যতদূর চোখ যায় শুধু দেখা মিলবে ক্ষতচিহ্ন আর ধ্বংসলীলা। মাইলের পর মাইলজুড়ে ভেঙে পড়েছে গাছপালা ও বিদ্যুতের খুঁটি, ঘরবাড়ি হারিয়ে দিশেহারা লাখ লাখ মানুষ। বিধ্বস্ত এই চিত্রগুলো দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ ইন্দোনেশিয়ার।
নভেম্বরে ‘মাল্লাকা প্রণালীতে’ আঘাত হানে বিরল এক ঘূর্ণিঝড়। এর প্রভাবে সৃষ্ট বন্যা ও ভূমিধসে সর্বোচ্চ প্রাণহানির সাক্ষী হয় ইন্দোনেশিয়ার সুমাত্রা দ্বীপ। এখনও নিখোঁজ রয়েছে শতাধিক মানুষ।
দুর্যোগের এক সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়নি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোর জনজীবন। অনেক স্থানে দেখা দিয়েছে সুপেয় পানি সংকট। স্যানিটাইজেশন ব্যবস্থা ভেঙে পড়ায় বাড়ছে পানিবাহিত নানা রোগ। এছাড়া, দুর্যোগের কারণে বেহাল দশা সুমাত্রা দ্বীপের হাসপাতাগুলোর।
সুমাত্রা দ্বীপের হাসপাতালের একজন নার্স বলেন, ‘আমার খারাপ লাগছে। মানুষ আমাকে নার্স হিসেবে জানে। কিন্তু এই কঠিন মূহুর্তেও মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারছি না। সবকিছু ধ্বংস হয়ে গেছে।’
আরও পড়ুন:
এদিকে, ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় ধীরে ধীরে ফিরতে শুরু করেছে মানুষ। কাদামাটি ও ধ্বংসস্তূপ সরাতে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কাজ করছে স্থানীয়রাও। অনেক স্থানে পানিবাহী ট্রাক থেকে খাবার-পানি সংগ্রহ করছেন সাধারণ মানুষ।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, ‘টানা ৯ দিন আমরা কাদা পানি নিয়ে রান্না করেছি। আল্লাহকে ধন্যবাদ। এখন আমরা পরিষ্কার পানি পাচ্ছি। বেশকিছু দিন আমরা শাকসবজি খেয়ে বেঁচে ছিলাম। তবে পানি কমতে থাকায় আমাদের কাছে ত্রাণ পৌঁছেছে।’
এছাড়া, দুর্যোগ কবলিত আরেক দেশ শ্রীলঙ্কা পুনর্গঠনে ত্রাণ পাঠাচ্ছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ। ক্ষতিগ্রস্তদের কাছে এগুলো পৌঁছে দিতে কাজ করছে দেশটির সেনাবাহিনী। তবে বিদেশি সহায়তা ছাড়াই বন্যার ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে আশাবাদী শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট।
শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট অনুড়া কুমার দিসানায়েকে বলেন, ‘এ বছর আমাদের প্রত্যাশার চেয়েও বেশি আয় হয়েছে। আমরা ঋণ না নিয়েই ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের কাছে ত্রাণ পৌঁছে দিতে পারি।’
এদিকে, ‘ডিটওয়াহ’ কবলিত শ্রীলঙ্কায় নতুন করে ভূমিধস সতর্কতা জারি করেছে দেশটির আবহাওয়া বিভাগ। রোববার বিভাগটি জানায়, মৌসুমি ঝড়ের কারণে এখনও বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে দ্বীপ দেশটির বিভিন্ন এলাকায়।





