৭৫ বছরে চলে যাওয়া চলচ্চিত্রাকাশের এ ধ্রুবতারা দীর্ঘ ৫০ বছরের ক্যারিয়ারে যা দিয়ে গেছেন, তার ঋণ কখনোই শোধ করতে পারবে না এ দেশের সিনেমাঙ্গন। অসংখ্য জনপ্রিয় ও কালজয়ী সিনেমা উপহার দিয়ে গেছেন তিনি। যেসব সিনেমা যুগ যুগ ধরে যেমন দর্শকের মনে গেঁথে থাকবে, তেমনি নায়করাজকেও বাঁচিয়ে রাখবে আজীবন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এ উজ্জ্বল তারকার মৃত্যুবার্ষিকীকে ঘিরে বিএফডিসিতে প্রতিষ্ঠিত কোনো সমিতিরই বিশেষ কোনো আয়োজন নেই। তবে গণমাধ্যমগুলো নায়করাজের এ জন্মদিনে বিশেষ শ্রদ্ধা জানানোর উদ্যোগ নিয়েছে।
বিশেষ করে বেশ কয়েকটি টিভি চ্যানেল নায়করাজের প্রয়াণ দিবস উপলক্ষে বিভিন্ন অনুষ্ঠানেরও আয়োজন করেছে, যা সবসময়ই করে আসে গণমাধ্যমগুলো।
বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি রাজ্জাক আজ থেকে ৫৮ বছর আগে অর্থাৎ ১৯৬৬ সালে ‘১৩ নং ফেকু ওস্তাগার লেন’ সিনেমায় ছোট্ট একটি চরিত্রে অভিনয় করে চলচ্চিত্র অঙ্গনে তার যাত্রা শুরু করেন।
তবে জহির রায়হানের ‘বেহুলা’ সিনেমায় অন্যতম প্রধান চরিত্রে অভিনয় করে চলচ্চিত্রে নিজের অবস্থান গড়ে নেন তিনি। এরপর থেকে টানা কয়েক দশক প্রধান নায়ক হিসেবেই তিনি অভিনয় করে গেছেন।
আরও পড়ুন:
তার অভিনীত অনেক উল্লেখযোগ্য সিনেমা রয়েছে, যার মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে— ‘কাগজের নৌকা’, ‘রংবাজ’, ‘আমার জন্মভূমি’, ‘স্বপ্ন দিয়ে ঘেরা’, ‘ঝড়ের পাখি’, ‘স্বরলিপি’, ‘আলোর মিছিল’, ‘বেঈমান’, ‘আবির্ভাব’, ‘মনের মতো বউ’, ‘জীবন থেকে নেয়া’, ‘ দর্পচূর্ণ’, ‘যে আগুনে পুড়ি’, ‘টাকা আনা পাই’, ‘নাচের পুতুল’, ‘ওরা ১১ জন’, ‘অবুঝ মন’, ‘অনন্ত প্রেম’, ‘ছুটির ঘণ্টা’, ‘আনার কলি’, ‘রজনীগন্ধা’, ‘বড় ভালো লোক ছিল’, ‘তওবা’, ‘চাপা ডাঙ্গার বউ’ ও ‘সন্ধি’ সিনেমাগুলো।
নায়করাজ রাজ্জাক মোট পাঁচবার শ্রেষ্ঠ অভিনেতা ক্যাটাগরিতে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান। ১৯৭৬ সালে ‘কী যে করি’, ১৯৭৮ সালে ‘অশিক্ষিত’, ১৯৮২ সালে ‘বড় ভালো লোক ছিল’, ১৯৮৪ সালে ‘চন্দ্রনাথ’, ১৯৮৮ সালে ‘যোগাযোগ’ চলচ্চিত্রের জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান।
এছাড়াও ২০১৩ সালে চলচ্চিত্রে সামগ্রিক অবদানের জন্য আজীবন সম্মাননা পুরস্কার পান, ২০১৫ সালে পান স্বাধীনতা পুরস্কার।
এছাড়া বাচসাস, মেরিল-প্রথম আলোসহ (আজীবন সম্মাননা) আরও অসংখ্য পুরস্কারে ভূষিত হন তিনি। এত পুরস্কারের ভিড়েও ইউনিসেফের জনসংখ্যা-বিষয়ক শুভেচ্ছাদূত হওয়াটাও তার জীবনের অন্যতম সেরা প্রাপ্তি হয়ে থাকবে।





