জুলাই-আগস্টে গণঅভ্যুত্থানে প্রাণ হারায় দেড় হাজার ছাত্র-জনতা। দেশজুড়ে উত্তাল আন্দোলনে চব্বিশের ৫ আগস্ট দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা। দায়িত্ব নেয় অন্তর্বর্তী সরকার। জোরালো হয় গণহত্যার বিচারের দাবি।
অভ্যুত্থানের পেরিয়েছে ৮ মাস, কিন্তু এখনো জমা পড়েনি কোনো তদন্ত প্রতিবেদন। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর কাছে প্রশ্ন ছিল, গণহত্যার বিচার করতে আর কতটা সময় প্রয়োজন?
চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম বলেন, ‘এখনো অভিযোগ আসছে, সেগুলো তদন্ত হচ্ছে। আমরা যেটা বলতে পারি, অন্তত চারটা মামলার তদন্ত শেষ পর্যায়ে আছে। এ মাসে তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়া যাবে এবং এ মাসে আনুষ্ঠানিক বিচারের জন্য যে ফর্মাল চার্জ দাখিল করা সে কাজটা এ মাসের মধ্যে করা সম্ভব। আমরা কোনো টাইমলাইন বেধে দিচ্ছি না।’
এদিকে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া বলেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটরদের কাজে কিছুটা ধীরগতি রয়েছে। তবে তা অভিজ্ঞতার কারণেই।
তিনি বলেন, ‘আসলে ৮ মাস হয়ে গেলেও আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল কাজ শুরু করেছে আরো পরে। সেটার গঠন, প্রসিকিউটর নিয়োগ সব কিছুই বিলম্বিত হয়েছে। যারা নিয়োগপ্রাপ্ত হয়েছেন তাদের অধিকাংশই আগে ডিফেন্সের আইনজীবী হিসেবে কাজ করেছেন। প্রসিকিউশনের কাজও তো তাদের বোঝার ব্যাপার আছে। তো আমার মনে হয়েছে কিছুটা অনভিজ্ঞতা, কিছুটা সমন্বয়হীনতা, কিছুটা অনীহা সবকিছু মিলিয়ে একটা অচলাবস্থার তৈরি হয়েছে। যে কারণে আসলে আমরা যেটা ভেবেছিলাম যে খুব দ্রুত বেশ কিছু ট্রায়াল শুরু হয়ে যাবে সেটা এখনো পর্যন্ত আমরা হতে দেখছি না।’
হতভাগ্য রিয়া গোপ, নাইমা এমনকি ৩ বছরের শিশু হত্যার দায় সাবেক প্রধানমন্ত্রীর ওপর। তার মন্ত্রীপরিষদের অনেকেই এখন পলাতক, তাদের গ্রেপ্তারে চলতি সপ্তাহেই জারি হচ্ছে রেড নোটিশ।
চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম বলেন, ‘তাদের বিরুদ্ধে রেড নোটিশ জারির প্রক্রিয়া চলমান আছে। এটা হয়তো আজ কালকের মধ্যেই চলে যাবে। যারাই পলাতক আছে তাদের বিরুদ্ধে এটা যাচ্ছে। সেক্ষেত্রে একটা বড় বিষয় হচ্ছে দেশের বাইরে আছে কি নেই। অফিশিয়ালি একটা প্রমাণ লাগে। যেমন হাসিনারটা খুব অ্যাপারেন্ট। ইন্ডিয়ার কাছে আছে এটা স্বীকৃত। কিন্তু ওবায়দুল কাদের কোথায় আছে সেটা সুনির্দিষ্ট না। সেজন্য আমরা ধরে নিচ্ছি এরা পলাতক আছে, বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় আছে। সেজন্য ইন্টারপোলের কাছে আমরা এটা দিচ্ছি। এটার প্রক্রিয়া চলমান আছে।
দেড় হাজার ছাত্র জনতার মধ্যে গণহত্যার শিকার প্রায় দুইশ' শিশু। যার দায় প্রধানত আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাকর্মী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর। তাই এই বিচার নিয়ে উৎসুক জনগণ। যার সাথে জড়িয়ে রাজনৈতিক দল হিসেবে আওয়ামী লীগের ভবিষ্যৎ ও আগামী জাতীয় নির্বাচনের ইস্যুটিও।