শীতের আগমনে ব্যস্ত সিরাজগঞ্জের কম্বলপল্লী; শত কোটি টাকার বিক্রির প্রত্যাশা

কম্বল তৈরি করছেন শ্রমিকেরা | ছবি: এখন টিভি
0

শীতের আগমনীতে সরগরম সিরাজগঞ্জের কাজিপুরের কম্বলপল্লী। প্রতিটি কারখানায় বেড়েছে কম্বল তৈরির ব্যস্ততা। দাম কম আর মান ভালো হওয়ায় এখানকার কম্বলের চাহিদাও দেশব্যাপী। কম্বলপল্লীতে মেলে একশো টাকা থেকে শুরু ছয় হাজার টাকার কম্বল। চলতি শীত মৌসুমে শত কোটি টাকার বেশি কম্বল বিক্রির আশা করছেন ব্যবসায়ীরা।

গেল দুই দশকে পোশাক কারখানার পরিত্যক্ত টুকরো ও ও ঝুট কাপড় দিয়ে কম্বল তৈরির কারখানার প্রসার বেড়েছে সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলার চার ইউনিয়নের ২৭টি গ্রামে। একে কেন্দ্র করে স্থানীয় শিমুলদাইড় বাজার পরিচিতি পেয়েছে কম্বলপল্লী হিসেবে। যেখানে কর্মসংস্থান হয়েছে অর্ধ লাখেরও বেশি মানুষের।

এ বছরও শীতের আগমনীতে কম্বলপল্লীর ব্যস্ততা বেড়েছে। কারখানার পাশাপাশি প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই দিনরাত চলছে কম্বল তৈরির কাজ। জোড়াতালি, বাংলা, বিশ্বাস, ভেলভেট ও চায়নাসহ বিভিন্ন কম্বল তৈরি করছেন এখানকার কারিগর। মাথাপিছু প্রতিদিন আয়ও করছেন এক থেকে দেড় হাজার টাকা।

কারখানার শ্রমিকরা জানান, শীতের সিজনে তাদের ১২টা থেকে ১টা পর্যন্ত কাজ করতে হয়। সেসময় তাদের প্রডাকশন বেশি দিতে হয়।

একশো থেকে শুরু করে ৬ হাজার টাকার মধ্যে ১৬৬ রকমের কম্বল মিলছে শিমুলদাইড় বাজারে। ব্যবসায়ীরা জানান, চাহিদা ভালো থাকায় এখানকার কম্বল যাচ্ছে ঢাকা, রংপুর, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা ও নীলফামারীসহ দেশের প্রায় প্রতিটি জেলায়। শিল্পটির প্রসারে স্বল্প সুদে ব্যাংক ঋণসহ পৃষ্ঠপোষকতার দাবি ব্যবসায়ীদের।

আরও পড়ুন:

ব্যবসায়ীরা জানান, বাংলাদেশে সব থেকে কম দামে কম্বল তারাই বিক্রি করে থাকেন। তাদের উৎপাদন খরচ কম টাকায় ফলে তারা কম টাকায় বিক্রি করতে পারছেন।

কাজিপুরের এ কম্বল শিল্পের সঙ্গে জড়িত অন্তত ৪০ হাজার মানুষ। শিল্পটির প্রসার ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে পরিকল্পিত উদ্যোগ নেয়ার তাগিদ এ ব্যবসায়ী নেতার। স্বল্প সুদে ঋণ দেয়ার ব্যবস্থা করলে পাশাপাশি সেলাই মেশিন দিয়ে সরকার সহায়তা করলে তাদের কর্মসংস্থান আরও বাড়ানো যাবে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা।

সিরাজগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি প্রেসিডেন্ট সাইদুর রহমান বাচ্চু বলেন, ‘সরকার থেকে যদি সকল প্রকার সহযোগিতা দেয়া হয়, তাহলে এ কম্বলপল্লী থেকেই আমাদের সিরাজগঞ্জের সকল বেকারত্ব দূর হয়ে যাবে।

আর শিল্পের প্রসারে বিভিন্ন পরিকল্পনার পাশাপাশি সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস স্থানীয় প্রশাসনের

সিরাজগঞ্জ কাজিপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘ইনফ্রাস্ট্রাকচার সহায়তার দিক দিয়ে আমরা প্রশাসনের দিক থেকে যতটুকু সহযোগিতা সম্ভব তার জন্য সচেষ্ট রয়েছি। বাণিজ্যিকভাবে ব্যবসার প্রসার ও বৃদ্ধি করার ক্ষেত্রে কাজ করছি’।

প্রত্যন্ত এলাকায় গড়ে ওঠা দেশের অন্যতম বৃহৎ এ পাইকারি কম্বলের বাজারে প্রতি শীত মৌসুমে শত কোটি টাকার বেশি কম্বল বিক্রি হয়।

এফএস