আজ (শনিবার, ১৫ মার্চ) দুপুরে যশোর শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন যশোরের আয়োজনে ‘জুলাই বিপ্লবোত্তর বাংলাদেশে তরুণদের করণীয়’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান আলোচকের বক্তব্যে তিনি আরো বলেন, 'এই গণঅভ্যুত্থান কখনও সফল হতো না যদি খালেদা জিয়া আপোষহীনভাবে এই সরকারের বিরুদ্ধে না থাকতো।'
তিনি বলেন, 'তিনি যথেষ্ট নির্যাতন সহ্য করেছেন। তেমনি গণঅভ্যুত্থান না হলে তার মুক্তি হতো না, তারেক জিয়ার ফাঁসির মামলাও প্রত্যাহার হতো না। ফলে বিএনপির উচিৎ কৃতজ্ঞ চিত্তে ছাত্রদের পাশে থেকে ওদের শেখানো।'
এই রাষ্ট্র চিন্তক বলেন, 'যারা বিএনপির রাজনীতি করছেন তাদের সঙ্গে আমি খুবই ঘনিষ্ঠ, তাদের অনেককে আমি খুবই ভালবাসি। আমি বেগম জিয়ার অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ ছিলাম। খুবই পছন্দ করি। কিন্তু বিএনপি আমাদের কথা শোনে নাই। বিএনপির পতনের প্রধান কারণ তারা কখনোই বুদ্ধিজীবিতাকে, বুদ্ধিবৃত্তিকে কোনপ্রকার সম্মান করে না। কোন সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে বাংলাদেশে তাদের অবদান নেই।'
ফরহাদ মজহার বলেন, 'বাহাত্তরের সংবিধান বাংলাদেশের জনগণের সংবিধান ছিল না। এটা ছিল পাকিস্তানের সংবিধান। এটা করা হয়েছিল দিল্লির হাতে বাংলাদেশকে তুলে দেওয়ার জন্য।'
তিনি বলেন, 'একাত্তর পরবর্তী সময়ে শেখ মুজিবুর রহমান জনঅভিপ্রায়ে বাস্তবায়ন করেননি। তাছাড়া গণপরিষদ ভোটও হয়নি। ফলে রাষ্ট্র গঠনও করা সম্ভব হয়নি। অথচ রাষ্ট্র গঠনে গণপরিষদ ভোট স্বীকৃত পদ্ধতি। ফলে ৭২ সালের সংবিধান কখনো বাংলাদেশের জনগণের সংবিধান ছিলো না। সেটা ছিল পাকিস্তানের সংবিধান। কারণ সেটা যারা প্রণয়ন করেছে তারা পাকিস্তানের সংবিধান প্রণয়নের জন্য নির্বাচিত হয়েছিল। তারা যুদ্ধের সময় ছিল না। যে কয়েকজন ছিল তারা দিল্লির সঙ্গে সহযোগিতা করে বাংলাদেশকে দিল্লির হাতে তুলে দেবার ষড়যন্ত্রে যুক্ত ছিলেন।'
তিনি বর্তমান সরকারকে নির্বাচিত সরকার দাবি করে বলেন, 'ড. ইউনুসকে গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে বসানো হয়েছে। রক্ত দিয়ে তাকে নির্বাচিত করা হয়েছে। তাহলে ভোট গুরুত্বপূর্ণ নাকি রক্ত গুরুত্বপূর্ণ?'
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন যশোর জেলা আহ্বায়ক রাশেদ খানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন লেখক গবেষক বেনজীন খান, জাতীয় নাগরিক পার্টির কেন্দ্রীয় সদস্য খালেদ সাইফুল্লাহসহ নেতৃবৃন্দ।