেন্স পিউগ-এর মতো তারকাদের।
২০১৬ সালে প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান লিজেন্ডারি এন্টারটেইনমেন্ট ডিউন উপন্যাসের স্বত্ব কিনে নিয়ে উপন্যাসের ওপরে দুই খণ্ডের চলচ্চিত্র নির্মাণ করার পরিকল্পনা করে। ২০২১ সালের অক্টোবরে শুরু হয় এর দ্বিতীয় পর্ব নির্মাণের কাজ। ২০২২ সালের জুলাই থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে বুদাপেস্ট, ইতালি ও আবুধাবিতে সিনেমার কাজ সম্পন্ন হয়।
ভবিষ্যৎ মহাবিশ্বের প্রেক্ষাপটে ডিউন-এর গল্পে মিথস্ক্রিয়া করেছে রাজনীতি, ধর্ম, বাস্তুসংস্থান, প্রযুক্তি ও মানবিক আবেগ। আর এর সবকিছু ঘুরপাক খেয়েছে আরাকিস নামের গ্রহ ও এর মূল্যবান খনিজ ঘিরে। গল্পের মূল চরিত্র পল অ্যাট্রেইডেস। সিনেমাতে দেখা যাবে, এমন কিছু ক্ষমতা ও আশীর্বাদ নিয়ে তার জন্ম, যা পলের নিজেরই অজানা। মহাবিশ্বের সবচেয়ে ভয়ংকর গ্রহে পরিবার ও নিজের সদস্যদের রক্ষা করতে তাকে সংগ্রাম করতে হয়। এ নায়ক মানুষের সর্বোচ্চ ক্ষমতা অর্জন করতে পারে। আর তা হলো, ভয়কে জয় করে অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখা।
তাহলে বলাই যায়, অতিপ্রাকৃতিক ক্ষমতা, চমকপ্রদ অ্যাকশন, রাজনীতির মারপ্যাঁচ- সব মিলিয়ে ‘ডুন’-এর সায়েন্স ফিকশনের প্রত্যেকটি উপাদান দর্শক মনে জায়গা করে নেবে। আলোচিত কিছু সত্যের কারণেই প্রায় ৬০ বছর পরে আজও ফ্র্যাংক হারবার্টের অনবদ্য এই সৃষ্টির আবেদন কমেনি এতটুকুও।