পুরাতন গোমতী উন্নয়ন: দখলমুক্তির চ্যালেঞ্জে থমকে থাকা প্রকল্পে নতুন অগ্রযাত্রা

গোমতী নদীর বর্তমান অবস্থা | ছবি: এখন টিভি
0

এক যুগের বেশি সময় ধরে পুরাতন গোমতী নদীর সৌন্দর্যবর্ধনের প্রকল্প ঝুলে থাকলেও এবারে প্রকল্প হাতে নিয়েছে কুমিল্লা সিটি করপোরেশন। তবে সেই প্রকল্প বাস্তবায়নের সবথেকে বড় চ্যালেঞ্জ নদীর ৬ কিলোমিটার অংশের অবৈধ দখলমুক্ত করা। তবে সিটি করপোরেশন বলছে, আগামী বছর শুরু হবে প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ। যাতে হাতিরঝিলের আদলে সাজিয়ে তোলা হবে নদীর পাড়। আর এই প্রকল্পের ব্যয় ২২০ কোটি টাকা।

একসময় কুমিল্লা শহর ঘেঁষে প্রবাহিত হতো গোমতী নদী। বর্ষায় বন্যার আতঙ্ক থেকে শহর রক্ষায় ষাটের দশকে পরিবর্তন করা হয় নদীর গতিপথ। এরপর থেকেই কাপ্তানবাজার থেকে শুভপুর এলাকা পর্যন্ত প্রায় ছয় কিলোমিটার অংশ পরিচিত 'পুরাতন' বা 'মরা' গোমতী নামে।

সময়ের সাথে নদীর দু'পাড়ে গড়ে ওঠে পাঁচটি বাঁধ, জনবসতি আর দখলের থাবা। নদীর তীরের জায়গা দখল হয়ে গেছে বহু আগেই। আবর্জনার স্তূপে ভরাট হচ্ছে নদীভূমি। ২০০৩ থেকে এখন পর্যন্ত তালিকাভুক্ত অবৈধ দখলদার ৭৭২ জন। উচ্ছেদে বারবার নোটিশ দেয়া হলেও পরিবর্তন আসেনি বাস্তবতায়।

স্থানীয়রা জানান,আশেপাশের সব ময়লা আবর্জনা এখানে নিয়ে এসে ফেলতে ফেলতে নদী ভরাট করে ফেলেছে। ঐক্যবদ্ধ হয়ে কেউ কিছু না বলায় এ অনিয়ম বেড়েই চলছে।

আরও পড়ুন:

স্থানীয়রা বলছেন, নদী ছিল তাদের জীবনের অংশ, এখন সেটি পরিণত হয়েছে দূষণের নরকে। সঠিক ড্রেনেজ ব্যবস্থা ও নদী খননের মাধ্যমে নগরীর জলাবদ্ধতা যেমন নিরসন হবে তেমনি জলাধারটি ব্যবহার হতে পারে মাছের অভয়ারণ্য হিসেবে।

এলাকাবাসীর জন্য প্রকল্পটা হওয়া খুবই দরকার বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

কুমিল্লা অঞ্চলের বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির মাসউদ বলেন, ‘কুমিল্লাকে ফুটিয়ে তুলতে হলে পুরাতন গোমতীর সৌন্দর্য বৃদ্ধি এবং পুনরুদ্ধার করতেই হবে। তাহলে আমাদের উত্তরাঞ্চলের সৌন্দর্য ও শহর বৃদ্ধি পাবে। স্বল্প বৃষ্টি ধারণক্ষমতা কুমিল্লার নেই। পুরাতন গোমতী উদ্ধার হলে এর দুই পাড় অবৈধ দখলমুক্ত হবে।’

এক যুগের বেশি সময় ধরে পুরাতন গোমতী নদীর সৌন্দর্যবর্ধনের প্রকল্প ঝুলে আছে কাগজে-কলমে। তবে এবার আশার আলো—একনেকে অনুমোদন পেয়েছে মরা গোমতী উন্নয়ন প্রকল্প। ২০২৬ সালে হাতিরঝিলের আদলে নান্দনিকভাবে নদী সাজাতে প্রস্তুতি নিচ্ছে সিটি করপোরেশন। যেখানে নদীর ছয় কিলোমিটার অংশে হবে সেতু, যানবাহন চলাচলের লেন ও ওয়াকওয়ে।

কুসিকের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আবু সায়েম ভূইঁয়া বলেন, ‘হাতিরঝিলের আদলে আমাদের পুরাতন গোমতীর প্রকল্প বাস্তবায়ন হবে। এখানে পানি উন্নয়ন বোর্ডেরও বেশ কিছু জায়গা রয়েছে। কিছু অবৈধ স্থাপনা রয়েছে। প্রকল্পের কাজ যখন শুরু হবে তখন আমরা আইনানুগ প্রক্রিয়ায় উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করবো।’

সবকিছু ঠিক থাকলে ২০২৬ সাল থেকে শুরু হবে প্রকল্পের কাজ। যেখানে ব্যয় ধরা হয়েছে ২২০ কোটি টাকা।

ইএ